ঢাকা রোববার, ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

সুন্দরবনের উপকূলে বোরো ধানের বাম্পার ফলন

সুন্দরবনের উপকূলে বোরো ধানের বাম্পার ফলন

সুন্দরবনের উপকূলের বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ শরণখোলায়সহ ৯ উপজেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে ১৬ থেকে ২০ মণ ধান ঘরে তুলতে পারবে কৃষক। বাগেরহাট সদরের-খানপুর, সায়ড়া, সদুল্যাপুর শ্রীঘাট, রনজিতপুর, চুলকাটি, রাখালগাছি, মগরা, বাদুখালী, বাগমারা জুয়ারিকুল, পোলঘাট, মাঝিডাঙ্গা যাত্রাপুর ও ফকিরহাট উপজেলার-লখপুর, ভট্টখামার, মৌভোগ, পিলজঙ্গসহ সদর উপজেলা জেলার বিভিন্ন এলাকার বাম্পার ফসল হয়েছে। কৃষকরা জানান, বিগত ১০ বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে বাগেরহাটে বোরো ধানের বাম্পার ফসল ফলন হয়েছে। এ বছর পর্যাপ্ত সার এবং ওষুধের পাশাপাশি সেচের জন্য বিদ্যুৎ ঠিকমতো পাওয়ায় বোরো ধান উৎপাদনে কোনো সমস্যা হয়নি। পহেলা বৈশাখ অর্থাৎ নতুন বছর থেকেই আগাম জাতের বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। শেখ মারুফ বিল্লাহ আহমেদ বলেছেন, আমি চাকরির ফাঁকে ৩২ শতক জমিতে ধান চাষ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। আগাম জাতের বোরো ধান আবাদ করেছিলাম, এক সপ্তাহ আগে ধান কাটা শেষ করেছি। শাহরিয়ার আলম শাওন বলেন, ৩ বিঘা জমিতে ১২০ থেকে ১৪০ মণ ধানের ফলন হয়েছে। এ বছর যেভাবে ধানের ফলন হয়েছে, তাতে ঠিকমতো ঘরে তুলতে পারলে; কৃষকদের গোলা ধানে পরিপূর্ণ হবে। ধান ও চালের অভাব থাকবে না। বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ শরণখোলাসহ ৯ উপজেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতি বিঘা জমিতে ১৬ থেকে ২০ মণ ধান ঘরে তুলতে পারবে কৃষক। বোরো ধান কর্তন প্রায় শেষের পথে। ফলনও ভালো হয়েছে। মাথায় অথবা ভ্যানে করে ধান বহন ও মাড়াই কাজে কৃষক, কৃষানি ও ক্ষেতমজুররা ব্যস্ত সময় পার করছেন। ফড়িয়ারা বাড়ি-বাড়ি ঘুরে ধান কিনছেন। বিক্রি শুরু হয়েছে হাটেও। সম্প্রতি ফড়িয়ারা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। অবস্থাপন্ন কৃষকরা আপাতত ধান বিক্রি না করলেও গরিব চাষিরা ধার-দেনা মেটাতে এবং সংসার খরচ চালাতে স্বল্প দামে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন।

সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ধানের খেত ঘুরে দেখা গেছে, মাঠে মাঠে সবুজের সমারোহ। ধানের প্রতিটি খেতে শীষ উকি দিচ্ছে। খেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটছে কৃষকের। কৃষকরা মাঠে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ধান গাছের পরিচর্যা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। মাঠে সার, কীটনাশক প্রয়োগ, আগাছা পরিষ্কার এবং পার্চিং ব্যবহার করছেন কেউ কেউ। মোরেলগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের ভাইজোড়া, কাঁঠালতলা ও বিশারীঘাটা গ্রামের শতাধিক কৃষক দেশি আমন ধান ঘরে তোলার পর এবারে মোরেলগঞ্জ উপজেলার ৯ হাজার হেক্টর ফসলি পতিত জমিতে বোরো ধানের চাষ করে বাম্পার ফলন ফলিয়েছে। খাউলিয়া, বনগ্রাম, বলইবুনিয়া, হোগলাপাশা, চিংড়াখালী ও হোগলাবুনিয়ায় এ ফসল উৎপাদন করেছেন কৃষকরা। মোরেলগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নে ৯ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। রোপা-আমনের বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করছেন কৃষকরা।

এ বিষয় উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম বলেন, ধানের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমরা মাঠ পর্যায়ে কাজ করছি। ফলন আশানুরূপ হয়েছে। এরইমধ্যে কৃষকরা মাঠের ৭০ ভাগ ধান কেটে ঘরে তুলেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা মাথায় রেখে ধান ৮০ ভাগ পেকে গেলেই কেটে ফেলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’ এ উপজেলায় এ বছর সঠিক সময়ে চারা লাগানো, যথাসময়ে সেচ দেওয়া, নিবিড় পরিচর্যা এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বোরো ধানের ভালো ফলন হয়েছে। পোকাণ্ডমাকড় আক্রমণ না করে এমন ধান লাগানোর জন্য কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে। চলতি বছরে ধানে তেমন রোগবালাই নেই বললেই চলে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত