ঢাকা শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৭ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

উৎক্ষেপণের পর হারিয়ে গেল ভারতের স্যাটেলাইট

উৎক্ষেপণের পর হারিয়ে গেল ভারতের স্যাটেলাইট

ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর নতুন অভিযান মাঝপথে ব্যর্থ হয়েছে। মহাকাশে ইওএস-০৯ কৃত্রিম উপগ্রহ (স্যাটেলাইট) পাঠানোর জন্য ইসরোর রকেট রওনা দিয়েছিল। কিন্তু মাঝপথে গিয়ে রকেট থেকে ওই কৃত্রিম উপগ্রহটিকে মহাকাশে নামানো যায়নি। যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে অভিযান মাঝপথে বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন ভারতের এই মহাকাশ সংস্থার কর্মকর্তারা।

এদিকে মিশনের ব্যর্থতার পর মহাকাশেই ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে রকেটটি। খবর ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গতকাল রোববার স্থানীয় সময় ভোর ৫টা ৫৯ মিনিটে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে ইওএস-০৯ নিয়ে রওনা দেয় পিএসএলভি-সি৬১ মহাকাশযান। উৎক্ষেপণ সফল হয়েছিল। কিন্তু মিশনের তৃতীয় ধাপে গিয়ে যান্ত্রিক গোলযোগ ধরা পড়ে। ফলে তা বাতিল করে দিতে বাধ্য হয় কর্মকর্তারা।

এদিকে ইসরোর পক্ষ থেকে এই অভিযানের উৎক্ষেপণের সময় থেকে পুরো মিশনটি সরাসরি সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। অভিযান ব্যর্থ হয়েছে বলে সেখানেই স্বীকার করে নেন সংস্থার প্রধান ভি নারায়ণান। পরে ইসরো সোশ্যাল মিডিয়ায় বিবৃতি দিয়ে জানায়, গত শনিবার ১০১তম মিশন শুরু করা হয়েছিল। পিএসএলভি-সি৬১ দ্বিতীয় ধাপ পর্যন্ত স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু তৃতীয় ধাপে একটি বিশেষ পর্যবেক্ষণের কারণে এই মিশন শেষ করা গেল না। সংবাদমাধ্যম বলছে, ইসরোর ইওএস-০৯ কৃত্রিম উপগ্রহটির ওজন ১ হাজার ৬৯৬ কেজি। ৫২৪ কিলোমিটারের কক্ষপথে (সান-সিংক্রোনাস পোলার অরবিট) এই কৃত্রিম উপগ্রহটিকে নামানোর কথা ছিল।

২০১৭ সাল থেকে পিএসএলভি রকেটের মাধ্যমে বিভিন্ন অভিযানের উৎক্ষেপণ করে আসছে ইসরো। এখনও পর্যন্ত এই রকেট ৬৩টি উৎক্ষেপণে ব্যবহার করা হয়েছে। তার মধ্যে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে তিনটি মিশন। কী কারণে এই গোলযোগ ঘটল, তা খতিয়ে দেখছেন ইসরোর ইঞ্জিনিয়াররা। এরইমধ্যে একটি ব্যর্থতা বিশ্লেষণ কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

এদিকে মিশনের ব্যর্থতার পর মহাকাশেই ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে রকেটটি। সেটির ধ্বংসাবশেষ পৃথিবীতেই এসে পড়বে। তবে তা থেকে যাতে কোনো বিপদ না ঘটে, ইসরো তা নিশ্চিত করছে বলেও সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে।

ইওএস-জিরো নাইন ছিল সূর্যসমান্তরাল কক্ষপথে স্থাপনযোগ্য একটি উপগ্রহ, যা আধুনিক সি-ব্যান্ড সিন্থেটিক অ্যাপারচার রাডার প্রযুক্তি ব্যবহার করে যেকোনব আবহাওয়ায়, দিন-রাতে, উচ্চ রেজুলিউশনের ছবি তুলতে সক্ষম। এটি ভারতের নজরদারি ও ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার কথা ছিল। এটি ছিল পিএসএলভি রকেটের ৬৩তম এবং পিএসএলভি-এক্সএল সংস্করণের ২৭তম ফ্লাইট। মিশন ব্যর্থ হলেও ইসরো জানিয়েছে, পিএসএলভির নির্ভরযোগ্য পারফরম্যান্স রেকর্ড অব্যাহত রয়েছে। রকেট উৎক্ষেপণ প্রত্যক্ষ করতে ভোরে অনেক পরিবার ও শিশু শ্রীহরিকোটা অবস্থিত সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টারে আসেন। তবে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার কারণে নিরাপত্তাজনিত কারণে এই উৎক্ষেপণ সাধারণ দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়নি। এক শিশু বার্তাসংস্থা এএনআইকে জানায়, আমরা রাণিপেট থেকে এসেছি। এতদূর এসেও রকেট দেখা হলো না। তবে এসেই আমি গর্বিত। খুব উত্তেজনায় আছি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত