কক্সবাজারের ব্যাটারিচালিত মিশুক গাড়ির আড়ালেই ব্যাপকহারে বেড়েছে অপরাধপ্রবণতা। এসব যানের চালক সেজে অনেকেই জড়িয়ে পড়ছে চুরি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধে। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে মিশুক গাড়ি করে পাচারকালে পুলিশ একটি অস্ত্রসহ একজনকে আটকের পর নড়েচড়ে বসেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর পূর্বেও কক্সবাজার শহরে মিশুক গাড়ি ব্যবহার করে বড় ধরনের কয়েকটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। এরপর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নজরদারি জোরদার করেন। অভিযানে নেতৃত্বদানকারী, কক্সবাজার শহর পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) সৌরভ বড়ুয়া জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ১টায় কক্সবাজার শহর এলাকায় ডিউটিকালীন খুরুশকুল রাস্তার মাথা এলাকায় ৩ জন ব্যক্তি সন্দেহজনকভাবে ব্যাটারি চালিত মিশুক (অটোরিকশা) নিয়ে ঘুরাঘুরির সময় থামাতে সংকেত দিলে গাড়ি ফেলে তারা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে একজনকে আটক করা হয়। পরে তল্লাশিকালে ড্রাইভার বসার সিটের কভারের ভেতরে অভিনব কায়দায় লোকানো অবস্থায় ৭.৬২ এমএমের ১ রাউন্ড গুলিভর্তি ১টি দেশীয় তৈরি এলজি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এসময় কক্সবাজার সদরের পিএমখালির বাংলাবাজার সুইচগেট এলাকার শফিউল্লাহ’র ছেলে আজিজুর রহমান (২২) কে আটক করা হয়।
এঘটনা নিয়ে বৃহস্পতিবার কক্সবাজার শহর পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) সৌরভ বড়ুয়া বাদী হয়ে আটক আজিজুর রহমানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে পলাতক হারুনর রশীদের নাম ঠিকানা পাওয়া গেলেও অন্যজনের পরিচয় এখনও মিলেনি।
মামলা তদন্ত কর্মকর্তা কক্সবাজার শহর পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) জুয়েল চৌধুরী বলেন, ‘৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতের মাধ্যমে আটক আজিজুরকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত অন্যদের ধরতে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।’ কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসীম উদ্দিন চৌধুরী ‘অনিবন্ধিত ব্যাটারিচালিত মিশুক গাড়ি ব্যবহার করে অপরাধ সংগঠিত করার সত্যাতা নিশ্চিত করেন তিনি বলেন, অপরাধ রোধে কক্সবাজার শহরে চলাচলরত।নিবন্ধিত অটোরিকশা টমটম চালকদের ডাটাবেইজ তৈরি করা হচ্ছে। এপর্যন্ত প্রায় ৪ হাজার টমটম চালকের বিস্তারিত পরিচয় ডাটাবেইজের আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়া পর্যটন খাতে চলাচলরত সিএনজি ও ট্যুরিস্ট জীপ ও ডাটাবেইজের আওতায় আনা হচ্ছে। এতে করে পর্যটক হয়রানি ও নানা ধরনের অপরাধ কমে আসবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
কে এই বেলাল?
পুলিশের তথ্য সূত্র বলছে, বৃহস্পতিবার রাতে আজিজুর রহমানকে আটকের পর তার মুঠোফোনে একটি কল আসেন। ওই সময় আটক আজিজুরের মুঠোফোনটি রিসিভ করে চট্টগ্রামের ভাষায় কথা বলেন পুলিশ কর্মকর্তা। আজিজুর মনে করে নিজেকেই বেলাল পরিচয় দিয়ে কথা বলেন। তার বাড়ি কক্সবাজার সদরের পিএমখালী বলে দাবি করেন।
পুলিশের তথ্য সূত্র আরো জানা যায়, অভিযানের সময় হারুনর রশীদ নামের একজন পালিয়ে যান। তার বাড়ি কক্সবাজার সদরের লিংকরোড এলাকায়। পুলিশের তথ্য সূত্র বলছে, অস্ত্রের মালিক বেলাল ও পলাতক হারুনর রশীদসহ আরও একজনকে ধরতে পুলিশ মাঠে কাজ করছেন। প্রসঙ্গত, কক্সবাজার শহরে কি পরিমাণ ব্যাটারিচালিত মিশুক গাড়ি চলে সেই ট্রাফিক পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষ কারও কাছে মেলেনি। সচেতন মহল নজরদারি বাড়াতে প্রশাসনের প্রতি দাবি জানিয়েছেন।