ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমকে বহনকারী প্রিজনভ্যানকে লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপ করেছে ক্ষুব্ধ জনতা। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মানিকগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে হাজিরা শেষে গাড়িতে তোলার সময় এ ঘটনা ঘটে। এর আগে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে কেন্দ্রীয় কাশিমপুর কারাগার থেকে তাকে মানিকগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিয়ে আসা হয়। আদালত চত্বরে অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো পরিস্থিতি এড়াতে আদালতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়। হরিরামপুর থানায় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মমতাজ বেগমকে সিংগাইর থানায় চার দিনের জন্য রিমান্ডে নেওয়া হবে। সিংগাইরে ফোর মাডারসহ দুটি মামলার নিয়মিত হাজিরা দিতে কেন্দ্রীয় কাশিমপুর কারাগার থেকে মানিকগঞ্জ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয় মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজকে। সিংগাইর থানায় দায়ের করা একটি হত্যা মামলায় নিয়মিত হাজিরা হিসেবে মমতাজকে গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাদবীর ইয়াছির আহসান চৌধুরীর আদালতে তোলা হয়। বিচারক মমতাজ বেগমের জামিন নামঞ্জুর করেন। কোর্ট ইন্সপেক্টর মো. আবুল খায়ের জানান, নিয়মিত হাজিরা হিসেবে মমতাজ বেগমকে আদালতে তোলা হয়। হাজিরা শেষে হরিরামপুরে ভাঙচুর ও মারামারি মামলায় দুই দিনের রিমান্ড ও সিংগাইরে ফোর মাডার মামলায় চার দিনের রিমান্ড থাকায় তাকে প্রথমে দুই দিনের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হরিরামপুর থানায় নেওয়া হবে। হরিরামপুর থানায় জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মমতাজ বেগমকে সিংগাইর থানায় চার দিনের জন্য রিমান্ডে নেওয়া হয়।
দুই ছেলেসহ সাবেক ডেপুটি স্পিকার টুকুর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা, এনআইডি ব্লক : দুর্নীতির অভিযোগে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতা ও সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, তার দুই ছেলে এসএম আসিফ শামস ও এসএম নাসিফ শামসেরকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ব্লকের আদেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ জাকির হোসেন গালিব এ আদেশ দেন। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। দুদকের পক্ষে সংস্থার উপ-পরিচালক আল আমিন তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা এবং এনআইডি ব্লক চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনে বলা হয়, শামসুল হক টুকুর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে অর্থনৈতিক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থেকে বিপুল পরিমাণ স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান চলছে। তিনি ভিন্ন মামলায় কারান্তরীণ রয়েছেন। জামিনে মুক্ত হয়ে বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন। তিনি বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে শামসুল হক টুকু এবং তার দুই ছেলের বিদেশ গমন রহিতকরণ প্রয়োজন। এছাড়া অনুসন্ধানকালে বিশ্বস্তসূত্রে জানা যায়, তারা তাদের নামীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের চেষ্টা করছেন, যা করতে পারলে মামলার অনুসন্ধানের ধারাবাহিকতায় মামলা দায়ের, আদালতে চার্জশিট দাখিল, আদালত কর্তৃক বিচার শেষে সাজার অংশ হিসেবে অপরাধলব্ধ আয় থেকে অর্জিত সম্পত্তি সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্তকরণসহ সব উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হবে। বর্তমানে বাংলাদেশে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ হস্তান্তর, আয়কর রিটার্ন দাখিল, পাসপোর্ট ইস্যু-নবায়ন, ব্যাংক হিসাব খোলা-পরিচালনাসহ যাবতীয় কার্যক্রম যেহেতু জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়, সেহেতু তাদের জাতীয় পরিচয়পত্রটি ব্লক করা হলে, এ সমস্ত কাজে তারা বাধাগ্রস্ত হবেন। অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র ব্লক করা প্রয়োজন। গত বছর ১৪ আগস্ট গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাজধানীর খিলক্ষেত থানার নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা থেকে আত্মগোপনে থাকাবস্থায় ১২তম জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে রিমান্ডেও নেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।