হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার পূর্ব রূপশংকর গ্রাম। এ গ্রামের বাসিন্দা কৃষক শফিউল আলম বাড়ি পাশে প্রায় ১৫ শতক জমি আবাদ করেন। চিন্তায় ছিলেন জমিতে কি ধরনের ফসল চাষ করে লাভবান হওয়া যাবে। মাঠ পরিদর্শনে এসে ওই কৃষকের সঙ্গে কথা হয় উপ-সহকারী কৃষি অফিসার শামীমুল হক শামীমের। তিনি শফিউল আলমকে পরামর্শ দিলেন মুখীকচু চাষ করার জন্য। সঙ্গে সাথী ফসল হিসেবে দেঁড়স, ঝিঙা, বরবটি ও পাট শাকের বীজ রোপণ করতে বলেন। পরামর্শ মতে তিনি প্রথমে জমিতে মুখীকচুর বীজ রোপণ করেন। পরে রোপণ করেন দেঁড়স, ঝিঙা, বরবটি ও পাট শাকের বীজ। মাসখানেকের মধ্যে গাছ গজায়। মুখীকচুর ওপরে মাচা তৈরি করেন। মাচায় বরবটি ও ঝিঙে গাছ বড় হলে শাখায় শাখায় ফুল আসে। এর ফাঁকে ফাঁকে দেঁড়স ও পাট শাকের গাছও রয়েছে। এসব চাষে প্রায় ৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ঝিঙে, পাট শাক, দেঁড়স ও বরবটি বিক্রি করা হ”েছ। বাজিমাত ফলন দেখে এলাকার অন্যান্য কৃষকরাও এভাবে চাষে আগ্রহী হয়েছেন। তারাও চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
সরেজমিন গেলে কৃষক শফিউল আলম বলেন- একই জমিতে এক সঙ্গে একাধিক ফসল চাষে খরচ নেই বললেই চলে। তবে নিজেদের গোবর থাকলে জমিতে প্রয়োগ করে বাম্পার ফলন পাওয়া সম্ভব। তেমন কোনো বিষ প্রয়োগ ছাড়াই একাধিক ফসল চাষ করতে পেরে আনন্দিত। ধারণা করছি, এসব ফসল বিক্রি থেকে প্রায় ৭০ হাজার টাকা আসবে।
এলাকার কৃষকরা বলেন- শ্রম দিলে বিফলে যায় না। এক সঙ্গে একাধিক ফসল চাষ করে তার প্রমাণ দিলেন কৃষক মোঃ শফিউল আলম। তার ক্ষেতে ফসলের ভালো ফলন হয়েছে। তাই আমরা (কৃষকরা) এভাবে চাষ করতে চাই।
উপ-সহকারী কৃষি অফিসার শামীমুল হক শামীম বলেন-মহাসড়ক থেকে তাকালে চোখে পড়ে ইটভাটা। ইটভাটার কাছেই ফসলি জমি। দূর থেকে দেখতে সবুজ,কাছে আসলে দেখা যায় মুখীকচুর ওপরে মাচায় বরবটি ও ঝিঙে। রয়েছে পাট শাক ও দেঁড়স। একই ক্ষেতে এসব ফসল চাষ করে বাজিমাত করেছেন কৃষক শফিউল আলম। দৃষ্টি নন্দন এ ক্ষেতের ফসল দেখে এলাকার অন্যান্য কৃষকরা আগ্রহী হয়েছেন, এভাবে চাষ করার জন্য। তিনি বলেন- মাঠে গিয়ে পরামর্শ দিয়েছিলাম। পরামর্শ গ্রহণ করে ওই কৃষক জমি আবাদ করে এক সঙ্গে একাধিক ফসল চাষ করে সফল হয়েছেন। এতে আমি আনন্দিত।