গ্রীষ্মের মধ্যে শীতকালীন সবজি বাঁধাকপি চাষ করে নজর কাড়ছেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের কৃষকরা। দৌলতপুর সীমান্তের আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের ধর্মদহ গ্রামের কৃষকরা বাঁধাকপির ভালো ফলন পেয়েছেন। স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে বাঁধাকপি এখন সরবরাহ হচ্ছে রাজধানী ঢাকা ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলায়। কৃষকরা জানান, বর্তমানে প্রতি বিঘা জমিতে বাঁধাকপি বিক্রি করে প্রায় ৩০-৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ হচ্ছে। কেউ কেউ তাদের ফসল ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বাজারমূল্য কিছুটা কমে যাওয়ায় হতাশায় ভুগছেন অনেকে। অনেকে বাঁধাকপি প্রস্তুত রেখেছেন, বাজারমূল্য বাড়ার অপেক্ষা করছেন। কৃষকরা জানান, গত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে বীজ, সার ও দিনমজুরের খরচ বেড়ে গেছে। ফলে প্রতি বিঘা জমিতে বাঁধাকপি চাষে খরচ হয়েছে ৩০-৩৫ হাজার টাকা। উপজেলার ধর্মদহ গ্রামের কৃষক ওবাইদুল ইসলাম জানান, তিনি এবার ১২ বিঘা জমিতে বাঁধাকপি চাষ করেছেন। তার হিসাব অনুযায়ী প্রতি বিঘায় ৩০-৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে এবং তিনি আশা করছেন সমপরিমাণ লাভ হবে। একই গ্রামের চাষি আজাদ হোসেন জানান, তিনি ৩৬ শতাংশ জমিতে বাঁধাকপি চাষ করেছিলেন। খরচ হয়েছিল ৩০ হাজার টাকা এবং বিক্রি করেছেন ৮৫ হাজার টাকা। অন্যদিকে লালন হোসেন জানান, দেড় বিঘা জমির কপি ১ লাখ ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করলেও বৈরী আবহাওয়ায় বাজারদর কমে যাওয়ায় কিছু ব্যবসায়ী পুরো টাকা দিতে গড়িমসি করছেন। এদিকে ব্যবসায়ীরা জানান, ঢাকায় বাঁধাকপি নিয়ে যেতে পরিবহন খরচই পড়ছে ৩০-৪০ হাজার টাকা। বর্তমানে পাইকারি বাজারে প্রতি পিস বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৩০ টাকায়, ফলে লাভের পরিমাণ কমে গেছে। এ বিষয়ে ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা কাইউম মিলন বলেন, ‘মাঠপর্যায়ে কৃষকদের আমরা নিয়মিত পরামর্শ ও সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি।’ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নূরুল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর দৌলতপুর উপজেলায় ৭০ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন বাঁধাকপি চাষ হয়েছে। কৃষকদের চাষে উদ্বুদ্ধ করা, পরামর্শ ও প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে।’ তিনি আরও জানান, প্রতিবছরই দৌলতপুরে গ্রীষ্মকালীন সবজি চাষের পরিমাণ বাড়ছে, ফলে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন এবং স্থানীয় অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে।