ঢাকা শুক্রবার, ০১ আগস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ট্রাম্পের শুল্ক হুমকির মধ্যেই আসিয়ানকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান আনোয়ারের

ট্রাম্পের শুল্ক হুমকির মধ্যেই আসিয়ানকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান আনোয়ারের

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক হুমকির মধ্যে বিশ্ববাণিজ্য দুর্বল দেশগুলোর বিরুদ্ধে ‘অস্ত্র’ হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। গতকাল বুধবার আসিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বার্ষিক বৈঠকের উদ্বোধনী ভাষণে আনোয়ার বলেন, শক্তি বরাবরই বাণিজ্যকে প্রভাবিত করেছে, তবে এটি বাণিজ্যকে সংজ্ঞায়িত করছে। তিনি বলেন, যে সরঞ্জাম একসময় প্রবৃদ্ধি তৈরির জন্য ব্যবহৃত হতো, তা এখন চাপ প্রয়োগ, একঘরে করে রাখা এবং অবরুদ্ধ করার অস্ত্র হয়ে উঠেছে। শুল্ক, রপ্তানি সীমাবদ্ধতা এবং বিনিয়োগে প্রতিবন্ধকতা এখন ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার ধারালো অস্ত্র। গতকাল বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে আল জাজিরা। ট্রাম্পের নাম না নিলেও তার ইঙ্গিত স্পষ্ট ছিল। আনোয়ার স্পষ্ট করে বলেন, এটি কোনো ক্ষণস্থায়ী ঝড় নয়। এটি আমাদের সময়ের নতুন আবহাওয়া। আনোয়ারের এই মন্তব্য এমন সময়ে এলো যখন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এশিয়ায় তার প্রথম সফরে মালয়েশিয়ার পথে রওনা হয়েছেন। এই সফরে রুবিও আসিয়ান ইভেন্টগুলোতে অংশ নেবেন, যার মধ্যে পূর্ব এশিয়া সম্মেলনও রয়েছে, যেখানে চীন, ভারত, জাপান এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মতো দেশরাও অংশ নেবে। মার্কিন কর্মকর্তারা এই সফরকে ‘মুক্ত, উন্মুক্ত এবং নিরাপদ এশিয়া প্যাসিফিক’ নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখালেও, রুবিওর এই সফরে বাণিজ্য ইস্যুই প্রধান আলোচনার বিষয় হতে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

মালয়েশিয়া ছাড়াও ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, লাওস, কম্বোডিয়া এবং মিয়ানমার শুল্ক হুমকির মুখে রয়েছে, যদি তারা ১ আগস্টের মধ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে কোনো বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারে।

ট্রাম্পের সর্বশেষ শুল্ক পরিকল্পনায় ১৪টি দেশের রপ্তানি পণ্যের উপর ২৫-৪০ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপের ঘোষণা রয়েছে। আসিয়ান ব্লকের মধ্যে ভিয়েতনামই এখন পর্যন্ত ট্রাম্পের সঙ্গে চুক্তি করতে সক্ষম হয়েছে।

আনোয়ার বলেন, আমরা যে বৈশ্বিক বাস্তবতার মুখোমুখি, তা স্পষ্টতা এবং দৃঢ তার সাথে গ্রহণ করতে হবে। তিনি আসিয়ান দেশগুলোর মধ্যে বিদেশ ও অর্থনৈতিক নীতিতে আরও ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ের আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, বাইরের চাপ মোকাবিলা করার সময় আমাদের নিজেদের ভিতও শক্ত করতে হবে। আমাদের নিজেদের মধ্যে বাণিজ্য বাড়াতে হবে, একে অপরের মধ্যে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে এবং সংকল্পের সাথে খাতভিত্তিক সংহতি এগিয়ে নিতে হবে। একটি শক্তিশালী, সংযুক্ত আসিয়ান অর্থনীতি গড়ে তোলা আমাদের কৌশলগত প্রয়োজন, যা আমাদের প্রাসঙ্গিকতা এবং স্থিতিশীলতা আগামী কয়েক দশক ধরে বজায় রাখবে।

এই অঞ্চলের সিদ্ধান্ত নেয়ার বিষয়ে আনোয়ার আরও বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোকে ‘বিশ্বকে প্রভাব বলয়ে ভাগ করার ধারণা’ প্রত্যাখ্যান করতে হবে এবং এই অঞ্চলের ব্যাপারে অন্য কোথাও সিদ্ধান্ত নিলে তা মানা হবে না।

আমরা এমন একটি অঞ্চল, যারা নিজেদের পথ নিজেরা স্থির করে, সংহতভাবে এবং উদ্দেশ্যমূলকভাবে এগিয়ে যায়। আসিয়ানকে কোনোভাবেই অনুপস্থিত রেখে অন্য কেউ কথা বলবে না।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত