রাজধানীসহ সারা দেশে প্রথম রমজান থেকে সুলভ মূল্যে দুধ-ডিম-মাংস বিক্রি করছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। গত শুক্রবার পর্যন্ত ছয় দিনে প্রায় ৬ কোটি টাকার পণ্য বিক্রি করা হয়েছে। এ হিসাবে জনগণের মধ্যে সুলভ মূল্যে প্রতিদিন প্রায় কোটি টাকার দুধ-ডিম-মাংস বিক্রি করেছে মন্ত্রণালয়। রাজধানীতে এই কার্যক্রমে পুরুষের চেয়ে নারী ক্রেতা বেশি। গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে প্রেসক্লাব সদস্যদের জন্য সুলভ মূল্যে দুধ-ডিম-মাংস বিক্রি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এসময় এসব তথ্য জানানো হয়। জাতীয় প্রেসক্লাবের সদস্যদের জন্য এই কার্যক্রম উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নীলুফা আক্তার। এসময় উপস্থিত ছিলেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ প্রমুখ। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নীলুফা আক্তার বলেন, দেশের মানুষের মধ্যে সুলভ মূল্যে প্রোটিন জাতীয় খাদ্যপণ্যের সরবরাহ বাড়াতে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় এই কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। এসব পণ্য ক্রয়ে সারা দেশের নারীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা যাচ্ছে। এই কার্যক্রমের মাধ্যমে বাজারে পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান বলেন, সারা দেশেই এই কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। রাজধানীতে প্রতিদিন ২৫ স্পটে এই কার্যক্রম চলছে। এছাড়া ঢাকার বাইরে প্রায় হাজার খানেক স্পটে পণ্য বিক্রি করা হয়েছে। গত শুক্রবার পর্যন্ত রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মোট প্রায় ৬ কোটি টাকার ডিম, দুধ, ড্রেসড ব্রয়লার, গরুর মাংস, খাশির মাংস বিক্রি হয়েছে। ৭ মার্চ পর্যন্ত রাজধানীর প্রায় ৫২ হাজার ৪৫৩ জন ক্রেতা এসব পণ্য ক্রয় করেছেন। এর মধ্যে নারী ক্রেতা ছিলেন ২৭ হাজার ৩০৮ জন। পুরুষ ক্রেতা ২৫ হাজার ১৪৫ জন। ফলে দেখা যাচ্ছে এ কার্যক্রমে রাজধানীতে পুরুষের চেয়ে নারী ক্রেতা বেশি। এছাড়া ঢাকার বাইরে মোট ক্রেতার এক তৃতীয়াংশই নারী। ফলে সরকারের এই উদ্যোগ নারীদের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। সাংবাদিকদের জন্য এই কার্যক্রম শুরু করায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতারকে ধন্যবাদ জানিয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ বলেন, এই ধরনের মানবিক কার্যক্রম যত সম্প্রসারিত করা যাবে দেশের মানুষ ততই উপকৃত হবে। রমজান মাসে প্রোটিন জাতীয় পণ্যের যে ধরনের সংকট তৈরি হয় তা এবার হয়নি। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের সুচিন্তিত পরিকল্পনারই অংশ। সুলভ মূল্যে বিক্রয় কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রতি কেজি ড্রেসড ব্রয়লার মাংস ২৫০ টাকা, প্রতি লিটার পাস্তুরিত দুধ ৮০ টাকা, প্রতি ডজন ডিম ১১৪ টাকা এবং প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬৫০ টাকা মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। রমজান উপলক্ষে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি এই কার্যক্রম উদ্বোধন করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। এ কার্যক্রমে সহযোগিতা করছে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি), বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি), বাংলাদেশ ডেইরি অ্যান্ড ফ্যাটেনিং ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিডিএফএফএ) এবং দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাত প্রতিষ্ঠানসহ প্রান্তিক খামারিরা।