গাজীপুরের শ্রীপুরে অবস্থিত সাফারি পার্ক থেকে একের পর এক লেমুরের মতো দুর্লভ প্রাণীর চুরির ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। গতকাল বুধবার দুপুরে সাফারি পার্ক পরিদর্শন শেষে তিনি এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এ সময় তিনি পার্কের কোর সাফারি, আফ্রিকান সাফারি, পাখিশালা, হাতিশালা ও চুরি যাওয়া আফ্রিকান প্রাণী রিংটেইল লেমুর বেষ্টনী ঘুরে দেখেন। এরপর তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, এভাবে দুর্লভ প্রাণীগুলো কীভাবে চুরি হলো এটি খুঁজে বের করতে হবে। আমি মনে করি এখানে যারা দায়িত্বে আছেন ঘটনার আগে ও পরে তাদের ভূমিকা দেখতে হবে। একই ঘটনা যখন ঘটছে, তখন কেন এসব স্থান সিসিটিভির আওতায় আনা হয়নি, সিসি ক্যামেরা কেন কাজ করেনি? এ সব বিষয়ে প্রশ্ন তুলেন উপদেষ্টা।
তিনি আরও বলেন, আপনি যখন ঘটনার ১৪ দিন পর মামলা করবেন তখন তো আর এ সব হারিয়ে যাওয়া প্রাণী ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়ে যায়। এছাড়া আজ একটি বিষয় প্রমাণিত, একটি সংঙ্গবদ্ধ চক্র আছে যারা বাংলাদেশকে বন্যপ্রাণী পাচারের রোড হিসেবে ব্যবহার করেন। সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সাফারি পার্ক আর চিড়িয়াখানা এক নয়। সাফারি পার্কে দর্শনার্থীরা প্রাণীকে দেখবে। আর প্রাণীগুলোকে যতটুকু সম্ভব প্রাকৃতিক পরিবেশে রাখা হয়। তবে এ পার্কে হাতিশালা, জাগুয়ার বেষ্টনী ও লেমুর বেষ্টনীগুলোতে উপযুক্ত পরিবেশ রাখা হয়নি বলে পরিদর্শন করে জানান উপদেষ্টা।
তিনি আরও বলেন, বিলুপ্ত যে সব বন্যপ্রাণী এখানে এনে আমরা রাখছি সেসব হারিয়ে যাচ্ছে। কেন এমন ঘটনা বারবার ঘটছে এটি খুঁজে বের করতে হবে। একই জায়গা থেকে যখন টিয়া পাখি, ময়না পাখি হারায় না, লেমুর হারিয়ে যায় তখন আপনাকে বুঝতে হবে এখানে একটি সমস্যা আছে। সে সমস্যাটি চিহ্নিত করতে হবে। আমার মনে হয় পার্ক ব্যবস্থাপনা আরও অনেক উন্নত করতে হবে। প্রাণীবান্ধব ও দর্শনার্থীবান্ধব করতে হবে। এখানে কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছার অভাবের পাশাপাশি জনবল সংকট রয়েছে। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফীন, পুলিশ সুপার ড. চৌধুরী মো. যাবের সাদেক, বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক সানাউল্লাহ পাটোয়ারী, সেন্ট্রাল সার্কেলের বন সংরক্ষক এএসএম জহির উদ্দিন আকন, গাজীপুর সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহকারী বন সংরক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।