চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ২১৩ শ্রমিক নিহত ও ১৭০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে শ্রমিক অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস)। গতকাল জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা দিবস উপলক্ষে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানায় বিলস। জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা দিবস আন্তর্জাতিক শ্রমিক স্মৃতি দিবস বা কর্মক্ষেত্রে নিহত ও আহতদের জন্য আন্তর্জাতিক স্মরণ দিবস নামেও পরিচিত।
প্রতি বছর ২৮ এপ্রিল বিশ্বজুড়ে এটি পালিত হয়, যেখানে কর্মক্ষেত্রে নিহত, পঙ্গু, আহত বা অসুস্থ হয়ে পড়া শ্রমিকদের বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে স্মরণ করা হয়। বাংলাদেশে এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘শ্রমজীবী মানুষের অধিকার, বৈষম্যহীন বাংলাদেশের অঙ্গীকার’। জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদের ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত বিলসের জরিপ অনুযায়ী ২০২৫ সালের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ২১৩ জন শ্রমিক নিহত হন। খাত অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি ১৮২ জন শ্রমিক নিহত হন পরিবহন খাতে। এছাড়াও নির্মাণ খাতে ৭ জন ও পোশাক খাতে তিনজন শ্রমিকের মৃত্যু হয় এবং অন্যান্য খাতে ২১ জন শ্রমিক নিহত হন।
এছাড়া একই সময়ে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ১৭০ জন শ্রমিক আহত হন, যার মধ্যে ৭০ জন পরিবহন শ্রমিক, ১৮ নির্মাণ শ্রমিক এবং ১২ জন পোশাক শ্রমিক। অন্যান্য খাতে ৭০ জন শ্রমিক আহত হন। বিলস আরও জানায়, ২০২৪ সালে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ৭৩৬ জন শ্রমিক নিহত হন। এর মধ্যে ৭৩৪ জন পুরুষ এবং দুজন নারী। খাত অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি ২৯২ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয় পরিবহন খাতে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১০২ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয় কৃষি খাতে। তৃতীয় সর্বোচ্চ ৯৭ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয় নির্মাণ খাতে। এছাড়া রিকশা শ্রমিক ৪৩ জন, প্রবাসী শ্রমিক ৪১, দিনমজুর ৩২, বিদ্যুৎ খাতে ২৩, মৎস্য শ্রমিক ১৯, জাহাজ ভাঙা শিল্প ১০, স্টিলমিলে ৯, নৌপরিবহণ খাতে ৮, অক্সিজেন ফ্যাক্টরিতে ৭, ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে ৬, হোটেল-রেস্তোরাঁ ৫, রাইস মিলে ৫, ওয়েল্ডিং ওয়ার্কশপে ৫, দোকানে ৫ কর্মচারী এবং অন্যান্য খাতে ২৭ জন শ্রমিক নিহত হন। এছাড়া ২০২৪ সালে কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ৩০০ জন শ্রমিক আহত হন। এর মধ্যে ৩০০ জনই পুরুষ শ্রমিক। সর্বোচ্চ ৪৭ জন মৎস্য শ্রমিক আহত হন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পরিবহন খাতে ৪১ জন আহত হন। তৃতীয় সর্বোচ্চ নির্মাণ খাতে ৩১ জন শ্রমিক আহত হন।
এছাড়া অক্সিজেন কারখানায় ২৪ জন, নৌপরিবহন খাতে ২৩ জন, দিনমজুর ২০ জন, ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে ১৮ জন, তৈরি পোশাক শিল্পে ১৬ জন, হোটেল-রেস্টুরেন্টে ১৩ জন পেপার মিলে ১১ জন, দোকানে কর্মচারী ১০ জন, কৃষিতে ৯ জন, ভোজ্যতেল ফ্যাক্টরিতে ৬ জন, জাহাজ ভাঙায় ৬ জন, বিদ্যুৎ খাতে ৫ জন এবং অন্যান্য খাতে ২০ জন শ্রমিক আহত হন। এছাড়া ৫৫ জন শ্রমিক প্রাকৃতিক দুর্যোগে নিখোঁজ হন, যার মধ্যে অধিকাংশই মৎস্য শ্রমিক।