জ্যৈষ্ঠের শুরুতে রাজধানীর ছোট-বড় বাজার ছেয়ে গেছে রসালো ফলে। আম, কাঁঠাল, লিচু, তালশাঁস, আনারস, জামরুলসহ নানান ফলের পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। অন্যদিকে, মৌসুম শেষ হলেও বেল, বাঙ্গি ও তরমুজও পাওয়া যাচ্ছে। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর মিরপুর, পল্লবীসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। বিক্রেতারা বলছেন, গ্রীষ্মকালীন ফলের মধ্যে বর্তমানে বাজারে ক্রেতাদের চাহিদার শীর্ষে রয়েছে আম ও লিচু। সাতক্ষীরা, যশোর, রাজশাহী থেকে আসা বাহারি নামের আম বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকায়। আর লিচু বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা প্রতিশত। প্রতিকেজি কালোজাম বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা। প্রতিটি তাল ৩০ টাকা, আনারস ৩০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নগরীর প্রায় প্রতিটি পাড়া-মহল্লা ও ফুটপাতে ভ্যানে করেও মৌসুমি এসব ফল বিক্রি করছেন ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি হিমসাগর আম বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকায়, গোবিন্দভোগ ১২০ টাকা, গোপালভোগ ১০০ টাকা, গুটি আম ৮০ টাকা, যশোরের ১০০ লিচু ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা, রাজশাহীর বোম্বে লিচু ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য ফলের মধ্যে ডালিম ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, সাদা আঙুর ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, কালো আঙুর ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, মাল্টা ২০০ থেকে ২৩০ টাকায় ও আপেল ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে পাকা কাঁঠালের দেখা মিলেছে কম। সবজি হিসেবে রান্না করার জন্য কাঁঠাল কিনতে দেখা গেছে ক্রেতাদের। সকালে পল্লবীর একটি ভ্রাম্যমাণ ফলের দোকানে ক্রেতার ভিড় দেখা যায়। বেশিরভাগ ক্রেতাকে আম কিনতে দেখা গেছে।
ফল বিক্রেতা আনসারি আহমেদ বলেন, সারাদেশ থেকে আম আসছে। আমের দামও কম। সব ধরনের আমের বিক্রি ভালো। এখন সাতক্ষীরার আম আসছে বেশি। মাহফুজ নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, বাজারে যে লিচুগুলো আসছে সেগুলো আকারে কিছুটা ছোট। আগামী সপ্তাহ থেকে বড় লিচু আসবে, দামও কিছুটা কমবে। পাকা কাঁঠালের একটা বড় অংশ আসে গাজীপুর ও সাভার থেকে। আগামী এক থেকে দুই সপ্তাহ পর বাজারে পাকা কাঁঠালের সরবরাহ বাড়বে। রায়ানখোলা বাজারের ফল বিক্রেতা মাসুদ আলম বলেন, এখন মানুষ আমণ্ডকাঁঠাল খাবে। এটা অন্তত এক থেকে দুই মাস চলবে। রোগীর জন্য অনেকেই মাল্টা, আপেল কিনছেন। তবে বাসায় খাওয়ার জন্য কিংবা প্রতিবেশীর বাড়িতে আম, লিচু নিয়ে যাচ্ছেন অনেকে, তাই কিনছেন। ক্রেতারা বলছেন, মৌসুমের শুরুতে আমের দাম ১০০ টাকার ওপরে থাকে। ভরা মৌসুমে কিছুটা কমে। শেষ দিকে বেড়ে যায়। মিরপুর-১ নম্বর বাজারে কথা হয় চাকরিজীবী শাহীন আলমের সঙ্গে।
তিনি বলেন, দেশি ফলের দাম নাগালের মধ্যে। স্বাদও ভালো। বিদেশি ফল কিনে খাবার সামর্থ্য হয় না অনেকের, আমাদের জন্য আম, কাঁঠাল এখন আশীর্বাদ। আরেক ক্রেতা জানালেন, আমণ্ডলিচুর দাম সহনীয় হলেও দেশি অন্য ফলের দাম কিছুটা বেশি। রাকিব হাসান নামের একজন ক্রেতা বলেন, দেশি পেয়ারা এখন ১০০ টাকা কেজি, কালোজাম ৪০০ টাকা কেজি। এসব ফলেরও বাণিজ্যিক চাষাবাদ বাড়ানো প্রয়োজন।