বাংলাদেশে তামাকপণ্য সহজলভ্য হওয়ায় তরুণ ও নিম্ন আয়ের জনগোষ্ঠীর মধ্যে তামাক সেবন ও ধূমপানের প্রবণতা আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। সিগারেটের সহজলভ্যতা রোধে কার্যকর করারোপ ও মূল্যবৃদ্ধির বিকল্প নেই। তাই আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে সিগারেটের বিদ্যমান চারটি মূল্যস্তর কমিয়ে তিনটিতে আনার এবং কর ও মূল্য বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন দেশের ছাত্র ও তরুণ সমাজ। গতকাল শুক্রবার সকালে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে মানিক মিয়া এভিনিউ-এ আহ্ছানিয়া মিশন ইয়ুথ ফোরাম ফর হেলথ অ্যান্ড ওয়েলবিয়িং আয়োজিত তরুণদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে তামাক পণ্যে কার্যকর করারোপ ও মূল্য বৃদ্ধির দাবিতে ছাত্র-তরুণ সমাবেশে এমন দাবি জানান তারা। সমাবেশে অংশ নেওয়া ছাত্র ও তরুণরা বলেন, সিগারেটের চার স্তরের মূল্যব্যবস্থা নিম্ন, মধ্যম, উচ্চ ও প্রিমিয়াম তামাক কর নীতিকে দুর্বল করছে।
বিশেষত, নিম্ন ও মধ্যম স্তরের দামের ব্যবধান কম হওয়ায় ভোক্তারা সহজেই এক স্তর থেকে অন্য স্তরে চলে যেতে পারছেন। এ পরিস্থিতিতে নিম্ন ও মধ্যম স্তর একত্রিত করে সিগারেটের দাম বাড়ানো হলে দরিদ্র জনগোষ্ঠী ও তরুণ প্রজন্ম ধূমপান থেকে বিরত থাকবে, পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আয় উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে। সমাবেশে আসন্ন বাজেটের জন্য প্রস্তাবিত তামাক কর ও মূল্য কাঠামো হলো- নিম্ন ও মধ্যম স্তর একত্রিত করে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ৯০ টাকা নির্ধারণ; উচ্চ স্তরে প্রতি ১০ শলাকা সিগারেটের খুচরা মূল্য ১৪০ টাকা অপরিবর্তিত রাখা; প্রিমিয়াম স্তরে প্রতি ১০ শলাকার খুচরা মূল্য ১৯০ টাকা নির্ধারণ। একই সঙ্গে সিগারেটের খুচরা মূল্যের ওপর ৬৭ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক, ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) এবং ১ শতাংশ স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ বহাল রাখা।
সমাবেশে দাবি করা হয়, তাদের প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সিগারেট ব্যবহারের হার ১৫.১ শতাংশ থেকে কমে ১৩.০৩ শতাংশে নামবে। এতে প্রায় ২৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপান ত্যাগে উৎসাহিত হবে এবং ১৭ লাখ তরুণ ধূমপান শুরু করা থেকে বিরত থাকবে। পাশাপাশি সরকারের রাজস্ব আয় বেড়ে ৬৮ হাজার কোটি টাকাতে উন্নীত হবে, যা আগের বছরের তুলনায় ৪৩ শতাংশ বেশি। সমাবেশে আহ্ছানিয়া ইয়ুথ ফোরাম সদস্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। এছাড়াও আরও অংশ নেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন স্বাস্থ্য সেক্টরের উপ-পরিচালক মো. মোখলেছুর রহমান, প্রকল্প সমন্বয়কারী মো. শরিফুল ইসলাম ও প্রোগ্রাম অফিসার অদূত রহমান।