ঢাকা সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

মুক্তিপণের টাকা দিয়েও শেষ রক্ষা হলো না শিশু আইয়ানের

মুক্তিপণের টাকা দিয়েও শেষ রক্ষা হলো না শিশু আইয়ানের

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে নিখোঁজের ৪ দিন পরে বাড়ির পাশের জঙ্গলে পাওয়া গেল আইয়ান সাদাব (৪) নামের শিশুর অর্ধগলিত লাশ। নিখোঁজ হওয়ার পর সাদাবের পরিবারের কাছ থেকে ৩ দফায় মুক্তিপণ আদায় করে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত চক্রটি। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টায় উপজেলার পাগলা থানাধীন দিঘীরপাড় এলাকায় শরীর থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন ও গলিত অবস্থায় শিশুটির ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত আইয়ান সাদাব পার্শ্ববর্তী নান্দাইল উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের বারগুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। সে প্রবাসী আল আমিনের একমাত্র ছেলে। তবে জন্মের পর থেকেই সে তার মা সুমাইয়া আক্তারের সঙ্গে গফরগাঁও উপজেলার পাঁচবাগ ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দিঘীরপাড় (অতার বাড়ী) গ্রামের তার নানা সুলতান মিয়ার বাড়িতে থাকত।

গফরগাঁও উপজেলার দিঘীরপাড় গ্রাম থেকে গত ১১ জুলাই নিখোঁজ হন আইয়ান সাদাব (৪) ও সিফাত (১১)। নিখোজের একদিন পর পরিত্যক্ত একটি ডোবা থেকে সিফাতের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। অপরদিকে নিখোঁজ সাদাবের পরিবারের লোকজন আশপাশের সকল জায়গায় পাগলের মতো খোঁজে পাচ্ছিল না তাদের আদরের সন্তানকে। কিন্তু আইয়ান মায়ের কোলে এলো নিথর দেহ নিয়ে। ৩ দিনের ব্যবধানে নিখোঁজ ২ শিশুর লাশ উদ্ধার হওয়ায় পুরো এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।

নিহত সাদাবের নানা সুলতান মিয়া জানান, গত শুক্রবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বাড়ির সামনে মাইকে শব্দ শুনে দোকানে গিয়েছিল। হঠাৎ করে আর খোঁজ মিলছিল না। পরে বাড়ি আশপাশের পুকুর-ডোবা ও স্বজনদের বাড়িঘরসহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও আর পাওয়া যায়নি। এদিন রাতেই পাগলা থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। সকালে প্রতিবেশী সোহাগ মিয়া গরু চড়াতে গিয়ে এসে জানায়, জঙ্গলের পাশে এবং পুকুর পাড়ে গলিত এক শিশুর লাশ পড়ে আছে। পরে সেখানে গিয়ে সাদাবের লাশ শনাক্ত করেন তার স্বজনরা। তিনি আরও জানান, অপহরণকারীরা তার নাতিকে মুক্তি দেবে বলে বিকাশের মাধ্যমে তিন দফায় ২৮ হাজার টাকা নেয়। তারা মুক্তিপণের টাকা নিয়াও আমার নাতিডারে মাইরা ফালাইলি বলেই কেদে ফেলেন তিনি। এ ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি। নিহত সাদাবের মা সুমাইয়া আক্তার ছেলের শোকে পাথর হয়ে পড়েছে, বার বার কেঁদে বুক ভাসাচ্ছেন তিনি বিলাপ করতে করতে বলেন, আমার একমাত্র নিষ্পাপ ছেলে কি অন্যায় করেছে। তাকে এভাবে অপহরণ করে দাবিকৃত টাকা নিয়েও ৪ দিন আটকে রেখে কষ্ট দিয়ে হত্যা করেছে। আমাদের বুক খালি করেছে। আমি আমার নিষ্পাপ ছেলে সাদাবের খুনিদের গ্রেপ্তার ও ফাঁসি চাই। পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ফেরদৌস আলম বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত