ফরজ নামাজের পর বেশ কিছু আমল করা জরুরি। এই আমলগুলোর মাধ্যমে সওয়াব অর্জন হয় এবং পরকালে মানুষের নাজাতের মাধ্যম হয়। এর মধ্যে অন্যতম হলো আয়াতুল কুরসি পাঠ। ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পড়ার বিশেষ ফজিলত রয়েছে। এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পড়বে তার জান্নাতে প্রবেশের মধ্যে শুধু মৃত্যুই একমাত্র বাঁধা।’ (নাসায়ি : ৯৯২৮)।
আরেক হাদিসে আয়াতুল কুরসির ফজিলত সম্পর্কে উবাই বিন কাব (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, তোমার দৃষ্টিতে কোরআন মাজিদের কোন আয়াতটি সর্ব শ্রেষ্ঠ? তিনি বলেছিলেন, আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুআল হাইয়ুল কাইয়ুম তথা আয়াতুল কুরসি। তারপর রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজ হাত দিয়ে তার বুকে মৃদু আঘাত করে বলেন, আবুল মুনজির! এই জ্ঞানের কারণে তোমাকে মোবারকবাদ।’ (মুসলিম : ১৩৯৬)।
আয়াতুল কুরসির এমন ফজিলতের কারণ হলো, এই আয়াতে আল্লাহর একত্ববাদ বিষয়ে বর্ণনা ও তার গুণবাচক ১০টি বাক্য রয়েছে। আর শয়তানের প্রভাব থেকে মুক্ত থাকার জন্যও এই আয়াত অত্যন্ত কার্যকর।
আয়াতুল কুরসির বাংলা উচ্চারণ
আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়ুল কাইয়ুম। লা তা খুজুহু সিনাতু ওয়ালা নাউম। লাহু মা ফিস সামা ওয়াতি ওয়ামা ফিল আরজ। মান জাল্লাজি ইয়াশ ফাউ ইনদাহু ইল্লা বি ইজনিহি, ইয়া লামু মা বাইনা আইদিহিম ওয়ামা খালফাহুম, ওয়ালা ইউ হিতুনা বিশাই ইম মিন ইল মিহি ইল্লা বিমা শা আ, ওয়াসিয়া কুরসি ইউহুস সামা ওয়াতি ওয়াল আরজ, ওয়ালা ইয়া উদুহু হিফজুহুমা ওয়াহুয়াল আলি ইয়ুল আজিম।
আয়াতুল কুরসির বাংলা অর্থ
আল্লাহ ছাড়া অন্য কোনো উপাস্য নেই, তিনি জীবিত, সবকিছুর ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না এবং নিদ্রাও নয়। আসমান ও জমিনে যা কিছু রয়েছে, সবই তাঁর। কে আছ এমন যে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তাঁর অনুমতি ছাড়া? দৃষ্টির সামনে কিংবা পেছনে যা কিছু রয়েছে, সে সবই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোনো কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। তাঁর কুরসি (সিংহাসন) সমস্ত আসমান ও জমিনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলোকে ধারণ করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয়। তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান।
লেখক : আলেম ও মাদ্রাসা শিক্ষক