ঢাকা শনিবার, ০৫ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

প্রথমবার কিট স্পন্সর পেল বাফুফে

হামজা-জামালদের জার্সিতে ‘দৌড়’

হামজা-জামালদের জার্সিতে ‘দৌড়’

আধুনিক যুগের খেলাধুলায় জার্সি একটি অপরিহার্য অংশ। অথচ ১০০ বছর আগেও ফুটবল খেলায় জার্সি নাম্বর বলে কোনো কিছু ছিল না। আন্তর্জাতিক ম্যাচে জার্সি একটি দেশের পরিচয় বহন করে। জার্সি দেশের ইতিহাস, রাজনীতি এমনকি ভৌগলিক তাৎপর্য বহন করে। আর সে জন্যই একটা দলের জার্সি তৈরিতে প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান মাসের পর মাস ব্যয় করে। এত দিন বাংলাদেশ ফুটবল দলের পৃষ্ঠপোষক থাকলেও কিট স্পন্সর ছিল না। তাবিথ আউয়ালের নেতৃত্বাধীন বাফুফের নতুন কমিটি দায়িত্ব নিয়েই জাতীয় নারী ও পুরুষ সিনিয়র-জুনিয়র সব দলের জন্য প্রথমবারের মতো কিট স্পন্সর নিশ্চিত করেছে।

গতকাল মঙ্গলবার বাফুফে ভবনে ‘দৌড়’ এর সঙ্গে ২ বছরের চুক্তি হয়েছে। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল বলেন, ‘আমরা জার্সির ক্ষেত্রে আবহাওয়া, সেলাই, ধৌত সব কিছু বিবেচনা করেই কিট স্পন্সর প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করেছি। আমরা চাই বাংলাদেশের নাম বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ুক। আমরা বাংলাদেশের ব্র্যান্ডের জার্সি পড়ে খেলি, এটা অন্য দেশ ও ক্লাবগুলোকেও জানাব।’

বাংলাদেশ ফুটবল দলের জার্সি সামনে বাণিজ্যিকভাবে বিক্রির পরিকল্পনা, ‘আমরা সামনে জার্সি কমার্শিয়ালি বিক্রি করব। সেটা অনলাইন বা রিটেইল (খুচরা) উভয়ভাবে। এই বিষয়ে আরো কাজ করে বিস্তারিত বলতে পারব।’ বাফুফে সভাপতি দৌড়ের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের পর অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগ করেন। বাংলাদেশের অনেক কোম্পানি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জার্সি তৈরি করে। সেই সব কোম্পানিকে বিবেচনা না করে দৌড়ের মতো নতুনকে বেছে নেয়ার কারণ সম্পর্কে বাফুফের মার্কেটিং কমিটির চেয়ারম্যান ও ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ফাহাদ করিম বলেন, ‘আমরা তাদের সক্ষমতা, আগ্রহ, যোগ্যতা সব কিছুই যাচাই-বাছাই করেছি।

আমরা কোয়ালিটির সঙ্গে কোনো আপস করিনি। গত দুই মাস নারী দল ও একটি ক্লাব এই জার্সি পড়ে ইতিবাচক পর্যবেক্ষণ দিয়েছে। দুই বছরের চুক্তি থাকলেও এক বছর পর পর্যালোচনার ভিত্তিতে পরের বছরের সিদ্ধান্ত হবে।’

হামজা চৌধুরী ইংলিশ প্রিমিয়ার ফুটবল লিগে খেলা ফুটবলার। হামজা বাংলাদেশের হয়ে খেললে বাংলাদেশের জার্সির জনপ্রিয়তা বাড়বে অনেক। হামজার মতো খেলোয়াড় যখন দৌড়ের জার্সি পড়ে খেলবে ও অনুশীলন করবে তখন এর মূল্য অনেক বাড়বে। সেই অনুপাতে বাফুফের প্রাপ্তি কম হয়ে গেল কিনা এই প্রশ্নের উত্তরে ফাহাদ বলেন, ‘জার্সি যখন কমার্শিয়ালি বিক্রি হবে সেটা অবশ্যই বাফুফের সঙ্গে লভ্যাংশ ভাগাভাগি হবে।’ ফুটবলে আন্তর্জাতিক ম্যাচে স্পন্সর ব্যবহারের ক্ষেত্রে ফিফার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। চুক্তি হওয়ার পর বাফুফে ফিফা-এএফসির অনুমোদনের জন্য আবেদন করবে। সে অনুমোদন পেলে জার্সির একপাশে আট ইঞ্চির মতো জায়গায় দৌড়ের লোগো বসবে। বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের সঙ্গে পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রয়েছে ঢাকা ব্যাংক। অনুশীলনে বাংলাদেশ নারী দল ঢাকা ব্যাংকের লোগো ব্যবহার করে। এর পাশাপাশি দৌড়ের লোগো ব্যবহারে সমস্যা হবে না বলে জানান ফাহাদ, ‘দৌড় জার্সি প্রভাইড করবে। এর ফলে এক অংশে তাদের লোগো স্থাপিত হবে এর বাইরে আমরা অন্য স্পন্সর ব্যবহার করতে অসুবিধা নেই।’

ফুটবলের অন্যতম অংশীদার রেফারি। বাংলাদেশের রেফারিদের পোশাক সংকট পুরোনো। কিট স্পন্সর যুগে প্রবেশ করায় রেফারিদের আশ্বস্ত করে বাফুফের এই সহ-সভাপতি বলেন, ‘আমরা তাদের সমস্যা নিয়ে অবগত। সামনে অন্য কোনো স্পন্সরের মাধ্যমে তাদেরও জার্সি প্রদান করা হবে।’ ২০২০ সালে কোভিডের সময় স্পোর্টস ভিত্তিক ব্র্যান্ড দৌড়ের যাত্রা শুরু।

মাত্র চার বছরের মধ্যেই বাফুফের সঙ্গে অংশীদার হতে পারায় কৃতজ্ঞ কণ্ঠে দৌড়ের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও আবিদ আলম চৌধুরী বলেন, ‘কোয়ালিটির ক্ষেত্রে আমরা আপোষহীন। আমরা আকর্ষণীয় ডিজাইনে জার্সি করব। বাংলাদেশি অরিজিন প্রবাসী এক ডিজাইনার এ নিয়ে কাজ করছে। জার্সিতে বাংলাদেশের ঐতিহ্য থাকবে।’

২৬ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ নারী দল আরব আমিরাতে খেলবে। ওই ম্যাচ দিয়েই দৌড়ের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হবে। দৌড় নারী-পুরুষ উভয় দলকে বুট ও ট্রাভেল ব্যাগ ছাড়া আনুষঙ্গিক সব কিছুই বাফুফেকে সরবারহ করবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত