ঢাকা শুক্রবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

বিশ্বকাপে চমক দেখাতে চান হকির নতুন ডাচ কোচ

বিশ্বকাপে চমক দেখাতে চান হকির নতুন ডাচ কোচ

জাতীয় যুব হকি দলের দায়িত্ব নিতে দিন চারেক আগে ঢাকায় এসেছেন সিগফ্রাইড আইকম্যান। এসেই হকি ফেডারেশনের সঙ্গে চুক্তি সেরে ফেলেছেন এই ডাচ কোচ। চুক্তি হয়েছে চার মাসের মেয়াদে। চুক্তি সইয়ের পর গতকাল রোববার প্রথমবার হকি ফেডারেশনের সভাকক্ষে দুই সহকারী কোচ আশিকুজ্জামান ও মশিউর রহমান বিপ্লবকে সঙ্গে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এলেন সিগফ্রাইড আইকম্যান। নতুন এই কোচের সঙ্গে সবার পরিচয় করিয়ে দিলেন সাধারণ সম্পাদক লে কর্নেল রিয়াজুল হাসান (অব.)। সেখানে গ্রুপের শক্তিশালী প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া ও ফ্রান্সের মধ্যে যে কোনো একটি দলকে হারিয়ে চমক দেখাতে চান নতুন ডাচ কোচ।

আগামী ২৮ নভেম্বর-১০ ডিসেম্বর ভারতের চেন্নাই ও মাদুরাইয়ে হবে অনূর্ধ্ব-২১ হকি বিশ্বকাপ। জুনিয়রদের বিশ্বকাপে প্রথমবার সুযোগ পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ বিশ্বকাপের মতো বড় আসরে সুযোগ পেলেও এতদিন কোনো প্রস্তুতির পরিকল্পনা ছিল না ফেডারেশনের। অবশেষে নেদারল্যান্ডসের এই কোচকে নিয়োগ দিয়েছে হকি ফেডারেশন। কিন্তু নতুন কোচের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে মাত্র চার মাসের। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে পুরোপুরি কাজ ?শুরু করবেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনের পর রবিবার মওলানা ভাসানী স্টেডিয়ামে এসে খেলোয়াড়দের সঙ্গে পরিচিত হলেন নতুন কোচ। খেলোয়াড়দের সঙ্গে কিছুটা সময় কাটান তিনি।

২৪ দলের জুনিয়র বিশ্বকাপে বাংলাদেশ খেলবে ‘এফ’ গ্রুপে। যেখানে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স ও দক্ষিণ কোরিয়া। মাত্র অল্প কিছুদিন খেলোয়াড়দের নিয়ে অনুশীলন করিয়ে এসব দলের বিপক্ষে লড়াইয়ের সাহস দেখাচ্ছেন না কোচ। বাস্তবতা মেনে নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ভালো রেজাল্ট করতে চাই। আমাদের গ্রুপের দলগুলো শক্তিশালী। ওদের সঙ্গে ভালোভাবে লড়াই করতে চাই। যেন আমাদের কেউ উপেক্ষা না করতে পারে। এই ছেলেদের মধ্যে বিশ্বাস জাগাতে চাই যেন আমরা ভালো খেলতে পারি।’ তিনি যোগ করেন, ‘আমাদের গ্রুপে দেখুন। এই গ্রুপের অন্যতম দুর্বল দল আমরা। আমাদের বাস্তবতা মেনে নিতে হবে। এখানে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে খেলতে হবে। যারা অন্যতম কঠিন প্রতিপক্ষ। ফ্রান্স এর আগে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলেছে। সম্প্রতি ফ্রান্স জাতীয় দল হারিয়েছে অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন হল্যান্ডকে। কোরিয়া এশিয়ার সেরা দল। আমাদের লক্ষ্যই থাকবে তাদের জন্য ম্যাচটিকে কঠিন করে তোলা। তাদের আমরা ছাড় দেব না। আমরা আশা করি, যে ভাগ্য ভালো হলে যে কোনো একটা দলকে হারিয়ে চমক দেখাতে পারি। আমরা প্রমাণ করতে চাই আমরাও কম নই। ছেলেরা খেলতে প্রস্তুত ও রোমাঞ্চিত।’ জাতীয় যুব দলের ক্যাম্পে বর্তমানে রয়েছেন ৪০ জন কোচ। প্রথম এক মাস সবাইকে নিয়ে ফিটনেসের উন্নতির জন্য কাজ করবেন কোচ। আগস্ট মাস ধরেই এটা পর্যবেক্ষণ করবেন স্থানীয় কোচেরা। তবে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এসে নতুনভাবে কাজ শুরু করবেন। এমনিতেই দেশে ঘরোয়া হকি চালু নেই দীর্ঘদিন। যে কারণে খেলোয়াড়দের ফিটনেস এর লেভেল উন্নত পর্যায়ে নেই।

স্বাভাবিকভাবেই খেলোয়াড়দের ফিটনেস নিয়ে কোচ সন্তুষ্ট নন। তাই সবার আগে ফিটনেসকেই অগ্রাধিকার দিচ্ছেন আইকম্যান, ‘আমি চাই বিশ্বকাপ লেভেলের ফিটনেস থাকুক খেলোয়াড়দের। এটা অর্জন করতে না পারলে প্লান বি বা সি থাকবে আমার।’

বিশ্বকাপে যাওয়ার আগে পাকিস্তান ও ইউরোপের দেশগুলোতে ১০টি প্রস্তুতি ম্যাচের পরিকল্পনা রয়েছে ফেডারেশনের। সংবাদ সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল হাসান বলেন, ‘আমরা সেপ্টেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহে পাকিস্তানে পাঠাব জুনিয়র দলকে। সেখানে কমপক্ষে চারটা ম্যাচ খেলতে চাই। এছাড়া ইউরোপের দলের সঙ্গে খেলব আমরা। অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে সেখানে যেতে পারি আমরা। সেখানে হল্যান্ড এবং জার্মানির সঙ্গে ১০ দিনের টুর হবে। ওই দেশগুলোর সঙ্গে কমপক্ষে ৬টা ম্যাচ খেলব।’ বিশ্বকাপের জন্য সব মিলিয়ে ৫ কোটি টাকার বাজেট রয়েছে ফেডারেশনের। এরই মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ টাকা হাতে পেয়েছেন কর্মকর্তারা। বাকি টাকার জন্য সরকারের দিতে চেয়ে রয়েছে ফেডারেশন। সাধারণ সম্পাদকের আশা, বাকি টাকাও সরকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে বাংলাদেশ খেলবে। প্রস্তুতিতে তাই কোনো কমতি রাখতে চায় না ফেডারেশন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত