ঢাকা রোববার, ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

প্রতিষ্ঠার ১৬ বছরেও বেরোবিতে হয়নি সমাবর্তন

প্রতিষ্ঠার ১৬ বছরেও বেরোবিতে হয়নি সমাবর্তন

২০০৮ সালের ২০ অক্টোবর রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় নামে যাত্রা শুরু করে উত্তরবঙ্গের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি)। প্রতিষ্ঠার ১৬ বছর পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও হয়নি সমাবর্তন। গত বছরের প্রথমদিকে হওয়ার কথা থাকলেও সেটি আর হয়ে উঠেনি। তবে এই বছরেই সমাবর্তন হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো.শওকাত আলী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এখন পর্যন্ত মূল সনদ ছাড়াই প্রায় সাড়ে ১০ হাজার শিক্ষার্থী পাস করে গেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী মূল সনদ না পাওয়ায় দেশের বাহিরের বিভিন্ন স্কলারশিপ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারতেন না। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও সমালোচনা তৈরি হলে ২০২৩ সালের জুন মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড.হাসিবুর রশিদ সমাবর্তন ছাড়াই মূল সনদ দেন।

এছাড়াও তিনি তখন ঘোষণা দেন ২০২৪ সালের প্রথম কোয়ার্টারে সমাবর্তন করবেন। সেই অনুযায়ী প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে বলে জনসংযোগ দপ্তর থেকে জানানো হয়। পরে সেটি আর আলোর মুখ দেখেনি।

এদিকে ছাত্র জনতার আন্দোলনের পর শেখ হাসিনা সরকারের পতন হলে গত ৮ই আগস্ট পদত্যাগ করেন বিশ্ববিদ্যালয় তৎকালীন উপাচার্য ড. হাসিবুর রশিদ। পরে ১৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ উপাচার্য হিসেবে যোগদান করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড.শওকাত আলী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান বাইজিদ আহমেদ রনি বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় আমার একটি আবেগের জায়গায়। দীর্ঘ ১৬টি বছর পার করলেও এখনো সমাবর্তন আয়োজন করা হয়নি। আমরা দেখি অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় এক দশক পার হলেই সমাবর্তন হয়। কিন্তু সেক্ষেত্রে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) এখনো সমাবর্তন নিয়ে কোনো প্রস্তুতি নেয়নি। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সমাবর্তন করে মেইন সার্টিফিকেট নেয়। কিন্তু আমরা সমাবর্তন ছাড়াই মেইন সার্টিফিকেট নিয়েছি। এইটি একটি কষ্টের জায়গায়। আমরা আশা করব বর্তমান প্রশাসন দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাবর্তন আয়োজন করবে।

ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী স্বপন মাহামুদ বলেন, সমাবর্তন শিক্ষার্থীদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই দিনে শিক্ষার্থীরা কালো ক্যাপ ও গাউন পরে প্রথমবারের মতো সনদ হাতে পায়। এটি তাদের অধিকার। অথচ বেরোবির বয়স ১৭ বছর পার হয়ে গেছে। দেশের বাইরেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ছড়িয়ে পড়েছে। এখান থেকে পাস করা অনেক শিক্ষার্থী আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজ করছে, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়টি এখনো একটি সমাবর্তনের আয়োজন করতে পারেনি। একজন সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে বলতে চাই- সমাবর্তন, তুমি কোথায়?

বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড.তুহিন ওয়াদুদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ১৬ বছরেও সমাবর্তন নেই এইটি দুঃখজনক। আমরা জেনেছি উপাচার্য মহোদয় বলেছেন তিনি সমাবর্তন করবেন। আমরা আশা করি তিনি খুব শীঘ্রই তা করবেন।

এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. শওকাত আলী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় সমাবর্তন শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবি। আমি সমাবর্তন করার জন্য আগ্রহী এবং সেটি আমি এই বছরই করব। এইটা নিয়ে আমাদের কাজ চলছে।

বেরোবি,সমাবর্তন
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত