ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ঈদে কক্সবাজারে ৮ লাখ পর্যটকের ভিড়ের প্রস্তুতি

ঈদে কক্সবাজারে ৮ লাখ পর্যটকের ভিড়ের প্রস্তুতি

পবিত্র ঈদুল আজহার লম্বা ছুটিতে দেশের প্রধান পর্যটনগন্তব্য কক্সবাজারে আট লাখের বেশি পর্যটকের সমাগম হতে পারে বলে আশা করছেন স্থানীয় হোটেল-রেস্তোরাঁ মালিক ও পর্যটন উদ্যোক্তারা। ইতিমধ্যে হোটেল, রিসোর্ট ও গেস্টহাউসগুলোর অধিকাংশ কক্ষ আগাম বুকিং হয়ে গেছে। সৈকত শহরজুড়ে পর্যটকদের জন্য নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা। প্রস্তুত রাখা হয়েছে সড়ক, সৈকত ও আকর্ষণীয় স্থানগুলো

পর্যটকের চাপ বাড়বে ৯ জুন থেকে: কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী জানান, রমজানের ঈদে যেখানে প্রায় ১২ লাখ পর্যটক এসেছিলেন, এবার কোরবানির ঈদেও আট লাখের বেশি মানুষ কক্সবাজারে ছুটি কাটাতে আসবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে হোটেল, রেস্তোরাঁ, দোকান, শুঁটকি ও সামুদ্রিক মাছসহ অন্তত ১৩টি খাতে ৭০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হতে পারে।

কলাতলী হোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান বলেন, ঈদের দ্বিতীয় দিন ৮ জুন থেকে পর্যটকের আগমন বাড়বে। ৯ থেকে ১১ জুন পর্যন্ত পর্যটকের ভিড় সর্বোচ্চ থাকবে এবং ১২ থেকে ১৯ জুন প্রতিদিন গড়ে ৬০ হাজারের বেশি পর্যটক কক্সবাজারে আসবেন।

ঈদে কক্সবাজারে ৮ লাখ পর্যটকের ভিড়ের প্রস্তুতি

হোটেল বুকিংয়ে ব্যস্ততা, ছাড় কম: তারকা হোটেল যেমন সিগাল, সায়মান, মারমেইড, ওশান প্যারাডাইস, জলতরঙ্গ, হোটেল কল্লোল, রয়্যাল টিউলিপসহ অন্তত ২৫টি বড় হোটেলে ৯০ শতাংশ কক্ষ আগাম বুকিং হয়ে গেছে। সাধারণ মানের পাঁচ শতাধিক হোটেলে এখন পর্যন্ত ৪০ শতাংশ কক্ষ বুকিং হয়েছে।

হোটেল মালিকরা জানিয়েছেন, ঈদের এই মৌসুমে ভাড়ায় তেমন ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। কিছু হোটেলে বিশেষ বিবেচনায় ১০–২০ শতাংশ ছাড় মিললেও, অফসিজনে যে ৫০–৭০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় থাকে, তা এখন কার্যকর নয়।

সৈকতে প্রস্তুতি, বাড়তি নিরাপত্তা: কক্সবাজারের সৈকতের কলাতলী, সুগন্ধা ও লাবণী পয়েন্টে এখনো তুলনামূলকভাবে ভিড় কম হলেও, ৯ জুনের পর সৈকত হয়ে উঠবে লোকে লোকারণ্য। লাইফগার্ড সংস্থা ‘সি-সেফ’ জানিয়েছে, পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ সৈকতে পর্যটকদের নিরাপত্তায় ২৬ জন লাইফগার্ড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সঙ্গে রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের বিচকর্মীরা।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. সালাহ উদ্দিন জানিয়েছেন, পর্যটকদের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। চালু রয়েছে সচেতনতামূলক প্রচারণা। পর্যটকেরা ‘ভ্রমণিকা’ অ্যাপের মাধ্যমে হোটেল বুকিং, যানবাহন, টিকিটসহ প্রয়োজনীয় সব তথ্য জানতে পারবেন।

টেকনাফ, মেরিন ড্রাইভ ও পাহাড়ি অঞ্চলেও প্রস্তুতি:

পর্যটকদের একটি বড় অংশ কক্সবাজার ঘুরে যান মেরিন ড্রাইভ ও টেকনাফের দিকে। মেরিন ড্রাইভের দুই পাশে পাহাড় ও সমুদ্রের সৌন্দর্য, হিমছড়ির ইকো ট্যুরিজম, ইনানী ও পাটোয়ারটেকের নৈসর্গিক দৃশ্য প্রতিবারের মতো এবারও থাকবে দর্শনার্থীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে।

টেকনাফ সৈকতের বড় আকর্ষণ হলো রঙিন নৌকা। পাঁচ শতাধিক রঙিন নৌকা সারি করে দাঁড়িয়ে থাকে সৈকতে, যেখানে পর্যটকেরা ছবি তুলতে ব্যস্ত থাকেন। তবে স্থানীয় প্রশাসন সন্ধ্যার পর ঝাউবাগান ও পাহাড়ি জঙ্গলে প্রবেশ না করার পরামর্শ দিয়েছে।

টেকনাফ থানার ওসি গিয়াস উদ্দিন জানিয়েছেন, এখনো পর্যাপ্ত ডুবুরি বা লাইফগার্ড সেখানে নেই, তবে সামগ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে প্রশাসন।রেস্তোরাঁ ও খাবারের মান নিয়ে নজরদারি: ঈদের দিন শহরের ছয় শতাধিক রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকলেও দ্বিতীয় দিন থেকেই চালু হবে সব প্রতিষ্ঠান। রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাভেদ ইকবাল জানিয়েছেন, খাবারের মান ও মূল্য নিয়ে ভোক্তাদের যেন কোনো অভিযোগ না থাকে, সে জন্য নিয়মিত মনিটরিং করা হবে।l

পর্যটক,কক্সবাজার
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত