অনলাইন সংস্করণ
২০:৩১, ২৩ অক্টোবর, ২০২৫
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে হতাশাজনক ফলাফল, আত্মপ্রকাশের আট মাসের মধ্যে গঠনতন্ত্র নির্ধারণে ব্যর্থতা এবং সাম্প্রতিক ক্যাম্পাস সংঘর্ষের পর পুনর্গঠনের পথে হাঁটছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস)।
সংগঠনটি নতুন নাম, নেতৃত্ব ও কাঠামো নিয়ে আবারও আত্মপ্রকাশের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
বাগছাসের কেন্দ্রীয় নেতারা জানিয়েছেন, সংগঠনের নতুন নাম হিসেবে ‘গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি’, ‘জাতীয় ছাত্রশক্তি’ কিংবা ‘বাংলাদেশ ছাত্রশক্তি’—এই তিনটি প্রস্তাবের মধ্যে আলোচনা চলছে। তবে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে ‘জাতীয় ছাত্রশক্তি’ নামটি।
জানা গেছে, নতুন সংগঠনটি জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র আদর্শিক সহযোগী ছাত্র সংগঠন হিসেবে কাজ করবে।
২০২৩ সালের ৪ অক্টোবর আখতার হোসেনের নেতৃত্বে ‘গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি’ নামে আত্মপ্রকাশ করেছিল সংগঠনটি। “শিক্ষা, শক্তি ও মুক্তি” স্লোগান নিয়ে নতুন প্রজন্মের রাজনৈতিক বিকাশে তারা কাজ শুরু করেছিল। কিন্তু গত বছরের গণঅভ্যুত্থানের পর সব কমিটি স্থগিত হয়ে যায় এবং নেতৃত্বের মধ্যে বিভাজন দেখা দেয়। তখন একাংশ এনসিপির সঙ্গে থেকে নতুন সংগঠন বাগছাস গঠন করে, অন্য অংশ পুরনো কাঠামো ধরে রাখে।
বাগছাসের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আব্দুল কাদের জানিয়েছেন, দুটি নাম নিয়ে আলোচনার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বৃহস্পতিবার শহীদ আবু সাঈদ ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত বার্ষিক সভায় নেওয়া হবে।
সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ সাকিব বলেন, “গঠনতন্ত্র নির্ধারণে আমরা উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি করেছি। সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটিয়ে নতুন কমিটি গঠন করে শিক্ষার্থীদের জন্য কার্যকর রাজনীতি করতে চাই।”
তিনি আরও বলেন, “অনুপ্রবেশকারীদের কারণে সংগঠন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। আমরা এখন নিজেদের শৃঙ্খলা ও কাঠামো ঠিক করে স্পষ্ট লক্ষ্য নিয়ে সামনে এগোতে চাই।”
সংগঠনের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও নেতৃত্ব সংকটের কারণে বাগছাস ডাকসু, জাকসু ও রাকসু নির্বাচনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিতে পারেনি। বিশেষ করে ডাকসু নির্বাচনে সংগঠনের তিনটি ভিন্ন প্যানেল থেকে প্রার্থী মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, যা বিভাজনের ইঙ্গিত বহন করছে।
এদিকে এনসিপির সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে নানা জল্পনা থাকলেও বাগছাস নেতারা বলছেন, সম্পর্কটি কৌশলগত এবং আদর্শিক সহযোগিতার ভিত্তিতে। তাদের দাবি, সংগঠনটি ‘মধ্যপন্থি রাজনীতি’ অনুসরণ করবে এবং ‘কল্যাণ রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করবে।
নতুন কেন্দ্রীয় কমিটিতে সর্বোচ্চ ১০১ সদস্য রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখাকে ‘বিশেষ শাখা’ হিসেবে ঘোষণা করা হতে পারে। আলোচনায় থাকা নেতৃত্বের মধ্যে রয়েছেন আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার ও সদস্য সচিব জাহিদ আহসানসহ অনেকে।
‘জাতীয় ছাত্রশক্তি’ নামটি চূড়ান্ত হলে এটি এনসিপির যুব সংগঠনের ধারাবাহিক অংশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ও বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতিতে নিজেদের প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যেই এই পুনর্গঠন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।