ঢাকা সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

হাওরের ঐতিহ্য রক্ষায় পলো বাইচ

হাওরের ঐতিহ্য রক্ষায় পলো বাইচ

হবিগঞ্জে হাওড়ের ঐতিহ্য রক্ষায় পলো বাইচ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার জেলার বানিয়াচং উপজেলার আতুকুড়া বড়আন বিলে ও নবীগঞ্জের বিজনা নদীতে এ উৎসবের আয়োজন করে এলাকাবাসী। জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা হাজারের অধিক মাছ শিকারি আয়োজনকে মাতিয়ে তোলেন। প্রতি বছর শীত মওসুমে হাওড়ের পানি কমতে শুরু করলে বানিয়াচং উপজেলার আতুকুড়া, সুবিদপুর, কাটখাল, মিঠাপুর, দরওয়া, মেওতুল, নাগুরা, কবিরপুর, সুনারু, বলাকীপুরসহ আশপাশের গ্রামের মুরুব্বিরা বসে পলো দিয়ে মাছ শিকারের তারিখ নির্ধারণ করেন।

নির্ধারিত দিনে কয়েক হাজার লোক পলো, জাল, দড়িসহ মাছ শিকারের বিভিন্ন উপকরণ নিয়ে দলবদ্ধ হয়ে বিলে হাজির হন। মাছ শিকার উৎসব উপলক্ষে আশপাশের গ্রামগুলোতে বিরাজ করে উৎসবমুখর পরিবেশ। শিকারিদের অনেকেই বোয়াল, গজার, শোলসহ বিভিন্ন দেশীয় প্রজাতির মাছ ধরেন। অন্যদিকে নবীগঞ্জের বিজনা নদীতে একই সময়ে পলো বাইচের আয়োজন করেন নদী তীরবর্তী গ্রামগুলোর বাসিন্দারা। এতে শুধু হবিগঞ্জ ছাড়াও পাশের মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে অনেক মানুষ এসে অংশ নেন।

আতুকুড়া গ্রামের আশিক মিয়া বলেন, পলো দিয়ে একটি গজার ও তিনটি বোয়াল মাছ ধরেছি। মাছ ধরে খুব আনন্দ লাগছে। একই গ্রামের সমুজ আলী আখঞ্জি বলেন, আমি একটি বড় গজারসহ তিনটি মাছ ধরেছি। দেশীয় এ সব মাছ শিকার করতে পেরে খুশি লাগছে।

প্রতি বছরই পলো দিয়ে মাছ শিকার করতে বিলে যাই। নবীগঞ্জের বড়গাঁও গ্রামের শামিম আহমেদ বলেন, বিজনা নদীতে মাছ শিকারিরা এবার হাসিমুখে বাড়ি ফিরেছেন। কারণ সবার হাতেই ছিল বড় বড় মাছ। মাছ পেয়ে শীতের কষ্ট লাঘব হয়েছে। আতুকুড়া গ্রামের আব্দুল হেকিম জানান, পলো বাইচের আগে বিলে জাল ফেলে মাছ ধরে নেন ইজারাদাররা। ফলে বাইচে শিকারিরা তেমন মাছ পান না। এছাড়া বাইচ শেষে বিলে বিষ দিয়ে মাছ নিধন করা হয়। এতে মাছের বংশ বিস্তার বিনষ্ট হয়। তাই বিলে যেন বিষ দিয়ে মাছ নিধন না করা হয় সেদিকে সরকারকে সুনজর দিতে হবে। এ উৎসব আমাদের ঐতিহ্য। একে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত