তিলে পুষ্টি, তিলেই আয়ের নতুন উৎস। কুষ্টিয়ায় তিল চাষে সোনালি স্বপ্ন দেখছে কৃষকরা। এবছর কুষ্টিয়ার দৌলতপুর ও কুমারখালি উপজেলার চরাঞ্চলে তিল চাষ কৃষক পরিবারের কাছে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলেছে। তিল চাষে বাম্পার ফলনে সোনালি সম্ভাবনা বিরাজ করছে। নিত্যদিন ব্যবহারে ভোজ্যতেল হিসেবে তিলের তেলের চাহিদা বাড়ায়, চাষিরা এই ফসলকেই দেখছেন আয়ের নতুন উৎস হিসেবে। তিল চাষে কম পরিশ্রম ও উৎপাদন খরচও কম। বাজারে তিলের তেলের ভালো দাম পাওয়ায় তিল চাষের প্রতি কৃষক পরিবারগুলোর আগ্রহ বেড়েছে বহুগুণ।
এই দুটি উপজেলার বাজুমারা, চিলমারি চরসাদিপুর, শিলাইদহ এলাকার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা যায়, অনেক কৃষক জমিতে তিলের চাষ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকরা এবার বাম্পার ফলনের প্রত্যাশায় রয়েছেন। দৌলতপুর উপজেলার চিলামারি ইউনিয়নের বাংলা বাজার এলাকার বাজুমারা গ্রামের চাষি জমির শিকদার বলেন, গত তিন বছর ধরে আমি তিল চাষ করে আসছি। এবার দুই বিঘা জমিতে তিল চাষ করেছি। রাসায়নিক সার, কীটনাশক বা সেচ লাগে না। প্রতি বিঘা থেকে ৭-৮ মণ ফলন পাওয়া যায়, এতে আয় হয় ১৩-১৪ হাজার টাকা। তিল চাষে ঝামেলা কম; কিন্তু লাভ অনেক বেশি। অন্যদিকে, কুমারখালি উপজেলার শিরাইদহ ইউনিয়নের কৃষক মারুফ হোসেন বলেন, আগে তিল চাষ করতাম না। আমাদের কৃষক আকরাম মেম্বারকে তিল চাষ করতে দেখে উৎসাহ পেয়েছি। এবার প্রথমবার এক বিঘা জমিতে চাষ করেছি। এখন দেখছি, এই ফসলে খরচ কম, জমিও খালি পড়ে থাকে না। ফলনও আশানুরূপ অনেক ভালো হচ্ছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচাল সূফি রফিকুজ্জামান জানান, চলতি মৌসুমে কুষ্টিয়ার দুটি উপজেলায় ৮৭ হেক্টর জমিতে তিলের আবাদ করেছে এখানকার কৃষকরা। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ব্রিজ সহায়তা দেওয়া হয়েছে ৩০০ জন কৃষক পরিবারকে। কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের উৎসাহ দিচ্ছেন এবং কারিগরি সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, তিল চাষে যদি বাজার ব্যবস্থাপনা সহজ করা যায়, তাহলে এটি হতে পারে এ অঞ্চলের কৃষকদের কৃষির জন্য একটি নতুন শথ চলার বড় উপায় বা অবলম্বন। দৌলদপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম বলেন, তিল একটি লাভজনক এবং পরিবেশবান্ধব ফসল। কম খরচে তিল চাষে উৎপাদন সম্ভব হওয়ায় কৃষকরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তিলের তেল অত্যন্ত স্বাস্থ্যসম্মত, যার বাজার চাহিদা নিত্যদিনই বাড়ছে। আমরা চাই তিল হোক কৃষকদের আর্থিক মুক্তির একটি বড় ধরনের পথ।