কুড়িগ্রামের বিভিন্ন কোরবানির পশুর হাটে গরুর প্রচুর সরবরাহ থাকলেও আশানুরূপ বিক্রি হচ্ছে না। হাটে উঠেছে নানা জাত ও আকারের গরু, তবে ক্রেতার চেয়ে বিক্রেতার সংখ্যা কয়েক গুণ বেশি। গরুর দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় কম হলেও বিক্রি না হওয়ায় হতাশায় দিন কাটছে বিক্রেতাদের।
কুড়িগ্রামের ঐতিহ্যবাহী যাত্রাপুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, হাটজুড়ে গরুর সারি, কিন্তু সেখানে প্রকৃত ক্রেতার দেখা মিলছে হাতে গোনা। একই চিত্র ভুরুঙ্গামারী, যাত্রাপুর, চিলমারী, ফুলবাড়ী ও উলিপুরের পশুর হাটগুলোতেও। অনেক গরু ব্যবসায়ী হাটে বারবার আসছেন, কিন্তু কাঙ্ক্ষিত দামে বিক্রি করতে পারছেন না। জেলা ভেটেরিনারি হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, এবছর জেলায় স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলিয়ে মোট ২৯টি পশুর হাট বসানো হয়েছে। এর মধ্যে ১৫টি হাট স্থায়ী এবং ১৪টি অস্থায়ীভাবে পরিচালিত হচ্ছে। কোরবানির উপযোগী পশু প্রস্তুত করা হয়েছে প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার, যা জেলার চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বাইরের জেলাতেও সরবরাহ করা হতে পারে। জেলাজুড়ে ভেটেরিনারি টিম রয়েছে মোট ২৮টি। এসব টিম প্রতিনিয়ত প্রতিটি হাটে ঘুরে ঘুরে পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও তদারকি করছে, যাতে করে কোনো ধরনের অসুস্থ বা সংক্রামক রোগে আক্রান্ত পশু হাটে প্রবেশ না করতে পারে। জনস্বাস্থ্য ও প্রাণিসম্পদের সুরক্ষায় তারা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে।
স্থানীয় হাটগুলোতে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসন, ভেটেরিনারি চিকিৎসক ও স্বেচ্ছাসেবকদের উপস্থিতি থাকলেও বাজার ব্যবস্থাপনায় নতুন কোনো উদ্ভাবনী পদক্ষেপ দেখা যায়নি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মানুষ আগেভাগেই গরু কিনে ফেলায় হাটে এখন দর্শনার্থীর সংখ্যা বেশি, প্রকৃত ক্রেতা কম। গরুর হাটে মন্দা থাকলেও ছাগলের বাজারে তুলনামূলক কিছুটা সরব উপস্থিতি দেখা গেছে। হাটে ছোট ও মাঝারি আকারের ছাগলের ভালো চাহিদা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ক্রেতারা বলছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় ছাগলের দাম এবার একটু বেশি। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো ছাগল কেনার দিকেই বেশি ঝুঁকছে।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো. হাবিবুর রহমান বলেন, জেলার প্রতিটি পশুর হাটে ভেটেরিনারি চিকিৎসক দল কাজ করছে। পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও টিকা প্রদান নিশ্চিত করা হচ্ছে। বিশেষভাবে নজরদারি করা হচ্ছে যেন কেউ গরু মোটা করার জন্য স্টেরয়েড বা ক্ষতিকর ওষুধ ব্যবহার না করে। এসব বিষয়ে আমরা নিয়মিত মনিটর করছি।