মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে সম্প্রতি জমি সংক্রান্ত বিরোধ বেড়েই চলেছে। এতে হামলা পাল্টা হামলায় গত ৭ দিনে ৩ জন নারী খুন হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৫ জন। খুনের এসব ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়েছে। সচেতন মহলে সৃষ্টি হয়েছে ক্ষোভ। সবশের্ষ গত ৩ জুন উপজেলার সীমান্তবর্তী ৯নং ইসলামপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ কাঠালকান্দি গ্রামে চাচার হাতে ২ ভাতিজি খুনের ঘটনা ঘটে। দুই ঘটনায়ই থানায় মামলা দায়ের হলেও প্রধান আসামিরা গ্রেপ্তার হয়নি। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জমি সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জের ধরে গত ৩ জুন দক্ষিণ কাঠালকান্দি গ্রামের মাসুক আলী ধারালো অস্ত্র দিয়ে কূপিয়ে শামিমা সুলতানা (২৫) ও মীম সুলতানা মাসুমা (২৮) নামে দুই বোনকে কুপিয়ে হত্যা এবং বড় ভাই আবু মিয়ার স্ত্রী হাজিরা বেগমকে (৫৫) গুরুতর জখম করেন। নিহত দুই নারীও আবু মিয়ার কন্যা। ২ কন্যা সন্তানকে হারিয়ে ও গুরুতর আহত চিকিৎসাধীন স্ত্রীকে নিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ছেন আবু মিয়া। এলাকায়ও চলছে শোকের মাতম। খুনের এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে কমলগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করা হলেও ঘাতক মাসুক আলীকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। গুরুতর আহত হাজিরা বেগম বর্তমানে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুও সাথে পাঞ্জা লড়ছে। একইভাবে জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে গত ২৬ মে বেলা ১০টায় ভাসানীগাঁও গ্রামের নবদুত কিন্ডারগার্টেন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ও নারী উদ্যোক্ত রোজিনা বেগমকে (৩৪) কুপিয়ে হত্যা করা হয়। আহত হোন ভাই জালাল আহমেদ, হারুন মিয়া, তার স্ত্রী নুরুন নাহার লুবনা। নিহত রোজিনার ১০ বছর বয়সী একমাত্র শিশু সন্তানটিও বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। এঘটনায় পুলিশ তাৎক্ষণিক আব্দুর রহিমসহ ৩ জনকে আটক করে। এ ঘটনায় রোজিনা বেগমের বড় ভাই শাহজাহান আহমদ বাদী হয়ে কমলগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। তবে প্রধান আসামি রেজাউল করিম সাগরকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। গ্রামেও চলছে শোকের মাতম। কমলগঞ্জে পাশাপাশি ৩টি খুনের ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়া চলছে তোলপাড়। সবাই ঘটনার নিন্দা ও মুল আসামিদের গ্রেপ্তার করা দাবি জানাচ্ছেন। সচেতন মহলের দাবি, বর্তমানে জমিজমা বিরোধ বেড়েছে চলেছে। কথায় কথায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মারামারি করছেন মানুষজন। এসব মারামারি থামাতে স্থানীয়রা ভয়ে কেউ এগিয়ে যাচ্ছেন না। গত মঙ্গলবার দুই নারীকে কুপিয়ে জমিতে ২ ঘণ্টা ফেলা রাখলেও এলাকাবাসী এগিয়ে যাননি। পরে পুলিশ যাওয়ার পর গ্রামবাসী এগিয়ে এসে লাশগুলো হাসপাতালে পাঠান। এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ থানার ওসি আবু জাফর মাহফুজুল কবির বলেন, দু’টি ঘটনায়ই হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। রোজিনা বেগম হত্যা মামলায় ৪ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন এবং প্রধান আসামিকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। অন্যদিকে ২ ভাতিজি খুনের ঘটনায় মাসুক আলীকেও গ্রেপ্তারের জোর চেষ্টা চলছে।
