ঢাকা রোববার, ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

বগুড়ায় স্ট্রবেরি চাষে অভাবনীয় সাফল্য

বগুড়ায় স্ট্রবেরি চাষে অভাবনীয় সাফল্য

শীতপ্রধান দেশের ফল হিসেবে প্রচলন থাকলেও প্রান্তিক কৃষকের কল্যাণে স্ট্রবেরি এখন বাংলাদেশেও ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে। বাজার চাহিদা, ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় প্রতিনিয়ত কৃষকের মধ্যে জনপ্রিয় হচ্ছে স্ট্রবেরি চাষ। ফল হিসেবে খাওয়া ছাড়াও বিভিন্ন খাদ্যের সৌন্দর্য্য ও সুগন্ধ বৃদ্ধিতেও স্ট্রবেরি ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। বগুড়ায় বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে স্ট্রবেরি চাষ। এক সময় উচ্চমূল্যের এই ফসলটি চাষে কৃষকরা লোকসানে পড়লে মুখ থুবড়ে পড়ে এর উৎপাদন কার্যক্রম।

তবে চাষ এবং জমি পরিচর‌্যা পদ্ধতিতে পরিবর্তন এনে সাফল্যের মুখ দেখছেন বগুড়ার কৃষকরা। স্ট্রবেরি ছোট ঝোপালো লতানো প্রকৃতির গাছ। এতে শক্ত কোনো কান্ড বা ডালপালা নেই। পাতা সবুজ, ছোট কিনারা খাঁজকাটা, থানকুনি পাতার মতো, পাতার বোঁটাও লম্বা, সরু, নরম। ঝোপের মধ্যেই ছোট ছোট ঘণ্টার মতো সাদা বা ঘিয়া রঙের ফুল ফোটে। সরু সুতার মতো বোঁটার মাথায় একটি একটি করে ফল ধরে। তবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় হলো ফল। লিচুর মতো একটি গাছে অনেক ফল ধরে। কাঁচা ফলের রঙ সবুজাভ, পাকলে উজ্বল টকটকে লাল হয়।

আকর্ষণীয় রঙ, গন্ধ ও উচ্চ পুষ্টিমাণের জন্য স্ট্রবেরি খুবই জনপ্রিয়। এতে ভিটামিন ‘সি’ ছাড়াও পর‌্যাপ্ত পরিমাণে অন্যান্য ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ রয়েছে। ভারতসুন্দরী বরই, অফসিজন তরমুজের পরে এবার স্ট্রবেরি চাষে বাজিমাত করেছে বগুড়ার নন্দীগ্রামের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা জাব্বির হোসেন। কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতা এবং পরামর্শে চার বিঘা জমিতে আমেরিকান ফেস্টিভাল জাতের স্ট্রবেরি চাষ করে গত সাত দিনে বিক্রয় করেছেন আড়াই লাখ টাকা। তিনি ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাইকারি দরে স্ট্ররেবি বিক্রয় শুরু করেছেন। তিনি জানান, বাজারে তার স্ট্রবেরি চাহিদা বেশ। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন এখান থেকে কয়েক লক্ষ টাকা লাভ হবে।

বগুড়ায় স্ট্রবেরি গাছের চারা উৎপাদন এবং ফল চাষ শুরু করেছেন সদর উপজেলার কোয়ালিপাড়া গ্রামের এম হাসান আলী। তিনি ইউরোপে বসবাস করতেন।

দেশে ফেরার পর গত ৭ বছর যাবৎ বিভিন্ন ধরণের উচ্চমূল্যের ফসল নিয়ে কাজ করছে। হাসান আলী জানায়, স্ট্রবেরিতে বিনিয়োগ একটু বেশি কিন্তু প্রফিট অনেক গুণ বেশি। যে কারণে তিনি স্ট্রবেরি চাষ এবং চারা উৎপাদন শুরু করেছে।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, স্ট্রবেরি পুষ্টি সমৃদ্ধ একটি ফল। বাণিজ্যিকভাবে জেলায় স্ট্রবেরি চাষ হচ্ছে। উচ্চ ফলনশীল স্ট্রবেরি বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ করার মাধ্যমে বেকারত্ব এবং পুষ্টি ঘাটতিও পূরণ করা সম্ভব। নভেম্বর-ডিসেম্বর মাস পর‌্যন্ত স্ট্রবেরির চারা রোপণ করা যায়। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে গাছে ফুল আসতে শুরু করে। ডিসেম্বরের শেষ ভাগ থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ফল আহরণ করা যায়।

চলতি বছর জেলার ১ হেক্টর জমিতে স্ট্রবেরির চাষ করেছে কৃষকরা। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীতে স্ট্রবেরি চাষের জমি আরো বাড়বে। অল্প বিনিয়োগে বেশি মুনাফা হওয়ায় এটি চাষে কৃষকদের আগ্রহ অনেক বেশি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত