ঢাকা সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

মুষ্টির চাল বিক্রি করে রাস্তা নির্মাণ

মুষ্টির চাল বিক্রি করে রাস্তা নির্মাণ

জন দুর্ভোগ থেকে পরিত্রাণ পেতে মুষ্টির চাল বিক্রি করে রাস্তা নির্মাণ করেছে এলাকাবাসী। স্বাধীনতার দীর্ঘদিন পরেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এসব এলাকায়। টাঙ্গাইলের মির্জাপুর ও দেলদুয়ার উপজেলার সীমান্তবর্তী এ দুটি গ্রামে কয়েক হাজার মানুষের বসবাস। রাস্তা নিচু হওয়ায় প্রতিবছর বন্যা কবলিত হয় স্থানীয়রা। বৃষ্টি হলেই রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। হাজারো মানুষ চলাচলে নানা দুর্ভোগের শিকার হয়।

ভোগান্তি এড়াতে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর-দেলদুয়ার উপজেলার এ দুটি গ্রামে সমাজের সাপ্তাহিক মুষ্টির চাল তুলে তা বিক্রি করে এক কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করেছেন দুই গ্রামের বাসিন্দারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, দুই গ্রামের বাসিন্দারা মাটি কাটার কাজ করছেন। সব বয়সী মানুষ রাস্তা দিয়ে মাটি ফেলছেন। কেউ কেউ বাড়ি বাড়ি গিয়ে মুষ্টির চাল তুলছেন। রাস্তার উন্নয়নে তারা মিলে মিশে ৫ বছর ধরে মুষ্টির চাল তুলছেন বলেও জানিয়েছেন এলাকাবাসী। তারা জানান, মির্জাপুর-দেলদুয়ার উপজেলার শেষ প্রান্তে গবড়া ও ডুবাইল এ দুটি গ্রামের অবস্থান। স্বাধীনতার পর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও তাদের এলাকায় উন্নয়নের ছোঁয়া নেই। বর্ষা আসার সঙ্গে সঙ্গে রাস্তা পানিতে তলিয়ে যায়।

বছরের ৪-৫ মাস অবধি রাস্তায় পানি থাকে। এর ফলে ছেলে-মেয়েদের স্কুল-কলেজ ও অসুস্থ মানুষ নিয়ে উপজেলা সদরে যেতে কষ্ট হয়। এলাকাবাসী বাধ্য হয়ে নিজেদের উদ্যোগে রাস্তা নির্মাণ করেছেন। পাঁচ বছর ধরে সাপ্তাহিক মুষ্টির চাল তুলে তা বিক্রি করে দুই মাস ধওে এক কিলোমিটার রাস্তার নির্মাণ কাজ চলমান। রাস্তাটির সম্পূর্ণ কাজ করতে প্রশাসন ও সরকারের প্রতি সুদৃষ্টি কামনা করেছেন স্থানীয়রা।

দেলদুয়ার উপজেলার ডুবাইল গ্রামের সুজাত আলী জানান, তাদের গ্রামটি দেলদুয়ারের শেষ প্রান্তে হওয়ায় কেউ এলাকার খোঁজ রাখেন না। বিভিন্ন সময় জনপ্রতিনিধিরা প্রতিশ্রুতি দিলেও কেউ কথা রাখেনি। তাই নিজেরা উদ্যোগ নিয়ে মুষ্টির চাল তুলে তহবিল সংগ্রহ করে এক কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন। সরকারি সহযোগিতা পেলে অতি দ্রুত তারা রাস্তার কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন। মির্জাপুর উপজেলার গবড়া গ্রামের আতিক মিয়া জানান, গবড়া ও ডুবাইল গ্রাম দুটি উপজেলার সীমান্তবর্তী হওয়ায় সরকারি অনুদান কখনও এপর্যন্ত এসে পৌঁছায় না। স্থানীয় প্রতিনিধিদের কাছে সহযোগিতা না পেয়ে দুইগ্রামের যুব সমাজ ও মাতাব্বরা মিলে নিজেদের রাস্তার নির্মাণ কাজ শুরু করেছেন। দেলদুয়ার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা রওশন করিম জানান, চাল তুলে তা বিক্রি করে রাস্তা নির্মাণ করছে স্থানীয়রা এ বিষয়টি তার জানা নাই। কখনও রাস্তার বিষয়ে তার কাছে কেউ আসে নাই। রাস্তার বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে তিনি বলতে পারবেন।

মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবিএম আরিফুল ইসলাম জানান, তিনি অল্প দিন ধরে যোগদান করেছেন। তাই উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম সম্পর্কে তার জানা নেই। তবে গ্রামবাসীর পক্ষে যদি কেউ তাকে অবগত করেন তাহলে তিনি যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করবেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত