ঢাকা সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

খাবারের অভাবে লোকালয়ে বানর

খাবারের অভাবে লোকালয়ে বানর

হবিগঞ্জের মাধবপুর-চুনারুঘাট উপজেলার মধ্যবর্তী স্থান সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের বন্যপ্রাণীরা (বিশেষ করে বানর) খাবারের খোঁজে দলবেঁধে লোকালয়ে চলে আসছে। তবে এ কথা মানতে নারাজ বন বিভাগ। ‘খাদ্য সংকটের কারণে নয়, এমনিতেই বাইরে আসছে’ বলে মন্তব্য করছেন বন বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা। ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ২৪৩ হেক্টর বা ৬০০ একর জায়গা নিয়ে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানটিতে ২০০-এর বেশি প্রজাতির গাছপালা, ১৯৭ প্রজাতির জীবজন্তু, ২৪ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ১৮ প্রজাতির সরীসৃপ, ৬ প্রজাতির উভচর প্রাণী ও ১৫০ থেকে ২০০ জাতের পাখির বাস। গাছপালার মধ্যে শাল, সেগুন, আগর, গর্জন, চাপালিশ, পাম, মেহগনি, কৃষ্ণচূড়া, ডুমুর, জামরুল, সিধাজারুল, আওয়াল, বাঁশ ও বেতগাছ রয়েছে। বিচরণকারী প্রাণীর মধ্যে লজ্জাবতী বানর, উল্লুক, চশমাপরা বানর, শিয়াল, কুলোবানর, মেছো বাঘ ও মায়াহরিণ ও শূকর উল্লেখযোগ্য।

জানা যায়, গ্রীষ্মকাল শুরুতে গাছের পাতা ঝরে নতুন পাতা গজানো এবং বনে কোনো ধরনের ফলমূল না থাকায় এমন সংকটে পড়েছে প্রাণীকুল। সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে ঘুরতে আসা পর্যটক ও স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আগে বানর বা অন্য কোনো প্রাণীকে মানুষের এত কাছে আসতে দেখা যায়নি। বনের ভেতরে খাদ্য সংকট দেখা দেওয়ায় খাবারের জন্য হরিণের দল লোকালয়ের নিকটবর্তী লেবু বাগানে চলে আসছে দিনের বেলায়। তবে মানুষের শব্দ পেলেই আবার দ্রুত অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে। তবে ক্ষুধার্ত বানরগুলো ব্যতিক্রম। সাহস করে মানুষের খুব কাছে চলে আসছে তারা। এখানে ঘুরতে আসা অনেক পর্যটককে খাবার কিনে বানরগুলোকে দিতে দেখা যায়। তবে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) ড. জাহাঙ্গীর আলম প্রাণীদের খাদ্য সংকটে পড়ার কথা অস্বীকার করেছেন। ‘স্বাভাবিক কারণেই বানর জঙ্গলের বাইরে আসে’ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আজ পর্যন্ত রাস্তাঘাটে কোনো বানরকে কেউ মরে পড়ে থাকতে দেখেছে? এখানে বর্তমানে শূকর, মায়া হরিণ বেড়ে যাওয়ায় বানর ও অন্যান্য প্রাণীদের মাঝেমধ্যে বাইরে আসার প্রবণতা বেড়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে অবৈধভাবে প্রাণী শিকার এবং গাছ চুরি রোধকল্পে বন বিভাগ অধিকতর সতর্ক ও কঠোর হওয়ায় সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে বিভিন্ন ধরনের প্রাণী ও গাছের সংখ্যা আশাতিরিক্ত পরিমাণে বেড়েছে বলেও মনে করেন তিনি। তবে প্রাণী, গাছগাছালি ও পাখির সঠিক সংখ্যা জানা সম্ভব নয় বলে তিনি জানান।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত