ঢাকা সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

বগুড়ায় লেবু চাষে সাফল্য

বগুড়ায় লেবু চাষে সাফল্য

ভিটামিন ‘সি’-এর উৎকৃষ্ট উৎস লেবু। স্বাদে ও গুণে ভরপুর ফলটি যেমন মনোমুগ্ধকর, তেমনি পুষ্টিমানেও অতুলনীয়। লেবুচাষ করে সফল হয়েছেন বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার সুজাবাদ এলাকার মো: শাহিন ইসলাম। বসতবাড়ির পতিত জমিতে লেবুর বাগান করেছেন। তিনি প্রায় দুই বছর আগে লেবুর বাগান শুরু করেন। বাগানে এখন থোকায় থোকায় ঝুলছে সবুজ রঙের লেবু। তার এমন সাফল্য দেখে এলাকার অনেক মানুষ লেবু চাষে উৎসাহিত হয়েছেন। তিনি বলেন, উঁচু ও মাঝারি উঁচু প্রকৃতির দো-আঁশ মাটি লেবু চাষের জন্য উপযুক্ত। চারা রোপণের আগে জমিতে ২-৩টি চাষ ও মই দিয়ে আগাছামুক্ত ও সমতল করে জমি তৈরি করে ৩.৫ মিটার দূরে দূরে সারি করে প্রতি সারিতে ৩.০ মিটার পর পর চারা রোপন করতে হয়।

তাছাড়া নিয়মিত নিড়ানি দিয়ে চারার গোড়ার আগাছা পরিষ্কার করা হয় এবং মাটিতে রসের অভাব হলে লেবু গাছের গোড়ায় নিয়মিত পানি সেচ দিতে হবে। লেবুগাছ জলাবদ্ধতা সহ্য করতে পারে না। তাই বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিপাতের সময় গাছের যাতে পানি না জমে সেজন্য নালা করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। চারা রোপণের এক বছরের মধ্যেই ফল ধরা শুরু হয়। একই এলাকার আরেক লেবু চাষি বাবু মিয়া জানান, বছরজুড়ে চাহিদা থাকায় লাভবান হচ্ছেন তারা। এক বিঘার একটি লেবুর বাগান থেকে বছরে গড়ে প্রায় ১ লাখ লেবু পাওয়া যায়। লেবু চাষে খুব বেশি পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। নেই রোগবালাইয়ের ঝামেলা। বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ এসে লেবুর চারা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

শাজাহানপুর উপজেলা কৃষি অফিসার আমিনা খাতুন জানান, লেবু চাষের মৌসুম হচ্ছে বর্ষাকাল। এ সময় প্রচুর লেবু উৎপাদিত হয়। এই উপজেলার মানুষ লেবু চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। এখানকার মাটি লেবু চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। চায়না-থ্রি ও থাই লেবু উৎপাদনের পরিমাণ দেশি কাগজি লেবুর চেয়ে অনেক বেশি। লেবুসহ মাল্টা, আম ও অন্যান্য ফল চাষে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করতে পরামর্শ, প্রশিক্ষণ ও সহযেগিতা প্রদান করা হচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সোহেল মো: শামসুদ্দীন ফিরোজ বলেন, লেবু চাষে খরচ কম, লাভের পরিমাণ অনেক বেশি। চারা লাগানোর এক বছর পর থেকেই ফলন পাওয়া যায়। সঠিক পরিচর্যা করলে একবার চারা রোপণের পর একাধারে অন্তত ১০-১৫ বছর পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। দেহের প্রতিরোধে ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ এই লেবু অনেক উপকারী বলে বাজারে এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। পাইকাররা বাগানে এসে কিনেন লেবু। তাই বাজারজাত করার বাড়তি ঝামেলা নেই। আর উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ চাষিদের পাশে থেকে লেবুসহ বিভিন্ন ফল ও ফসল চাষে সার্বক্ষণিক পরামর্শ দিয়ে চলেছেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত