ঢাকা শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

কেক যেন রিতার রংতুলির ক্যানভাস

কেক যেন রিতার রংতুলির ক্যানভাস

শখের কাজটাকে কাজে লাগিয়ে এখন ঘরে বসে নিজের হাতের তৈরি কেক বিক্রি করে বাড়তি আয় করছেন আফনান রিতা। অনলাইন খাবার ব্যবসা সারা দেশেই এখন জনপ্রিয়। বাসায় বসে অর্ডার করলেই পৌঁছে দেওয়া হয় কাঙ্ক্ষিত খাবার। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ঘরে বসেই আয় করছেন এই নারী উদ্যোক্তা। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে উঠে আসা আফনান রিতার হাতে বানানো সুস্বাদু কেক খেয়ে সন্তুষ্ট ক্রেতারা।

২০২২ সাল। স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষে পড়ার সময় বিয়ে হয় রিতার। সংসার নিয়ে ব্যস্ততায় পড়াশোনা শেষ করা বা চাকরিতে ঢোকার সুযোগ হলো না। স্বামী প্রবাসে চলে যাওয়ায় অলস সময় পার করছিলেন রিতা। ২০২৪ সালে বড় বোনের পরামর্শে ঢাকার একটি ইনস্টিটিউটে কেক তৈরির কোর্স করেন তিনি। রিতা জানালেন, প্রথমে চোখের সামনে কোন দৃশ্য পরলে তা দেখে কেক এর মধ্যে ফুটিয়ে তোলার কৌশল আত্মস্থ করার চেষ্টা করেন। এরপর কেক শিল্পীদের কাছ থেকে হাতেকলমে শেখেন। তারপর ফেসবুকে ‘রিতা’স কেক হাউজ’ নামের পেজ খুলেন। বাড়তে থাকে পরিচিতি। এখন প্রতি সপ্তাহেই তার কাছে ৮ থেকে ১০টি কেকের ফরমায়েশ আসে। যে কোনো একটি নকশা দিলেই হবে হুবহু সেটি কেকে ফুটিয়ে তুলতে পারেন রিতা। গত দুই বছরে কয়েকশ’ কেক বানিয়েছেন। কোনো কেকে উঠে এসেছে ফুটবল মাঠের দৃশ্য। কোনোটিতে স্পাইডার ম্যান, হলুদের পেন্ডেল, প্রজাপতি, পান্ডা, বাচ্চাদের সু। আবার কোনোটিতে ফুটে উঠেছে গাড়ি, কার্টুন কিংবা মানুষের মুখ আর কতকি। রিতা তার ড্রয়িংরুম কে যেন একটি স্টুডিওতে পরিণত করেছে। সেই কক্ষে ছুরি-কাঁচি থেকে শুরু করে নানা আকারের যন্ত্রাংশের দেখা মেলে। আছে কেক তৈরির নানা উপকরণও। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে কালীবাড়ি এলাকায় রিতার বাসায় গিয়েও প্রায় একই ধরনের দৃশ্যের দেখা মেলে।

রিতা বললেন, শখের বসে কেকও বানাতে শুরু করি। এ থেকে আয় হবে সেটা কখনও ভাবিনি। আর এই কাজের পেছনে আমাকে সার্বক্ষণিক উৎসাহ দিচ্ছেন বড় বোন আর আর স্বামী। ধীরে ধীরে কেকের সুনাম ছড়িয়ে পড়ার পর ঈশ্বরগঞ্জসহ বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অর্ডার আসতে লাগল। বিভিন্ন প্রকারের কেক তৈরি করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য চকলেট, ভ্যানিলা, স্ট্রবেরি, লেমন, অরেঞ্জ, রসমালাই, রেড ভেলবেট, হোয়াইট, ফরেস্ট, ব্লাক ফরেস্ট, চকলেট ময়েস্ট, ম্যাঙ্গো ফ্লেভারের বিভিন্ন ডিজাইনের কেক বেশি তৈরি করেন।

রিতার কেকের ফরমায়েশের মধ্যে বেশির ভাগই বিভিন্ন অনুষ্ঠানকেন্দ্রিক। অনুষ্ঠানকেন্দ্রিক বেশ কিছু নকশা করে ক্রেতাদের দেখান। আবার ক্রেতা নিজেরাও নকশা দেন। একটা কেক বানাতে তিন থেকে ছয় ঘণ্টা সময় লাগে। কেকের প্রায় সব উপকরণই আসে ঢাকার গুলশান থেকে। আফনান রিতার স্বপ্ন একদিন ব্যবসার পরিসর আরও বাড়বে। দেবেন একটি বড় কারখানা। সবখানে ছড়িয়ে পড়বে তার কেকের সুনাম।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত