ঢাকা বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ইসরায়েল-ইরান দ্বন্দ্বে সমাধানের সন্ধান

মোতাহার হোসেন
ইসরায়েল-ইরান দ্বন্দ্বে সমাধানের সন্ধান

যুদ্ধ, সংঘাত, রক্তপাত, বৈরি সম্পর্ক কখনও কোনো জাতি, রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণ বয়ে আনে না। তবু রাষ্ট্র, জাতিগোষ্ঠী যুদ্ধে, সংঘাতে জড়ায়। এর নেপত্যে আদিপত্য বিস্তার, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য এবং কখনও প্রতিশোধ চরিতার্থ করার জন্য যুদ্ধে জড়ায়, আবার কখনও গায়ে পড়ে শক্তি দেখাতে যুদ্ধে জড়ায়। পরিণামে সম্পদ, মানুষ, শান্তি, স্থিতিশীলতা বিনষ্ট হয়। একই কারণে শুধু যুদ্ধকবলিত রাষ্ট্রই নয় পুরো বিশ্বকে শংকিত, উদ্বিগ্ন করে তোলে। বর্তমানে সরাসরি যুদ্বে লিপ্ত রয়েছে ইরান-ইসরায়েল। এর আগে ফিলিস্তিন-ইসরায়েলের মধ্যকার যুদ্ধ চলছিল। আবার ফিলিস্তিনিদের পক্ষ নিয়ে ইয়ামেনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হুতি প্রায়শই হামলা চালায় ইসরায়েলে। অন্যদিকে রাশিয়া-ইউক্রেনও ভয়াবহ যুদ্ধ লিপ্ত রয়েছে।

এদিকে, অভ্যন্তরীণভাবে নিজ দেশের একটি সম্প্রদায়ের উপর নির্বিচারে গুলি, অগ্নিসন্ত্রাস, হামলা চালিয়ে আসছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। সে কারণে প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী প্রাণ ভয়ে পালিয়ে বাংলাদেশে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। তা ছাড়া ল্যাটিন আমেরিকা এবং দক্ষিণ আফ্রিকার কয়েকটি দেশে অভ্যন্তরীণভাবে কয়েকটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জাতি গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাত ও রক্তক্ষয়ী সংঘাত অব্যাহত রয়েছে। ক’দিন আগে ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে লিপ্ত হয়েছিল। কিন্তু এবার ইরান-ইসরায়েলের মধ্য কার যুদ্ধসংঘাত যদি সহসা বন্ধের উদ্যোগ না নেওয়া হয়, তা বৈশ্বিক পরিমন্ডলে আরও কোন কোন রাষ্ট্র, এই যুদ্ধের পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে কেউ ইরান আবার কেউ যুদ্ধে ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে যুদ্ধে তা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে মোড় নেওয়া অসম্ভব নয়; এটি এখনই হলফ করে বলা যাচ্ছে না। তবে এখন পর্যন্ত চলমান যুদ্ধ বন্ধে বা স্থায়ী শান্তি স্থাপনের কার্যকর এবং দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ প্রত্যক্ষ হয়নি।

পরমাণু অস্ত্র তৈরির সন্দেহ থেকে ২০২৫ সালের ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক ও সামরিক কাঠামোর ওপর ব্যাপক বিমান হামলা চালায়। আগে থেকেই চোরাপথে পাঠানো ড্রোন ব্যবহার করে শীর্ষ জেনারেল ও বিজ্ঞানীদের হত্যা করে। ১৪ জুন ইসরায়েল ইরানের জ্বালানি খাতকে লক্ষ্য করে হামলা আরও বাড়ায়। এর পাল্টা জবাবে ইরান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চলতে থাকে। যা ধারাবাহিকভাবে এখন অব্দি অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে ইসরায়েল হামলা চালাচ্ছে, ক্ষেপণাস্ত্র ও যুদ্ধবিমান দিয়ে। পাল্টা হামলায় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ছে ইরান। এতে উভয় পক্ষে বাড়ছে প্রাণহানি, ক্ষয়ক্ষতি। বিধ্বস্ত হচ্ছে সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা। ইরান তেলআবিবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ভবনে হামলা চালিয়েছে।

ইসরায়েল আবারও ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাকে লক্ষ্যে পরিণত করেছে। এ অবস্থায় দুই দেশের রাজনীতিকরা ছুড়ছেন বাক্যবাণ। তারা সমঝোতা বা শান্তির বাণী না শুনিয়ে দীর্ঘস্থায়ী আরেকটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিচ্ছে। ইরান কিংবা ইসরায়েল কেউ কারও অবস্থান থেকে নড়ছে না একচুলও। আবার এরই মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক তেহরানকে খালি করার ঘোষণা, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত কয়েকটি দেশ ইরানের পক্ষ নেওয়া, ইরান কর্তৃক মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমূহে থাকা মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে হামলার ঘোষণায় প্রকারান্তরে পুরো বিশ্ব এই যুদ্ধে জড়াচ্ছে কি না, সেটাও দেখার বিষয়।

এমনি অবস্থায় ইরানের সামরিক-পারমাণবিক স্থাপনায় পাল্টা ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। পাঁচ দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় মুহুর্মুহু কেঁপে ওঠে ইসরায়েলের প্রধান শহর তেল আবিব। হাজার হাজার মানুষ ভূগর্ভে বাঙ্কারে আশ্রয় নেয়। ইরানের কয়েকটি প্রদেশে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলও। এর মধ্যে দেশটির বুশের প্রদেশে হামলায় জ্বালানি তেল পরিশোধনাগার ও একটি গ্যাসক্ষেত্রে বিস্ফোরণে আগুন ধরে যায়। পরে এ আগুন নেভাতে সক্ষম হয় ইরান। এ অবস্থায় পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে বলে শঙ্কা রয়েছে।

তেহরানের দাবি, তারা ইসরায়েলের তিনটি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানসহ ১০টি বিমান ভূপাতিত করেছে। পাশাপাশি দু’জন ইসরায়েলি পাইলটকে আটক করেছে। ইরানের সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে দাবি করে, সর্বশেষ গত শনিবার ভূপাতিত করা হয় একটি যুদ্ধবিমান। যুদ্ধবিমানের পাইলটদের মধ্যে একজন নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান এবারই প্রথম কোনো যুদ্ধে অংশ নিল। রাডার ফাঁকি দিতে পারা এসব বিমান ভূপাতিত করা প্রায় অসম্ভব বলেই বর্ণনা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের তথ্য, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ভবনে আঘাত হেনেছে।

প্রসঙ্গত, ইরান-ইসরায়েলের মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে আকাশপথ ব্যবহার করে ড্রোন হামলা পাল্টা হামলা অব্যাহত রেখেছে। একে অপরের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে প্রতিশোধ নিচ্ছে। এই প্রথম ইসরায়েলে সরাসরি হামলা চালিয়েছে ইরাক, তার পর থেকে উভয় দেশের মধ্যে সামরিক অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, এক সময় ইরান এবং ইসরায়েলের মধ্যে সুসম্পর্ক ছিল। অথচ এখন তারা একে অপরের মহাশত্রুতে পরিণত হয়ে ‘সম্মুখণ্ডসমর’ যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে। তাদের এই যুদ্ধ পুরো বিশ্বকে ভাবিয়ে তুলেছে, উদ্বিগ্ন করে তুলছে। অবশ্য এর আগেও ছায়া যুদ্ধে লিপ্ত ছিল তারা। দায় স্বীকার না করে একে অপরের সম্পদের ওপর হামলা চালাচ্ছে দুই দেশ। এই আক্রমণের তীব্রতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে। সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে হামলা চালানোর কথা স্বীকার না করলেও এই আক্রমণের পেছনে ইসরায়েল রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

বিশেষ করে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক, মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের মিত্র গোষ্ঠী এবং তাদের সঙ্গে ইসরায়েলের সমীকরণ, বিশ্বের অন্য শক্তিশালী রাষ্ট্রের সঙ্গে দুই দেশের সম্পর্ক প্রভৃতি। দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক কতটা শত্রুতাপূর্ণ হতে পারে, তার নজির ইসরায়েল ও ইরান। চার দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশ দুটির মধ্যে চলেছে সংঘাত। মধ্যপ্রাচ্যের আকাশ, আবার কখনো সাগরের নীল জলরাশি, আবার কখনো বা সাইবার জগৎ হয়ে উঠেছে এই সংঘাতের ক্ষেত্র। ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের গুপ্তহত্যা, গোপন অভিযান কিংবা সরাসরি হামলার ঘূর্ণিতে বারবার টালমাটাল হয়েছে গোটা মধ্যপ্রাচ্য। অবশ্য এই দুই দেশের মধ্যকার সংঘাত, চার দশকের শিথিল সম্পর্কেও পেছনেও রয়েছে বিশ্ব পরাশক্তিগুলোর প্রকাশ্যে অপ্রকাশ্যে ইন্ধন, অর্থ ও অস্ত্র ব্যবসার আত্মঘাতী খেলা। বিশেষ করে তাদের অস্ত্র, পাশে থাকার অঙ্গীকার কিংবা গোপনে সহায়তায় দুই দেশের মধ্যে বিরোধের চূড়ান্ত পরিণতিই হচ্ছে চলমান যুদ্ধ। সংঘাতের নতুন অধ্যায় শুরু হয় চলতি বছরের ১৩ জুন।

এদিন ইসরায়েল ভয়াবহ বিমান হামলা চালায় ইরানের রাজধানী তেহরানে। সেদিন ড্রোন ও যুদ্ধবিমান দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় গুরুত্বপূর্ণ সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনা। নিহত হন ইরানের শীর্ষ বিজ্ঞানী ও জেনারেলরা। পরদিন থেকে ইরানের জ্বালানি অবকাঠামোর ওপর হামলা শুরু করে ইসরায়েল। পাল্টা জবাবে ইরান ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ছুড়ে ইসরায়েল আক্রমণ চালাতে থাকে। হামলা-পাল্টা হামলায় দুই দেশের মধ্যে রীতিমতো যুদ্বের ধামামা বাজছে। এখন দুই দেশেই সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি আক্রান্ত হচ্ছে বেসামরিক এলাকার নাগরিক, সম্পদ, স্থাপনা, পারমাণবিক অস্ত্র ভান্ডার প্রভৃতি।

নেপথ্যে কারণ : উভয় দেশের মধ্যে এই যুদ্ধাবস্থা পরিস্থিতি হঠাৎ সৃষ্টি হয়নি। এর শিকড় অনেক গভীরে। ১৯৭৯ সালের আগে এই দুই দেশ ছিল মিত্র। ওই বছর ইরানে ইসলামী বিপ্লব ঘটে এবং একটি ধর্মীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম হয়, যা আদর্শগতভাবে ইসরায়েলের অস্তিত্বের বিরোধিতা করে। এরও আগে ১৯৬৭ সালে আমেরিকার অ্যাটমস ফর পিস কর্মসূচির অধীনে ইরান তেহরান রিসার্চ রিয়্যাক্টরের মালিকানা নেয়। ইসলামী বিপ্লবের পর তৎকালীন শাসক রেজা শাহ পাহলভি দেশ ছেড়ে পালান। বিপ্লবের পর ইরানের নতুন ইসলামী সরকার ইসরায়েলকে প্রধান শত্রু হিসেবে চিহ্নিত করে। একই সময় বিপ্লবীরা মার্কিন দূতাবাস দখল করে এবং ৪৪৪ দিনের জিম্মি সংকটের সূচনা হয়। তখন ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি আন্তর্জাতিক চাপের মুখে স্থবির হয়ে পড়ে। এরপর ১৯৮২ সালে ইসরায়েল লেবাননে আগ্রাসন চালালে ইরানের নতুন শাসকগোষ্ঠী লেবাননে শিয়াদের নিয়ে হিজবুল্লাহ গঠনে সহায়তা করে। অর্থ ও প্রশিক্ষণ দিয়ে তারা ওই সশস্ত্র গোষ্ঠীকে শক্তিশালী করে তোলে। এ ছাড়া ইরান গাজায় হামাস, ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহী এবং ইরাক ও সিরিয়ার আরো কিছু সশস্ত্র গোষ্ঠীকে অর্থায়ন করে থাকে যা।

প্রসঙ্গত, ২০০২ সালের আগস্টে পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থা ও ইরানিবিরোধী দলগুলোর তথ্য ফাঁসের মাধ্যমে নাতাঞ্জের গোপন পারমাণবিক সমৃদ্ধিকরণ কেন্দ্রের অস্তিত্ব প্রকাশ পায়। এরপর ২০০৩ সালে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসে এবং অক্টোবর মাসে ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম স্থগিত করে। ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে মাহমুদ আহমাদিনেজাদ প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ইরান আবার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করে এবং ইউরোপীয় দেশগুলো আলোচনায় থেকে সরে দাঁড়ায়। ২০০৯ সালের নির্বাচনে আহমাদিনেজাদ পুনরায় নির্বাচিত হন, যা ‘গ্রিন মুভমেন্ট’ আন্দোলনের জন্ম দেয়।

২০১৫ সালের ১৪ জুলাই, ইরান ও বিশ্বশক্তিগুলো একটি চুক্তিতে পৌঁছায়, যাতে ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ সীমিত করার বিনিময়ে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে। কিন্তু ২০১৮ সালে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু দাবি করেন, তারা প্রমাণ পেয়েছেন যে ইরান ২০১৫ সালের চুক্তির আগেও তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি গোপন রেখেছিল। এই বছরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একতরফাভাবে ওই চুক্তি থেকে সরে যান। এরপর ২০২০ সালে ইসরায়েল ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে আক্রমণ জোরদার করে। ২০২০ সালের জুলাইয়ে নাতাঞ্জের একটি সেন্ট্রিফিউজ উৎপাদন প্ল্যান্টে বিস্ফোরণ ঘটে, ইরান এ জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে। নভেম্বরে ইরানের শীর্ষ পারমাণবিক বিজ্ঞানী মোহসেন ফাখরিজাদেহকে তেহরানের বাইরে একটি গাড়িতে থাকা অবস্থায় রিমোট-কন্ট্রোল মেশিনগান দিয়ে হত্যা করা হয়।

মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, যখন ফিলিস্তিনের সশস্ত্র প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যা করে। ইরান হামাসকে সমর্থন জানায়। ২০২৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি ইসরায়েল ইরানের একটি প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইনে হামলা চালায়। পরে ১ এপ্রিল ইসরায়েল সিরিয়ার দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে বিমান হামলা চালিয়ে ১৬ জনকে হত্যা করে, যাদের মধ্যে দুই ইরানি জেনারেলও ছিলেন। এর প্রতিশোধে ১৪ এপ্রিল ইরান ইসরায়েলে ৩০০টির বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ছোড়ে, যদিও যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন জোটের সহায়তায় বেশিরভাগ রুখে দেয়া হয়। ১৯ এপ্রিল ইসরায়েল ইরানের ইস্পাহানের বিমানবন্দরের কাছে বিমান প্রতিরক্ষা স্থাপনাকে লক্ষ্য ফের করে হামলা চালায়।

৩১ জুলাই ইসরায়েলি বিমান হামলায় তেহরান সফররত হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়েহ নিহত হন। এরপর ২৭ সেপ্টেম্বর ইসরায়েল হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরাল্লাহকে হত্যা করে। ১ অক্টোবর ইরান ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দ্বিতীয়বারের মতো সরাসরি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যদিও সেগুলোর অধিকাংশই প্রতিহত করা হয়। একই বছরের ১৬ অক্টোবর ইসরায়েল গাজায় হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যা করে। চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল ইরান এক ব্যক্তিকে ফাঁসি দেয়, যাকে তারা ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের হয়ে কাজ করার এবং ২০২২ সালের ২২ মে বিপ্লবী গার্ড কর্নেল হাসান সাইয়াদ খোদায়িকে হত্যায় সম্পৃক্ত বলে দাবি করে। প্রত্যাশা থাকবে যুদ্বে লিপ্ত উভয় দেশকে তাদের নিজ নিজ দেশের মানুষ, সার্বভৌমত্ব, স্থিতিশীলতা, সম্পদ রক্ষার স্বার্থে সহসাই বিরত থাকবে যুদ্ধ থেকে। এতে তাদের উভয় দেশ লাভবান হবে পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যসহ পুরো বিশ্ববাসীর শান্তি, নিরাপত্তায় সহায়ক হবে।

সাংবাদিক, সাধারণ সম্পাদক-বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্নালিস্ট ফোরাম

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত