জয়ের আনন্দে ভাসছে ইরান। ইসরায়েলের দম্ভচূর্ণ করা এই যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। মঙ্গলবার তিনি বলেছেন, ‘আজ, আমাদের মহান জাতির বীরত্বপূর্ণ প্রতিরোধের পর, যাদের দৃঢ় সংকল্প ইতিহাস তৈরি করেছে; আমরা একটি যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা এবং ইসরায়েলের উস্কানিমূলক যুদ্ধের সমাপ্তিতে পৌঁছেছি।’ তিনি বলেন, ইরানের মানুষ আবারও দেখিয়েছে, সমস্যা ও ক্ষোভ থাকার পরও তারা শত্রুর আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ। যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর আনন্দ মিছিল করতে রাস্তায় নেমে আসেন রাজধানী তেহরানসহ অন্যান্য শহরের বাসিন্দারা। নারী-পুরুষ ও শিশুসহ লাখ লাখ ইরানি, এদিন রাজধানী তেহরানের কেন্দ্রস্থলের ইনকিলাব স্কয়ারে জড়ো হন। তারা ইসরায়েলি হামলার শক্ত জবাব দেওয়া ইরানি সেনাবাহিনীর প্রতি জোরালো সমর্থন জানান এবং দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
ইরানের ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রেজা আরেফ বলেছেন, এ ‘বিজয়’ প্রমাণ করে, ইরান এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের দম্ভ ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে এবং ইরানের শক্তি কতটা, তা তাদের দেখিয়ে দিয়েছে। দেশটির পার্লামেন্টের স্পিকার ও ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসি’র সাবেক কমান্ডার মোহাম্মদ বাকের কালিবাফের ঘনিষ্ঠ সহযোগী মাহদি মোহাম্মাদি যুদ্ধবিরতির ঘোষণাকে ‘বিশাল, ইতিহাস গড়া বিজয়’ বলে অভিহিত করেছেন। সামাজিকমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘এক নতুন যুগের সূচনা হয়েছে।’
ইরানের পরমাণু সক্ষমতা ধ্বংস হয়নি : যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বিমান হামলায় ইরানের পরমাণু সক্ষমতা ধ্বংস হয়নি, বরং তা কয়েক মাস পিছিয়ে গেছে মাত্র- এমনটাই বলছে পেন্টাগনের প্রাথমিক গোয়েন্দা মূল্যায়ন। এদিকে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি নড়বড়ে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা বা ডিআইএ এই মূল্যায়ন প্রতিবেদন তৈরি করেছে, যা পেন্টাগনের প্রধান গোয়েন্দা সংস্থা এবং যুক্তরাষ্ট্রের ১৮টি গোয়েন্দা সংস্থার একটি। প্রতিবেদনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্তত দুটি সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে, যারা পরিচয় গোপন রাখার শর্তে কথা বলেছেন। তাদের একজন জানান, ইরানের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুদ সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা যায়নি। দেশটির বেশিরভাগ পরমাণু স্থাপনাই মাটির গভীরে অবস্থিত, ফলে পুরো কর্মসূচিটি এক থেকে দুই মাসের জন্য সাময়িকভাবে ব্যাহত হয়েছে মাত্র। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইরান কয়েক মাসের মধ্যেই পুনরায় পরমাণু কর্মসূচি চালু করতে সক্ষম হবে। তিনটি পৃথক সূত্রের একজন জানান, ইরান এক বা দুই মাসের মধ্যেই কর্মসূচি চালু করতে পারে বলে ধারণা করা হয়েছে। ওয়াশিংটন পোস্ট-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামলার পরও বেশ কিছু সেন্ট্রিফিউজ এখনও অক্ষত অবস্থায় রয়েছে।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করেছে, তাদের হামলা ইরানের পরমাণু কর্মসূচিকে ‘ব্যাহত’ করেছে। যদিও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আগে বলেছিলেন, এই হামলায় ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলো ‘সম্পূর্ণ ধ্বংস’ করা হয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো বিশ্বস্ত সূত্রের বরাতে বারবার বলেছে, হামলার আগেই পারমাণবিক স্থাপনাগুলো থেকে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম সরিয়ে নেওয়া হয়। এদিকে, ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা সংক্রান্ত গোপন গোয়েন্দা প্রতিবেদন সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হওয়া নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘ভুয়া খবরে সিএনএন, ডুবন্ত নিউইয়র্ক টাইমসের সঙ্গে মিলে ইতিহাসের অন্যতম সফল সামরিক অভিযানের গুরুত্বকে খাটো করে দেখাতে চাইছে। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলো পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে! টাইমস আর সিএনএন- দুই প্রতিষ্ঠানকে নিয়েই সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ!’
ইরানের পরমাণু শিল্পের বিকাশ অব্যাহত থাকবে : ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থা বা এইওআই’র মুখপাত্র বেহরুজ কামালভান্দি মঙ্গলবার বলেছেন, ইরানের পরমাণু শিল্প বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তি অবকাঠামোতে গভীরভাবে প্রোথিত, আগ্রাসনের মাধ্যমে একে ধ্বংস করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, আগ্রাসনের পরও ইরানের পরমাণু কর্মসূচির সম্প্রসারণ অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, ‘শত্রুদের বুঝতে হবে, এই শিল্প আমাদের জাতির রক্ত ও চিন্তার সঙ্গে মিশে আছে। তারা কখনও এটি উপড়ে ফেলতে পারবে না। আমাদের সক্ষমতা ও সম্ভাবনার নিরিখে এই শিল্পের বিকাশ অব্যাহত থাকবে। এটি কখনও বন্ধ হবে না।’ আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা বা আইএইএ’র পূর্ণ তত্ত্বাবধানে পরিচালিত ফোরদো, নাতান্জ ও ইসফাহানের বিরুদ্ধে আগ্রাসন আন্তর্জাতিক আইনের পুরোপুরি লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেন তিনি। হামলার পর ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকচিও বলেছেন, বোমা হামলা করে ইরানের পরমাণু শক্তি কর্মসূচিকে কোনোভাবে নির্মূল করা সম্ভব নয়।
নিহত হননি ইসমাইল কানি, হাজির বিজয় উৎসবে : ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের (আইআরজিসি) কুদস ফোর্সের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইসমাইল কানি মঙ্গলবার তেহরানে ‘বিজয় উৎসব’-এ জনতার সঙ্গে অংশ নিয়েছেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম তাসনিম নিউজ এজেন্সি একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখা যায়, কানি রাজধানী তেহরানে উপস্থিত হয়েছেন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘ডিভাইন ভিক্টরি’ নামে পরিচিত সামরিক অভিযানের সাফল্য উদযাপন করতে। তাসনিমের পোস্টে বলা হয়েছে, ‘অপারেশন ডিভাইন ভিক্টরির পর তেহরানের জনগণের সমাবেশে অংশ নেন কমান্ডার কানি।’ সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত প্রেস টিভিও ভিডিওটি প্রকাশ করে জানিয়েছে, ‘আইআরজিসি কুদস ফোর্সের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইসমাইল কানি আজ তেহরানে বিজয় উদযাপনের সময় উচ্ছ্বসিত জনতার কাছ থেকে উষ্ণ অভ্যর্থনা পেয়েছেন।’ চলতি মাসের শুরুতে নিউইয়র্ক টাইমস একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, ইসরায়েলি হামলায় ইরানের কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তার সঙ্গে কানি নিহত হয়েছেন।
ধ্বংসাবশেষ সরাতে ব্যস্ত ইসরায়েলিরা, এখনও ভয় : ধ্বংস হওয়া ঘর-বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন ইসরায়েলিরা। ধ্বংসস্তূপে খুঁজে ফিরছেন টুকরো স্মৃতি, ছবি, বই কিংবা আস্ত সোফা। ধ্বংসাবশেষ সরাতে ব্যস্ত উদ্ধারকর্মীরা। তবে যুদ্ধ থামলেও সবার চোখে-মুখে ভয়ের রেখা স্পষ্ট; বাতাসে গুনগুন করছে একটা প্রশ্ন- আসলেই কি থেমেছে যুদ্ধ? ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্য শহরগুলোর মতো তছনছ হয়ে গেছে, তেলআবিবের শহর রামাতআবিব-ও। সেখানে দিনরাত ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ চলছে। তেল আবিবের একটি বিনোদন সংস্থার প্রধান অর্থ কর্মকর্তা লিয়াত বলছিলেন, ‘আমরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাই। আবার আনন্দ করতে চাই।’ একই এলাকার বাসিন্দা ইলানা বেন আরি বলছিলেন, ‘প্রথম মুহূর্তে তো বোঝাই যায়নি কী হয়েছে। বড় ধাক্কাটা পরে আসে। আমরা ভেবেছিলাম, আর কখনও আমাদের বাড়িতে ফিরতে পারব না।’ গত রোববার ইরানের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের ১০টি স্থানে আঘাত হানে। যার মধ্যে রামাতআবিব অন্যতম। এটিই ছিল এ পর্যন্ত ইরানের সবচেয়ে তীব্র হামলা। এতে অনেকে হতাহত হন। ইসরায়েলিদের সঙ্গে কথা বলে বোঝা গেছে, এই যুদ্ধবিরতি তাদের জীবন বাঁচিয়ে দিয়েছে। যুদ্ধকালীন অধিকাংশ সময় বাঙ্কারে লুকিয়ে থাকা ইসরায়েলিরা ভেবেছিলেন, এই যুদ্ধ হয়তো প্রলম্বিত হবে এবং স্বাভাবিক জীবনে ফেরা আর সম্ভব হবে না। তবু, অনেকে মনে করছেন না যে যুদ্ধ পুরোপুরি থেমে গেছে। তাদের ধারণা, আবার ফিরে আসবে যুদ্ধ। কারণ, ইরান তাদের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ঝালাই করে নিশ্চিত হয়েছে, ইসরায়েলের তথাকথিত সর্বাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যর্থ করে ইসরায়েলে আঘাত করা কঠিন কিছু নয়।
বিপদ রয়ে গেছে, বলল ইসরায়েলি বাহিনী : ইরানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি হলেও ‘বিপদ রয়ে গেছে’ বলে দেশবাসীকে সতর্ক করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফি ডিফ্রিন মঙ্গলবার টেলিভিশনে প্রচারিত এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘যে কোনো যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে শক্তিশালী প্রতিক্রিয়ার জন্য সেনাবাহিনীর প্রধান সবাইকে উচ্চস্তরের সতর্কতা এবং প্রস্তুতি বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি জোর দিয়ে বলতে চাই যে, এই পর্যায়ে, হোম ফ্রন্ট কমান্ডের নির্দেশাবলিতে কোনো পরিবর্তন হয়নি। নির্দেশনাবলি অবশ্যই মেনে চলতে হবে। কারণ, বিপদ রয়ে গেছে।’
ইরানে হামলা সমর্থন করেন না বেশির ভাগ মার্কিন : ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় ২২ জুন ভোরে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসের সিচুয়েশন কক্ষে বসে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে হামলা পর্যবেক্ষণ করেন। ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ট্রাম্পের হামলার মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নতুন মাত্রা পায়। হামলার জবাব দিতে পিছপা হয়নি ইরানও। এক দিনের মধ্যে উপসাগরীয় দেশ কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় তেহরান। ট্রাম্পের নির্দেশে ইরানে হঠাৎ যুক্তরাষ্ট্রের হামলা চালানোর ঘটনা সমর্থন করছেন না বেশির ভাগ মার্কিন নাগরিক।
সিএনএন-এসএসআরএসের এক জরিপে এই মনোভাব উঠে এসেছে। কাতারে মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের পাল্টা হামলার আগে জরিপটি করা হয়েছে। জরিপে প্রশ্ন ছিল, ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক পদক্ষেপ সমর্থন করেন কি না? জবাবে জরিপে অংশ নেওয়া ৫৬ শতাংশ মার্কিন বলেছেন, তারা এটা সমর্থন করতে পারছেন না। আর হামলার পক্ষে রয়েছেন ৪৪ শতাংশ মার্কিন। ট্রাম্পের দল রিপাবলিকানদের মধ্যে ৮২ শতাংশ সামরিক পদক্ষেপের পক্ষে। অন্যদিকে ডেমোক্রেটিক দলের ৮৮ শতাংশ বলেন, এ পদক্ষেপ সমর্থনযোগ্য নয়। জরিপে অংশ নেওয়া ৫৮ শতাংশ মার্কিন বলছেন, ট্রাম্পের সামরিক পদক্ষেপের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ইরান আরও বড় হুমকি হয়ে উঠবে। মাত্র ১৫ শতাংশ মনে করছেন, ইরান বড় হুমকি হবে না। ৮৫ শতাংশ ডেমোক্র্যাট মনে করছেন, ইরান আরও বড় হুমকি হয়ে উঠবে। রিপাবলিকানদের মধ্যে এ হার ৩০ শতাংশ।
কাতারের কাছে ইরানের দুঃখ প্রকাশ : কাতারের ভূখণ্ডে মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে গত সোমবারের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কারণে দেশটির আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির কাছে ‘দুঃখ প্রকাশ’ করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। আমিরের দপ্তর থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, মঙ্গলবার টেলিফোনে কথা বলেছেন দুই নেতা। এ সময় ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘হামলার লক্ষ্যবস্তু কাতার বা দেশটির জনগণ ছিল না। বরং কাতারে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের আল উদেইদ বিমানঘাঁটিতে হামলা চালানো হয়েছে। এটা কাতারের জন্য কোনো হুমকি নয়।’ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ফোনালাপে ইরানের প্রেসিডেন্ট জোর দিয়ে বলেছেন, একটি প্রতিবেশী ও মুসলিম দেশ হিসেবে কাতারের সঙ্গে ইরানের সম্পর্ক অক্ষুণ্ণ থাকবে। পেজেশকিয়ান আশা করেন, দুই দেশের সম্পর্ক সর্বদা সার্বভৌমত্ব আর সুপ্রতিবেশীসুলভ আচরণের নীতির ওপর ভিত্তি করে বজায় থাকবে।
তিন ইসরায়েলি গুপ্তচরের ফাঁসি কার্যকর, গ্রেপ্তার ৭০০ : ইসরায়েলের পক্ষে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে তিন ব্যক্তির ফাঁসি কার্যকর করেছে ইরান। বুধবার ইরানের বিচার বিভাগ এ তথ্য জানিয়েছে। ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার এক দিনের মাথায় এ ঘটনা ঘটল। ইরানের বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইদ্রিস আলী, আজাদ শোজাই ও রাসুল আহমদ রাসুল নামের তিন ব্যক্তি হত্যাকাণ্ড চালানোর উদ্দেশ্যে দেশটির ভেতরে সরঞ্জাম ঢোকানোর চেষ্টা চালিয়েছিলেন। জায়নবাদী শাসককে সহযোগিতা করার অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার করে বিচার করা হয়। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বুধবার সকালে রায় কার্যকর করা হয়েছে এবং তাদের ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে। এদিকে, ইসরায়েলের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করার সন্দেহে ইরানের খুজেস্তান প্রদেশে গতকাল বুধবার ২৩ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়েছে। ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা তাসনিম এমন তথ্য প্রকাশ করেছে। গতকাল বুধবার আলজাজিরা জানিয়েছে, ইসরায়েলের ‘গুপ্তচর’ নেটওয়ার্কের সঙ্গে সম্পৃক্ততার সন্দেহে ৭০০ জনের বেশি মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে ইরানের গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা বাহিনী। ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিন ধরে চলা সংঘাতের মাঝেই সন্দেহভাজন এসব গুপ্তচরকে গ্রেপ্তার করা হয়।