
বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ সঙ্গীদের গত বৃহস্পতিবার রাতে স্থগিত থাকা বৈঠক গতকাল শনিবার সমাপ্ত হয়েছে দুটি সিদ্ধান্ত গ্রহণের মধ্য দিয়ে। একটি হচ্ছে, আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আসন বণ্টনের আলোচনা হবে এককভাবে। বিএনপির সঙ্গে প্রত্যেকটি পক্ষ আলাদাভাবে আলোচনা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। পরে এটি সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, একক পক্ষ হিসেবে আলোচনা করতে আগামী ১৭ ও ১৮ ডিসেম্বর দিন ধার্য করা হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুর ১২টার দিকে গুলশানের চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন- মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, আমির মাহমুদ খসরু চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। শরিক দলের নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- ১২ দলীয় জোটের প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দার চৌধুরী, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণঅধিকার পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারুক হাসান ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, গণতন্ত্র মঞ্চের শরিক দল ভাসানী জনশক্তি পার্টির চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, সমমনা জোটের প্রধান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, জাতীয় পার্টি (কাজি জাফর) মহাসচিব আহসান হাবীব লিংকন। নাগরিক ঐক্যের মহাসচিব শহিদুল্লাহ কায়সার, জাসদের তানিয়া রব এবং দলটির মহাসচিব ও জাগপার লুৎফুর রহমান, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির নির্বাহী সভাপতি মাওলানা একেএম আশরাফুল হক প্রমুখ।
গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, সমমনা জোট, গণঅধিকার পরিষদ, গণফোরামের পক্ষে সাইফুল হক সমন্বয় করেন। আসনের আলোচনার শুরুতে সাইফুল হক বেশ কয়েকটি পয়েন্টে কথা বলেন। রাজনৈতিক বোঝাপড়ার ঐক্য ধরে রাখার পক্ষে তিনি মত দেন। দ্বিতীয়, দ্রুত দল ও জোটগুলোর সঙ্গে নির্বাচনী বোঝাপড়ার বিষয়টি সমঝোতা করা। পরে গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম নেতা জোনায়েদ সাকি এই বিষয়গুলোকে একক পক্ষ হিসেবে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করার প্রস্তাব করলে নজরুল ইসলাম খানসহ উপস্থিত সিনিয়র নেতারা তা গ্রহণ করেন।
বৈঠক থেকে বেরিয়ে বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির নির্বাহী সভাপতি মাওলানা একেএম আশরাফুল হক জানান, শরিকদের সঙ্গে গতকাল বিএনপির বৈঠকে আসন বণ্টন বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে। এ সময় সবাই যার যার কথা বলেছেন। আগামী নতুন বাংলাদেশ গড়তে ভালো কিছুর আশা করছি বলে তিনি জানান। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ সময় এক সঙ্গে যাদের নিয়ে আন্দোলন করেছে তাদের নিয়ে আগামীর নতুন বাংলাদেশ গড়ার এবং পথ চলার কথা বলেন। শরিক দলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জায়গায় নির্বাচনী প্রচারণা স্থানীয় বিএনপির পক্ষ থেকে বিভিন্ন সমস্যার ব্যাপারে বিএনপি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলেও বিএনপি মহাসচিব আশ্বস্ত করেন। আশরাফুল হক জানান, সব দলের সঙ্গে আসন বণ্টন সন্তোষজনক করতে শরিক গণতন্ত্র মঞ্চ, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, ১২ দলীয় জোট, সমমনা জোটের সঙ্গে আগামী ১৭-১৮ ডিসেম্বরে পৃথক পৃথক-ভাবে বসে সমাধান করা হবে।
জানতে চাইলে সাইফুল হক বলেন, ‘আমরা আশা করি চলমান পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের সুযোগ হবে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আসন সমঝোতা নিয়ে যে সংকট আছে, তা ১৮ ডিসেম্বরের মধ্যে দল ও জোটগুলোর সঙ্গে আলাদাভাবে বসে বিএনপি সিদ্ধান্ত নেবে।’