ঢাকা মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

থাই প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্নের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ

থাই প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্নের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ

একটি কূটনৈতিক ফোনালাপ ফাঁসের জেরে জনমনে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার পর গতকাল শনিবার থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে সরকারবিরোধী হাজারো বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমে প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রার পদত্যাগ দাবি করেছে। ব্যাংকক থেকে এএফপি জানায়, কম্বোডিয়ার এক জ্যেষ্ঠ রাজনীতিক কম্বোডিয়ার সঙ্গে সীমান্ত বিরোধ নিরসন সংক্রান্ত একটি ফোনালাপ ফাঁস করেন। সেখানে পেতংতার্ন তাকে ‘আংকেল’ বলে সম্বোধন করেন এবং থাই সেনাবাহিনীর একজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে নিজের ‘বিরোধী’ হিসেবে উল্লেখ করেন।

ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার পর পেতংতার্নের নেতৃত্বাধীন জোট থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ দল বেরিয়ে যায়। ৩৮ বছর বয়সী এই রাজনীতিকের বিরুদ্ধে কম্বোডিয়ার প্রতি নতজানু আচরণ এবং থাইল্যান্ডের সেনাবাহিনীর মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করার অভিযোগ তোলে দলটি। এতে করে তার পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে।

গতকাল শনিবার প্রায় ১০ হাজার বিক্ষোভকারী ব্যাংককের ‘ভিক্টোরি মনুমেন্ট’ ঘিরে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। এ সময় অনেকের হাতে থাই পতাকা ও ‘অশুভ প্রধানমন্ত্রী, বিদায় হও’ লেখা প্ল্যাকার্ড ছিল।

একজন বক্তা মঞ্চে উঠে চিৎকার করে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী, আপনি রাষ্ট্রদ্রোহ করেছেন!’ বিক্ষোভে মূলত প্রবীণ নাগরিকরাই বেশি অংশ নেন। তাদের অনেকেই ‘ইয়েলো শার্ট’ আন্দোলনের পুরোনো কর্মী, যারা ২০০০-এর দশকে পেতংতার্নের বাবা থাকসিন সিনাওয়াত্রাকে ক্ষমতা থেকে হটাতে সহায়তা করেছিলেন। থাকসিনের এক সময়কার ঘনিষ্ঠ সহচর বর্তমানে কড়া সমালোচকে পরিণত হয়েছেন, তিনিও বিক্ষোভের অন্যতম সংগঠক। উত্তর থাইল্যান্ড থেকে বাসে করে এসে ৭০ বছর বয়সী বিক্ষোভকারী সেরি সাওয়াংমুয়ে বলেন, ‘আমি এসেছি থাইল্যান্ডের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এবং একথা বলতে যে, প্রধানমন্ত্রী যোগ্য নন।’

তিনি বলেন, ফাঁস হওয়া ফোনালাপ শোনার পরই বুঝে গেছি, আমি আর তাকে বিশ্বাস করতে পারি না। আমি বহু রাজনৈতিক সংকট দেখেছি, আমি জানি শেষ পর্যন্ত এসব কোথায় গিয়ে ঠেকে। তিনি দেশের সার্বভৌমত্ব বিসর্জন দিতেও প্রস্তুত।’ থাইল্যান্ডে বহু বছর ধরেই ‘ইয়েলো শার্ট’ (রাজতন্ত্র ও সেনাবাহিনীপন্থী) এবং ‘রেড শার্ট’ (থাকসিনপন্থী) গোষ্ঠীর মধ্যে তীব্র রাজনৈতিক বিভাজন বিরাজ করছে।

৬৪ বছর বয়সি জামনং কালানা বলেন, এক সময় তিনি ‘রেড শার্ট’ আন্দোলনের সমর্থক ছিলেন, কিন্তু এখন অবস্থান বদলে পেতংতার্নের পদত্যাগের দাবি করছেন। তিনি বলেন, যখন দেখি কোনো থাই নাগরিক আমার মতো করে দেশকে ভালোবাসে না, তখন খুব কষ্ট পাই।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত