
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ছিল জুলুম, নির্যাতন ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে বাঙালি জাতির এক অনিবার্য সশস্ত্র প্রতিবাদ। স্বাধীনতা অর্জন শুধু ভূখণ্ডের মুক্তি নয়, বরং ন্যায়বিচার, মানবিক মর্যাদা ও নৈতিক রাষ্ট্র গঠনের অঙ্গীকার।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার উত্তর ঝাপুয়ায় আল-ঈমান আদর্শ মহিলা আলিম মাদ্রাসার দুই দশক পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এবং ‘আল-ঈমান স্মারক-২’-এর মোড়ক উন্মোচনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, মহান বিজয়ের ৫৪ বছর অতিক্রম করে আমরা ৫৫ বছরে পা দিয়েছি। এই দীর্ঘ সময়ে আমাদের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির মধ্যে এখনও বড় ধরনের ব্যবধান রয়ে গেছে। আমরা অনেক অর্জন করেছি, কিন্তু প্রত্যাশিত নৈতিক ও মানবিক উন্নয়ন ঘটাতে পারিনি। তিনি বলেন, একটি স্বাধীন দেশের মূল শক্তি হচ্ছে চরিত্রবান নাগরিক। অথচ চুরি, লুটতরাজ, দুর্নীতি, নারী নির্যাতনসহ নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ড আমাদের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করছে।
ড. খালিদ হোসেন দেশবাসীকে এসব দেশবিরোধী কর্মকাণ্ড পরিহার করে নৈতিকতা ও দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হওয়ার আহ্বান জানান। একই সঙ্গে বাংলাদেশকে একটি আদর্শ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে সবাইকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসার অনুরোধ করেন তিনি।
উন্নয়ন প্রসঙ্গে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, আমাদের সমসাময়িক কিংবা কিছু পরে স্বাধীন হওয়া অনেক দেশ আজ উন্নয়নের সূচকে অনেক এগিয়ে গেছে। তাদের জিডিপি, মাথাপিছু আয় ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ঈর্ষণীয় অবস্থানে পৌঁছেছে। অথচ আমাদের দেশে এক শ্রেণির মানুষ রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুট করে বিদেশে বাড়ি-গাড়ি বানাচ্ছে। এ ধরনের ব্যক্তিরা প্রকৃত অর্থেই দেশের শত্রু বলে মন্তব্য করেন তিনি।
নারী শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে ড. খালিদ হোসেন বলেন, নারীরা যুগে যুগে সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছেন। রাষ্ট্র পরিচালনা থেকে শুরু করে যুদ্ধের ময়দান—সবখানেই নারীদের অবদান রয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধেও নারীরা সাহসিকতা ও আত্মত্যাগের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তিনি নারী শিক্ষার বিস্তারে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শরীয়াহ অনুষদের ডীন ও আল-ঈমান আদর্শ মহিলা আলিম মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ড. মুহাম্মদ রশীদ জাহেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রামের জামিয়া দারুল মা’আরিফ আল ইসলামিয়ার প্রধান পরিচালক আল্লামা মুহাম্মদ ফুরকানুল্লাহ খলীল।