ঢাকা রোববার, ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

মিশ্র ফসল চাষে আশার আলো

মিশ্র ফসল চাষে আশার আলো

যশোরের কেশবপুর উপজেলার কৃষকরা জমিতে মিশ্র ফসলের দেখছেন চাষে আশার আলো। মূলত এই চাষ পদ্ধতিকে বলা হয় সাথী ফসল চাষ। একখণ্ড জমিতে একইসঙ্গে কোনো প্রধান ফসলের পাশাপাশি স্বল্প সময়ের জন্য অতিরিক্ত হিসেবে দুই বা ততোধিক ফসল চাষের পদ্ধতিকে মিশ্র ফসল চাষ বলা হয় এবং অতিরিক্ত ফসলটিকে বলা হয় সাথী ফসল। মিশ্র ফসল চাষের প্রধান উদ্দেশ্য হলো একই সাথে একই জমিতে একাধিক ফসল আবাদ করে অধিক মুনাফা অর্জন করা। কেশবপুর উপজেলায় মিশ্র ফসল হিসেবে একই সাথে একাধিক ফসল চাষ লাভজনক হওয়ায়, স্থানীয় কৃষকদের মাঝে তা দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়ায় গ্রামীণ কৃষকদের মাঝে পরিবর্তন এসেছে। কৃষি বিভাগ কর্তৃক উদ্ভাবিত ফসল ফলনে নতুন নতুন পদ্ধতি গ্রহণ করছেন কৃষক। প্রযুক্তিগত কারণে এখন কৃষকরা একসাথে একাধিক সবজি চাষ করছেন। একই জমিতে একাধিক সবজি উৎপাদিত হওয়ায় কৃষকের মুখে

প্রশান্তির হাসি ফুটছে। ফলে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। কেশবপুর উপজেলার কৃষক আবদুল কুদ্দুস বলেন, এ বছর একই জমিতে চাষ করেছি মিশ্র জাতের ফসল। তিনি একই জমিতে বেগুন, মরিচ, শলুক, তিল চাষ করেছেন। কেউ আবার কোথাও সয়াবিন, আখ, ধনেপাতা, কালোজিরার চাষ করেছেন। কেউ কেউ আবার ক্ষেতের আইলে পেঁপে, লাউ, সরিষাও চাষ করেছেন। প্রতিদিনই জমি থেকে কোনো না কোনো ফসল তুলে বিক্রি করছেন চাষিরা।

উপজেলার উদ্যোক্তা রহমান ও রেজাউল কৃষিতে রীতিমতো বিপ্লব ঘটিয়েছেন। একই জমিতে তারা আবাদ করছেন এক ডজন ফসল। উদ্যোক্তারা জানালেন, এতে খরচ কম হওয়ায় ভারী হচ্ছে লাভের পাল্লা। উপজেলার আরেক কৃষক হাসান বলেন, এবার এ এক বিঘা জমিতে সাথী ফসল করেছেন তিনি। আশ্বিন মাসে বেগুনের জমিতে মুলা, শলুক, ধনে পাতা, পালংশাক চাষ করেন। এ পর্যন্ত এখান থেকে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকার বেগুন বিক্রি করেছেন। তিনি বলেন, প্রথমে বেগুনের চারা ৯ হাজার টাকায় বিক্রি করি। শিম ১৩ হাজার, ধনে পাতা পাঁচ হাজার, মুলা শাক ছয় হাজার, পালং শাক সাত হাজার বিক্রি করি। এখন তিন দিন পর পর বেগুন তুলছি। আরো দেড় মাস বেগুন বিক্রি করবেন বলে জানান কৃষক হাসান। কেশবপুর দুই মৌসুমে ৮ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ হয় ২৫ থেকে ৩০ ধরনের সবজি, এর মধ্যে দুই হাজারেরও বেশি হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে মিশ্র জাতের ফসল। কেশবপুর কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, দিন দিন বাংলাদেশের জনসংখ্যা বাড়ছে। আবাদি জমিতে ঘরবাড়ি হচ্ছে। জমির পরিমাণও কমে যাচ্ছে। তাই কৃষকদের সাথী ফসল এবং রিলে ফসল চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সাথী ফসলে বেশি লাভবান হওয়া যায়। কলার বাগানে আদা, বেগুনের জমিতে পালংশাক, ধনেপাতা চাষ করা যায়। আবার ধান কাটার আগে জমিতে সরিষা বপন করা যায়। এতে তুলনামূলক খরচও কম হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত