ঢাকা শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সুসংবাদ প্রতিদিন

প্রাকৃতিক উপায়ে গরু মোটাতাজা করেন ভোলার খামারিরা

প্রাকৃতিক উপায়ে গরু মোটাতাজা করেন ভোলার খামারিরা

কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে ভোলার খামারিরা গরু মোটাতাজাকরণ ও পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে, দেশীয় খাবার খাইয়ে প্রস্তুত করা হচ্ছে কোরবানিযোগ্য গরু। যদিও পশু খাদ্যের দাম বেড়েছে, তবুও ভালো লাভের আশা করছেন খামারিরা। পাশাপাশি, ভারতীয় গরুর আমদানিকে কেন্দ্র করে রয়েছে তাদের বাড়তি উদ্বেগ। খামারিরা মনে করছেন, ভারতীয় গরুর আমদানি বন্ধ হলে দেশীয় গরুর চাহিদা ও দাম উভয়ই বাড়বে, যা তাদের জন্য লাভজনক হবে।

এদিকে কেমিক্যাল ব্যবহার করে গরু মোটাতাজাকরণ যেন না হয়, তা নিশ্চিত করতে প্রাণিসম্পদ দপ্তর নিয়মিত মনিটরিং করছে। ভোলা জেলার পশ্চিম ইলিশা, বাপ্তা ও রাজাপুর, লালমোহনসহ বিভিন্ন এলাকার খামারে দেখা গেছে, কোরবানির বাজারকে ঘিরে খামারিরা গরুর পরিচর্যা ও প্রাকৃতিক খাদ্য’ যেমন খৈল, কুটা, ঘাস ও দানাদার খাদ্য দিয়ে গরু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রতিবারের মতো এবারও স্থানীয় বাজার ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলায় গরু বিক্রির আশায় খামারিরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

ভোলা সদরের খামারি মনিরুল ইসলাম বলেন, দেশীয় খাবার দিয়েই গরু মোটাতাজা করছি। যদিও এবার পশু খাদ্যের দাম বেশি, তবুও আশা করছি ভালো দাম পাব।

পশুর পরিচর্যায় খরচ ও শ্রমিকদের মজুরি বেড়েছে। তবে ভারতীয় গরু আমদানি বন্ধ না হলে তারা ন্যায্য দাম পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় আছেন।

লালমোহনের খামারি বাহালুল কবীর খান বলেন, ২০১৩ সালে কয়েকটি গরু নিয়ে প্রথম গরুর খামার দিই। এর কয়েক বছরের মাথায় কোরবানিতে বিক্রির জন্য বিভিন্ন জাতের গরু প্রস্তুত করতে শুরু করি। এ বছরের কোরবানিতে বিক্রি করতে খামারের আটটি গরু প্রস্তুত করেছি। এসব গরুর সর্বনিম্ন মূল্য দেড় ১ লাখ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা পর্যন্ত। পুরোপুরি প্রাকৃতিকভাবে খামারের গরুগুলোকে কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এসব গরুকে খাবার হিসেবে খড়-ভুসি এবং দানাদার খাবার খাওয়ানো হচ্ছে। তিনি আরও জানান, এই গরুর খামারটিতে নিয়মিত একজন শ্রমিক কাজ করেন। তার বেতন, গরুর মূল্য, খাবার ও বিদ্যুৎ বিল বাবৎ আটটি গরু প্রস্তুত করতে খরচ প্রায় ১০ লাখ টাকার মতো। তবে আশা করছি এ বছর বাজারে গরুর ন্যায্য দাম পাব। এতে এ বছর আটটি গরু বর্তমান বাজার মূল্যে ১৫ থেকে ১৬ লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারব ইনশাআল্লাহ। এতে বিক্রি শেষে সব খরচ বাদে অন্তত ৫ থেকে ৬ লাখ টাকার মতো লাভ হবে।

বাহালুল কবীর খানের খামারের শ্রমিক আব্দুল কাদের বলেন, দুই বছর ধরে এই খামারে আমি নিয়মিত কাজ করছি। মাসের পর মাস গরুগুলোকে অত্যন্ত যত্ন নিয়ে পালন করছি। ঘাস-খড়-ভুসি এবং দানাদার খাদ্য খাইয়ে গরুগুলোকে এ বছরের কোরবানিতে বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এই খামারে কাজ করে মোটামুটি ভালো পরিমাণের বেতন পাই। এই বেতন দিয়ে স্ত্রী-সন্তানসহ আল্লাহর রহমতে ভালোভাবেই সংসার চালাতে পারছি।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম খান বলেন, গরুর হাট ও খামারে আমাদের মনিটরিং টিম কাজ করছে। এবারের ঈদেও প্রতিটি পশুর হাটে ভেটেনারি টিম বসানো হবে, যাতে কেউ কেমিক্যাল ব্যবহার বা রোগাক্রান্ত গরু বিক্রি করতে না পারেন।

তিনি বলেন, এ বছর জেলায় কোরবানিযোগ্য গরু প্রস্তুত রয়েছে ১ লাখ ২ হাজার ৭৬৯টি, যেখানে চাহিদা রয়েছে ৯০ হাজার ২৫৩টি গরুর। সরাসরি হাটের পাশাপাশি অনলাইনেও গরু ও ছাগল বিক্রির জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত