
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকার আংশিকভাবে বন্ধ হয়ে গেছে যাওয়ায় কংগ্রেসে অস্থায়ী বাজেট নিয়ে কোনো সমঝোতা হয়নি। শাটডাউনের প্রভাবে মার্কিন ডলারের দাম গত বুধবার ০.২৭ শতাংশের বেশি কমে ৯৭.১৯ এ দাঁড়িয়েছে। যা ২০২৫ সালে প্রায় ১০ শতাংশের পতন এবং ২২ বছরে সর্বোচ্চ বার্ষিক দরপতনের পথে। খবর আনাদোলু এজেন্সি। ডলারের মান নির্ধারণ করা হয় ইউরো, জাপানি ইয়েনসহ ছয়টি প্রধান মুদ্রার সঙ্গে তুলনা করে। বিশ্লেষকদের মতে, শাটডাউনের কারণে মার্কিন সরকারি সংস্থাগুলো গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক তথ্য প্রকাশে বিলম্ব করবে। শ্রম পরিসংখ্যান ব্যুরো জানিয়েছে, শাটডাউনের সময় কৃষি বহির্ভূত চাকরি, বেকার ভাতা আবেদন ও মুদ্রাস্ফীতি সম্পর্কিত তথ্য প্রকাশ করা সম্ভব হবে না।
শাটডাউন সরাসরি অর্থনৈতিক সংকট তৈরি না করলেও এটি দৈনন্দিন জীবনে বড় ধরনের বিঘ্ন সৃষ্টি করে। বহু সরকারি কর্মচারী বিনা বেতনে কাজ করতে বাধ্য হবেন বা নতুন বাজেট পাস না হওয়া পর্যন্ত বাধ্যতামূলক ছুটিতে থাকতে হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, মার্কিন ডলারের বাজারে এই পতন আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে রপ্তানি ও আমদানির ক্ষেত্রে। মার্কিন ডলার চলতি বছর ভয়াবহ এক আর্থিক সংকটের মুখে পড়েছে। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক অস্থিরতা, যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক টানাপোড়েন, সরকারি শাটডাউনের শঙ্কা এবং বাণিজ্যিক অংশীদারদের সঙ্গে উত্তেজনার কারণে বিনিয়োগকারীরা ডলার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। এতে করে ডলারের মান দ্রুতগতিতে নিচের দিকে নামছে। মার্কিন অর্থনীতি নিয়ে অনিশ্চয়তা বেড়ে যাওয়ায় ইউরো, ইয়েন এবং চীনা ইউয়ানসহ অন্যান্য প্রধান মুদ্রার বিপরীতে ডলারের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে।
বাজার বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই পতন আগামী কয়েক মাসে আরও গভীর হতে পারে যদি যুক্তরাষ্ট্র কাঙ্ক্ষিত অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়। বিশ্ববাজারে ডলারের এই ধস উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য মিশ্র প্রভাব ফেলতে পারে। যেমন- বাংলাদেশসহ আমদানি নির্ভর দেশগুলো কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে সাময়িক সুবিধা পেলেও, বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে চাপ বাড়তে পারে।