মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে কোরবানি করতে হবে। আল্লাহতায়া বলেন, ‘আল্লহর কাছে (কোরবানির পশুর) মাংস, রক্ত পৌঁছে না; বরং আল্লাহর কাছে তোমাদের তাকওয়াত (তথা একনিষ্ঠভাবে সম্পন্ন আমল) পৌঁছে।’ (সুরা হজ : ৩৭)
কোরবানির পশুর সবকিছু নিজে খাওয়া যায় ও ব্যবহার করা যায়। গোশত সম্পূর্ণ খাওয়া যায়, ভুঁড়ি পরিষ্কার করে খাওয়া যায় এবং চামড়া প্রস্তুত করে নিজেই ব্যবহার করা যায়। কোরবানির পশুর কোনো অংশ বিক্রি করলে তা গরিবদের হক হয়ে যায়। গোশত, চামড়া, হাড় যাই বিক্রি করা হোক না কেন। এ জন্য আমাদের দেশে চামড়া বিক্রি করে গরিবদের দান করতে দেখা যায়।
কোরবানির গোশতের এক-তৃতীয়াংশ গরিব-মিসকিনকে এবং এক-তৃতীয়াংশ আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীকে দেওয়া উত্তম। পুরোটা যদি নিজে রেখে দেয় বা অন্যদের দিয়ে দেয় এতে কোনো অসুবিধা নেই। (বাদায়েউস সানায়ে : ৪/২২৪)।
আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে কোরবানি করা পশুর গোশত ভাগ করার একটি সুনির্দিষ্ট নিয়ম রয়েছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) পশুর গোশত ভাগ করার নিয়মও বলে দিয়েছেন। কোরবানির মাংস বিতরণের মুস্তাহাব ও উত্তম পদ্ধতি হলো সমস্ত মাংস তিন অংশে ভাগ করা। একাংশ নিজের ও পরিবারের জন্য রাখা, আরেক অংশ স্বজনদের উপহার দেওয়া ও আরেক অংশ এতিম, অসহায় ও দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করা। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) রাসুল (সা.)-এর কোরবানির গোশত বণ্টন সম্পর্কে বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) কোরবানির মাংস তিন ভাগ করে একভাগ নিজ পরিবারের জন্য রাখতেন, এক ভাগ গরিব প্রতিবেশীকে দিতেন আর এক ভাগ অন্য গরিবদের দান করতেন (আল ওজায়েফ, আবু মুসা আলআসবাহানি, মুগনি ইবনে কুদামা : ১৩/৩৭৯-৩৮০)
অধিকাংশ ইসলামিক স্কলারদের মতে, কোরবানির পশুর গোশতকে এ তিন ভাগে ভাগ করা মোস্তাহাব এবং উত্তম বলেছেন। যদি কেউ তিন ভাগ করার ক্ষেত্রে কমবেশি করে তাতে কোনো সমস্যা নেই। কোরবানি হবে না বা কোরবানি নষ্ট হয়ে গেছে, এমনটি ভাবার কিংবা চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। কেননা, একেবারে পাল্লায় মেপে তিন ভাগে ভাগ করা আবশ্যক কোনো বিষয় নয়। কোরবানির এ গোশত ভাগ না করে এমনিতেই প্রতিবেশী-আত্মীয়, গরিব-অসহায়কে দেওয়া যাবে। এ জন্য ভাগ করতেই হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।