ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫, ১৩ চৈত্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নাঈমের ডাবল সেঞ্চুরি মিস

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে প্রাইম ব্যাংকের ইতিহাস

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে প্রাইম ব্যাংকের ইতিহাস

লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে দেশে কখনো যা হয়নি, সেটাই করে দেখালো প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। প্রথমবার ৪০০ ছাড়ানোর নজির গড়ল তারা। গতকাল রোববার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ব্রাদার্স ইউনিয়নের বিপক্ষে ৫০ ওভারে ৮ উইকেটে ৪২২ রান করেছে প্রাইম। ৫০ ওভারের ক্রিকেটে দেশের ক্রিকেট প্রথমবার দেখল এমন ঘটনা। দেশের কোনো দলের সর্বোচ্চ দলীয় রানের রেকর্ডটি ছিল আবাহনীর। ২০১৮ সালের মার্চে প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে ৪ উইকেটে ৩৯৩ রান করেছিল দেশের ক্লাব ক্রিকেটের সবচেয়ে সফল দলটি। প্রিমিয়ার লিগে প্রাইম ব্যাংক দুবার ৪০০-এর কাছাকাছি যায়। ২০২২ সালে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে এনামুল হকের ১৮৪ রানে ৫ উইকেটে ৩৮৮ রান করেছিল তারা।

গত বছর ব্রাদার্সের বিপক্ষে ৩৮০ রানও দলটির অর্জন। তবে মিরপুরের মাঠে এই প্রথম এত রান হলো। নাঈম শেখ বিধ্বংসী ইনিংসে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন। ৭৩ রান করা সাব্বির হোসেনকে নিয়ে প্রথম জুটিতেই ১৪০ রান যোগ করেন। পৌনে ২০০ ছুঁয়ে বাঁহাতি ওপেনারের বিদায়ের পর সাজ্জাদুল হক ও আব্দুল্লাহ আল মামুনের ঝড়ে অনন্য উচ্চতায় উঠে গেল প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। বারবার খুব কাছে গিয়ে ৪০০ ছুঁতে না পারার আক্ষেপ এবার তারা দূর করল নাঈম শেখের বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে মাত্র ১২৫ বলে ১৭৬ রান করেন বাঁহাতি ওপেনার। ১৮ চারের সঙ্গে ৮টি ছক্কায় নিজের ইনিংস সাজান তিনি।

এদিন টস হেরে ব্যাটিং পেয়ে শুরু থেকেই তাণ্ডব চালান সাব্বির ও নাঈম। উদ্বোধনী জুটিতে মাত্র ১১০ বলে আসে ১৪০ রান। ৪৪ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়ে আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি সাব্বির। ৯ চার ও ৪ ছক্কার ইনিংসে ৬৩ বলে ৭৩ রান করেন তিনি। এরপর রানের গতি কমতে দেননি নাঈম। দ্বিতীয় উইকেটে জাকির হাসানের সঙ্গে ৬৮ বলে যোগ করেন ৮৬ রান।

জাকির বড় কিছু করতে পারেননি। চার নম্বরে নেমে হতাশ করেন শাহাদাত হোসেনও। অন্যপ্রান্তে তখনও অবিচল নাঈম। ৩৮ বলে ফিফটি ছুঁয়ে আরও এগিয়ে যার তিনি। ক্যারিয়ারের নবম সেঞ্চুরি করতে তার লাগে ৮২ বল। এরপর আরও উত্তাল তার ব্যাট। মাত্র ২৪ বলে ১০০ থেকে দেড়শ রানে পৌঁছে যান ২৫ বছর বয়সী ওপেনার। নাঈমের বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে ৩৭ ওভারে ৩০০ করে ফেলে প্রাইম ব্যাংক। এক ওভার পরই সালাউদ্দিন শাকিলের বলে কাভারে ধরা পরে ফেরেন নাঈম। ডাবল সেঞ্চুরি করতে না পারার আক্ষেপ নিয়ে ড্রেসিং রুমে ফেরার পথে তার সঙ্গী প্রিমিয়ার লিগে চতুর্থ সর্বোচ্চ ইনিংস। পাঁচ নম্বরে নেমে সহজাত শটে ফাইন লেগ দিয়ে বাউন্ডারি মেরে শুরু করেন শামীম হোসেন। কিন্তু তিনি ৮ বলে ১৬ রানের বেশি করতে পারেননি।

রানের গতিতেও তখন একটু ভাটা পড়েছিল। ৪০০ নিয়ে শঙ্কাও জেগেছিল কিছুটা। শেষ দিকে দায়িত্ব নেন মামুন ও সাজ্জাদুল। ষষ্ঠ উইকেটে দুজন মিলে গড়ে তোলেন ৫২ বলে ৮৪ রানের জুটি। দলকে ৪০০-এর খুব কাছে রেখে আউট হন ৩টি করে চার-ছক্কায় ২২ বলে ৪০ রান করা মামুন। অপরাজিত ইনিংসে ৩৭ বলে ৫০ রান করেন সাজ্জাদুল। ৩ চারের সঙ্গে ২টি ছক্কা মারেন তিনি। ব্রাদার্সের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেয়া আল আমিন হোসেন ১০ ওভারে খরচ করেন ৭৭ রান। দলটির সাত বোলারের সবাই ওভারপ্রতি সাতের বেশি রান খরচ করেন।

জবাবে প্রাইম ব্যাংকের এ রানপাহাড় টপকাতে পারেনি ব্রাদার্স। প্রাইম ব্যাংক জিতেছে ১৭৩ রানের বিশাল ব্যবধানে। ব্রাদার্স অলআউট হয়েছে ২৪৯ রানে। বড় কোনো জুটি গড়তে পারেনি ব্রাদার্স। চতুর্থ উইকেটে ইনিংসের সর্বোচ্চ ৮৬ রান যোগ করেন আইচ মোল্লা ও মাইশুকুর রহমান। ৩৪ রান করা মাইশুকুরের বিদায়ে জুটি ভাঙার পর শুধু পেছাতেই থাকে তারা। একপ্রান্তে ধরে রেখে সেঞ্চুরির কাছাকাছি যান আইচ। ৪৩তম ওভারে দুই রান নেয়ার চেষ্টায় শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে রান আউট হন তিনি। ১১০ বলের ইনিংসে ৭ চার ও ৫ ছক্কায় ৯৬ রান করেন আইচ।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত