ঢাকা সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

যে কৌশলে ‘পথের কাঁটা’ সাবিনাদের সরালেন বাটলার

যে কৌশলে ‘পথের কাঁটা’ সাবিনাদের সরালেন বাটলার

দেশের নারী ফুটবলে কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে সাবিনাদের বিদ্রোহকে কেন্দ্র করে নানা ঘটনা। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) দুই পক্ষকে এক টেবিলে বসিয়ে সবকিছু দামাচাপা দিতে চেয়েছিল। ঈদুল ফিতরের ছুটি কাটিয়ে ক্যাম্পে ফেরার পর সাবিনা-মাসুরারা বলেছিলেন, কোচ পিটার বাটলারের অধীনে তারা অনুশীলনে ফিরবেন। কোচও তখন বলেছিলেন ‘পাস্ট ইজ পাস্ট।’

আরও কোনো ঝামেলা নেই- এমনটি আন্দাজ করেই বিদ্রোহী ১৮ ফুটবলারের মধ্যে ১০ জন ভুটানের ঘরোয়া লিগ খেলতে গিয়েছিলেন। ভুটানে থাকা অবস্থাই বাফুফে নতুন করে চুক্তি করেছে সাবিনা আক্তার, কৃষ্ণা রানী সরকার, মাসুরা পারভীন, মারিয়া মান্দা, সানজিদা আক্তার, মাতসুশিমা সুমাইয়া, শামসুন্নাহার সিনিয়র, ঋতুপর্ণা চাকমা, রূপনা চাকমা ও মনিকা চাকমার সঙ্গে।

ভুটানের তিন ক্লাবে নাম লেখানো ফুটবলাররা একটি করে ম্যাচও খেলেছেন। বাংলাদেশর ১০ নারী ফুটবলারই।

এক ম্যাচে সাবিনা করেছেন ৯ গোল, মনিকা করেছেন ৭ গোল, সুমাইয়া করেছেন ৫ গোল, ঋতুপর্ণা করেছেন ৪ গোল ও কৃষ্ণা করেছেন দুই গোল। একটি করে গোল আছে মারিয়া, মাসুরারও। বিদেশি লিগে গিয়ে এমন পারফরম্যান্সের পরও কোচ পিটার বাটলার জর্ডান সফরের জন্য দলে ডাকেননি সাবিনা, সুমাইয়া, কৃষ্ণাসহ সিনিয়ার ৫ ফুটবলারকে। জর্ডান সফরের জন্য ডাক পেয়ে ঢাকায় ফিরেছেন রুপনা চাকমা, মনিকা চাকমা, ঋতুপর্ণা চাকমা, মারিয়া মান্দা ও শামসুন্নাহার সিনিয়র। ডাক না পাওয়ায় থিম্পুতে রয়ে গেছেন সাবিনা, কৃষ্ণা, সানজিদা, সুমাইয়া ও মাসুরা পারভীনরা। সিনিয়র ৫ ফুটবলারকে না ডেকে কোচ পিটার বাটলার মূলত ‘বিদ্রোহী জোট’ ভেঙে দিয়েছেন, যাতে ভবিষ্যতে তার বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিবাদ না হয়। একজন ফুটবলার বিদেশি লিগে গিয়ে এক ম্যাচে ৯ গোল করেই প্রমাণ করেছেন নিজেদের যোগ্যতা।

বিদ্রোহ চলাকালীন পিটার বাটলার বাফুফের কাছে সিনিয়র ৫ ফুটবলারের নামে নালিশ করেছিলেন। তিনি বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, ওরাই নাটের গুরু। মুখে ‘পাস্ট ইজ পাস্ট’ বললেও পিটার যে অতীত ভোলেননি তার প্রমাণ দিয়েছেন সাবিনাসহ পাঁচ জনকে বাদ দিয়ে।

১৮ ফুটবলার একজোট হয়ে বাফুফেকে পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন। হয় কোচ, না হয় আমরা- এই অল্টিমেটাম দেওয়ার পরও বাফুফে সেই কোচকেই নিয়োগ দিয়েছে। বাংলাদেশ দুইবার সাফ জিতেছে তার পেছনে বড় অবদান সাবিনা, কৃষ্ণা, মাসুরা, সানজিদার। সেই তারকা ফুটবলাররাই এখন কোচের বাতিলের খাতায়। দেশের নারী ফুটবলে কিংবদন্তী সাবিনা খাতুন। গোলমেশিনখ্যাত সাবিনা কেবল বাংলাদেশেরই নন, দক্ষিণ এশিয়ারও অন্যতম সেরা তারকা। এটা ঠিক বয়সের কারণে সাবিনা আগের মতো ফর্মে নেই। তারপরও তার সমমানের ফুটবলার এই অঞ্চলে কমই আছেন। সাবিনা বাংলাদেশের নারী ফুটবলের গর্ব। সেই সাবিনার একটি সম্মানজক বিদায় হয়তো একটা সম্মানের সমাপ্তিও করতে পারছে না বাফুফে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত