ঢাকা সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ৩ চৈত্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পেঁয়াজ খেতে পার্পল ব্লচ রোগে দুশ্চিন্তায় কৃষক

পেঁয়াজ খেতে পার্পল ব্লচ রোগে দুশ্চিন্তায় কৃষক

রাজবাড়ীতে হালি পেঁয়াজ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। তবে আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে পেঁয়াজ খেতে ছত্রাকজনিত পার্পল ব্লচ রোগ দেখা দিয়েছে, যা ফলন কমার আশঙ্কা তৈরি করেছে। কৃষকরা বলছেন, নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসলে দাম কমে যাবে কিনা কিংবা সরকার আমদানি করবে কিনা— এসব নিয়েও দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তারা। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, রোগ প্রতিরোধে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, কৃষকেরা এখন জমিতে পরিচর্যায় ব্যস্ত। কেউ সেচ দিচ্ছেন, কেউ সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করছেন। তবুও পার্পল ব্লচ রোগ দমন করা সম্ভব হচ্ছে না। কালুখালি উপজেলার মদাপুর ইউনিয়নের চাষি আব্দুল রাজ্জাক মণ্ডল বলেন, পেঁয়াজের বৃদ্ধি ঠিকমতো হচ্ছে না, আবার পাতা মরে যাচ্ছে। আবহাওয়ার কারণে হয়তো এমন হচ্ছে। ভালো ফলন পাবো কি না বুঝতে পারছি না। চাষি ঝন্টু শেখ বলেন, শীত চলে যাওয়ায় পেঁয়াজ গাছের মাথা মরে যাচ্ছে। সার, ওষুধ, সেচ দিয়েও খেত ভালো হচ্ছে না। এখন যদি ঠান্ডা পড়ে, তাহলে হয়তো গাছ টিকে যাবে, নাহলে ফলন ভালো হবে না। চাষি আব্দুল রউফ জানান, বিঘাপ্রতি চাষ, সেচ, সার, কীটনাশক, শ্রমিক ও তুলনাসহ ২৫-৩০ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। যারা জমি লিজ নিয়েছে, তাদের খরচ আরও বেশি (৪০-৪৫ হাজার টাকা)। উৎপাদন ভালো হলে বিঘাপ্রতি ৪০-৫০ মণ পেঁয়াজ পাওয়া যাবে। কিন্তু সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তা হলো, বাজারের অবস্থার চেয়ে সরকারের আমদানি নীতি! অন্য চাষি ইমরান শেখ বলেন, বাইরের পেঁয়াজ আমদানি করলে লোকসান হবেই। কৃষকের জন্য সার ও ওষুধের দাম কমানো দরকার।

এখন যে দামে বিক্রি হচ্ছে, তাতে লাভ হবে না। ২ হাজার টাকা মণ দামে বিক্রি হলে কৃষকের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হবে। রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. শহিদুল ইসলাম বলেন, রাজবাড়ী জেলায় দেশের মোট উৎপাদিত পেঁয়াজের ১৪ শতাংশ উৎপন্ন হয়। এ বছর ৩৭ হাজার ২৮৩ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ আবাদ হয়েছে, যার মধ্যে ৫ হাজার ৮৭০ হেক্টরে মুড়িকাটা, ৩১ হাজার ২৭১ হেক্টরে হালি ও ১৪২ হেক্টরে কদম বা দানা পেঁয়াজ চাষ হচ্ছে।

আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ৫ লাখ ২৫ হাজার টন পেঁয়াজ উৎপাদন। তিনি আরো বলেন, পার্পল ব্লচ রোগ দেখা দিলেও কৃষকরা সচেতন রয়েছে। আমরা নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছি এবং ছত্রাকনাশক স্প্রে করার নির্দেশনা দিচ্ছি। আশা করি, এই সমস্যা দ্রুত কেটে যাবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত