মানিকগঞ্জের সালিশে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগে পাঁচ ভাইকে কান ধরে উঠবস এবং জুতোপেটা করানোর অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপির এক নেতার বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত আব্দুল কুদ্দুস খান মজলিস মাখন সাটুরিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি এবং বরাইদ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। গত শুক্রবার বিকালে সাটুরিয়া উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নের সালুয়াকান্দি গ্রামে মৃত তাইজুদ্দিনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়দের মধ্যে এ ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, তাইজুদ্দিনের সাত ছেলের মধ্যে গাছ কাটা ও জমিজমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এই বিরোধের জের ধরে মীনহাজ ও ফারুক নামে দুই ভাই তাদের অন্য পাঁচ ভাই লিটন, ওহাব, রবিউল, মোকরম ও হারুনের বিরুদ্ধে সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল কুদ্দুস খান মজলিস মাখনের কাছে বিচার দেন।
বিচারের দিন বিকালে সালুয়াকান্দি গ্রামে তাইজুদ্দিনের বাড়িতে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত হন। অভিযোগ রয়েছে, নির্ধারিত সময়ে ওই পাঁচ ভাই উপস্থিত না হওয়ায় মাখনের লোকজন তাদেরকে ধরে নিয়ে আসে। এরপর তাদের কোনো কথা না শুনেই ভরা মজলিসে লিটন, ওহাব, রবিউল, মোকরম ও হারুনকে সাতবার কান ধরে উঠবস করার নির্দেশ দেন মাখন। এখানেই শেষ নয়, এরপর তিনি ওই পাঁচ ভাইকে পাঁচটি করে জুতার বাড়ি দেয়ার নির্দেশ দেন। পরে রেফাজ উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি সবার সামনে তাদের মারধর করেন। ভুক্তভোগীরা জানান, কোনো সমাধান ছাড়াই এবং তাদের বক্তব্য না শুনেই মাখন বিচারস্থল ত্যাগ করেন। এ ঘটনার পর ভুক্তভোগী লিটন, ওহাব, রবিউল ও মোকরম আক্ষেপ করে বলেন, আমাদের বড় ভাইয়েরা বিভিন্নভাবে আমাদের ঠকিয়েছে। চেয়ারম্যান সাহেব তাদের পক্ষ নিয়ে আমাদের ওপর জুলুম করেছেন। এখন আমরা এলাকায় মুখ দেখাতে পারছি না। আমরা এর বিচার চাই। অভিযুক্ত আব্দুল কুদ্দুস খান মজলিস মাখন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ওদের একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল, এ সপ্তাহের মধ্যেই সেটার সমাধান করে দেব ইনশাআল্লাহ।
৯০, ৯১ ও ৯২ সালে অনেক চোর ডাকাত একা একাই আমি ধরেছি। বিচার করেছি, মারছি ঠিক আছে। তাদেরকে ঝুলিয়েও মারছি, ঠিক আছে। কাজেই সে সময় এখন নাই আমি জানি। কাজেই ও ধরনের বিচারে আমি যাই না। এখন তো নিয়ম পরিবর্তন হয়েছে, আইন পরিবর্তন হয়েছে। আমার বয়স হয়েছে, এই বয়সে যদি আমি অন্যায়ও করে থাকি মাখন ভাই বা মাখন দাদা হিসেবে আমি মনে করি আমাকে একটু সহযোগিতা করার জন্য। যেহেতু আমার জীবন কেটেছে ন্যায়ের পথে। সাটুরিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।