ঢাকা রোববার, ১৮ মে ২০২৫, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

শ্লীলতাহানির অভিযোগে ছাত্রদল নেতা বহিষ্কার

শ্লীলতাহানির অভিযোগে ছাত্রদল নেতা বহিষ্কার

নেত্রকোনার পূর্বধলায় এক গৃহবধূকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সালমান রহমান পল্লবসহ জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় সদস্য মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী সংবাদ সম্মেলন করেন।

গত বুধবার রাত ৮টার দিকে পূর্বধলা প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে মাওলানা রফিকুল ইসলাম জানান, এই বিষয়ে থানায় একটি অভিযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান এবং শ্লীলতাহানির সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিও জানান তিনি।

এই ঘটনায় ছাত্রদলের পূর্বধলা উপজেলা শাখার আহ্বায়ক সালমান রহমান পল্লবকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে সাংগঠনিক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বহিষ্কারের তথ্য জানানো হয়।

একইসঙ্গে সংগঠনের সব পর্যায়ের নেতাকর্মীদের প্রতি বহিষ্কৃত ব্যক্তির সঙ্গে কোনো সাংগঠনিক যোগাযোগ না রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়। নেত্রকোনা জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক অনিক মাহাবুব চৌধুরী ওই নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার ও প্রেসবিজ্ঞপ্তি প্রেরণের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

সালমান রহমান পল্লব উপজেলার গোহালাকান্দা ইউনিয়নের গোহালাকান্দা গ্রামের মোফাজ্জল হোসেনের ছেলে। এর আগে ওই নারীকে শ্লীতাহানির অভিযোগ এনে ছবিসহ পূর্বধলা উপজেলা ছাত্রদলের বহিস্কৃত আহ্বায়ক মো. সালমান রহমান পল্লবের বিরুদ্ধে একইদিন বিকাল ৩টার দিকে ফেসবুকে পোস্ট দেন হেফাজত ইসলামী কেন্দ্রীয় নেতা হাফেজ মাওলানা মো. রফিকুল ইসলাম মাদানী। তার ফেসবুক স্ট্যাটাসটি হুবু-হু তুলে ধরা হলো: আমি স্তব্ধ, বাকরুদ্ধ- বলার মতো কোনো ভাষা নেই। এসব কথার কারণে আওয়ামী লীগের লোকজন হয়তো হাসাহাসি করবে, কিন্তু বাস্তবতা তো এড়িয়ে যাওয়া যাবে না!

আমার এক চাচাতো ভাই তার ভাতিজিকে নিয়ে ঢাকা যাচ্ছিল। সে নিজে প্রাইভেট কার চালক, আর মেয়েটি পেছনের সিটে শুয়ে ছিল। মেয়েটি বিবাহিত। পথে পূর্বধলা থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক পল্লব ও তার দলবল মিলে শ্যামগঞ্জ বাজারে রাতে ২০-২৫ জনের একটি দল গাড়ি থামিয়ে টেনে হিঁচড়ে মেয়েটিকে নামিয়ে শ্লীলতাহানি করে। তারা মেয়েটিকে চড়থাপ্পড় মারে এবং জোরপূর্বক নিয়ে যায়।

আমার ভাই তাদের থামাতে গেলে তাকেও মারধর করা হয়। মেয়েটিকে প্রায় দুই ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। পরে আমরা পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় যোগাযোগ করি। পূর্বধলা থানার ওসি ঘটনাস্থলে গেলেও, আমি ফোনে থাকার সময়ও দেখেছি, ওসির সামনে আমার ভাইকে হুমকি ও গালাগালি করা হচ্ছে এবং আঘাত করা হয়েছে। শ্যামগঞ্জ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ পরিদর্শক (ইনচার্জ) মো. রহুল আমিন জানান, উপজেলার লেটিরকান্দা গ্রামের ওই নারী গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে একটি অ্যাম্বুলেন্সযোগে নিজ বাড়ি থেকে ঢাকায় যাচ্ছিলেন। পথে শ্যামগঞ্জ-বিরিশিরি সড়কের জালশুকা পালপাড়া নামক স্থানে কতিপয় দুষ্কৃতকারী তাদের গতিরোধ করে অ্যাম্বুলেন্স থেকে ওই নারীকে তুলে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থলের পাশ থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে আসে। এসময় পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি।

পূর্বধলা থানার ওসি মোহাম্মদ নূরুল আলম জানান, ভিকটিমকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত