ঢাকা ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১১ মাঘ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা

হাসিনার পতনে ছিল না যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা

হাসিনার পতনে ছিল না যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা

বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন এবং অন্যান্য ঘটনাপ্রবাহে যুক্তরাষ্ট্রের হাত ছিল না বলে দাবি করছেন দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান। ভারতীয় কর্মকর্তারাও এ ধরনের মনোভাবই পোষণ করেন বলে মনে করছেন তিনি। সম্প্রতি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুকে সাক্ষাৎকার দেন জেক সুলিভান। সেই সাক্ষাতে তিনি বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের ইস্যু তুলে ধরেন। বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ এবং সরকার পরিবর্তনে আমেরিকার ভূমিকা আছে মর্মে যে অভিযোগ ও ধারণা আছে সেগুলোকে ‘অবাস্তব’ বলে উল্লেখ করেন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান। তিনি দাবি করেন, জ্যেষ্ঠ ভারতীয় কর্মকর্তারাও বিশ্বাস করেন যে, ঢাকার ঘটনাগুলোর পেছনে আমেরিকার হাত ছিল না।

সুলিভান সম্প্রতি নয়াদিল্লি থেকে সফর শেষ করে ওয়াশিংটনে ফিরেছেন। হিন্দুস্তান টাইমস তার কাছে খালিস্তান আন্দোলনের নেতা গুরুপতবন্ত সিং পান্নুনকে হত্যাচেষ্টা, গৌতম আদানির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে দুর্নীতির অভিযোগ, বাংলাদেশে ক্ষমতার পরিবর্তনের পেছনে আমেরিকার ভূমিকা নিয়ে ভারতের ধারণার বিষয়ে জানতে চায়। পাশাপাশি, মার্কিন ‘ডিপ স্টেট’ ভারতকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ তুলেছে ভারতে ক্ষমতাসীন বিজেপি, এই প্রেক্ষাপটে বাইডেন প্রশাসনের অধীনে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অবনতি নিয়ে তার মন্তব্য কী। যাকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডিপ স্টেটের নেতৃত্বদানকারী’ হিসেবে বলা হয়, এমন অবস্থান থেকে তিনি কীভাবে এসব প্রশ্নের জবাব দেবেন? জবাবে সুলিভান বলেন, ‘আমি বিনয়ের সঙ্গে এই ধারণা প্রত্যাখ্যান করতে চাই যে, আমি ডিপ স্টেটের নেতৃত্বে আছি এবং সেই সঙ্গে এই ধারণাও প্রত্যাখ্যান করব যে, বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোর পেছনে আমেরিকার হাত ছিল। বিষয়টি একেবারেই অবাস্তব। জ্যেষ্ঠ ভারতীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে আমি মনে করি না যে, তারাও এটা বিশ্বাস করেন।’

এর আগে, গত ডিসেম্বরের শেষ দিকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ করেন। সেসময় বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন কখন হতে পারে, সেই বিষয় সুনির্দিষ্ট করে বলায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অভিনন্দন জানান তিনি।

জেক সুলিভান বাংলাদেশে রাজনৈতিক ও নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কারের কাজ শুরু করার জন্যও ইউনূসকে অভিনন্দন জানান। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের এ যাত্রায় পাশে থাকবে। হোয়াইট হাউজের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইউনূস ও সুলিভান তাদের আলাপে বাংলাদেশে ধর্মনির্বিশেষে সব নাগরিকের মানবাধিকার সমুন্নত রাখার ওপর জোর দিয়েছেন। তারও আগে, সেপ্টেম্বরে ড. মুহাম্মদ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে গেলে বাংলাদেশের নতুন সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে দুই নেতার মধ্যে বৈঠকের পর এই প্রতিশ্রুতি দেন বাইডেন। বৈঠকের পর হোয়াইট হাউজের ওয়েবসাইটে সংক্ষিপ্ত বিবৃতি প্রচার করা হয়। এতে বলা হয়, মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিযুক্ত হওয়ায় তাকে অভিনন্দন জানাতে বাইডেন তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, বৈঠকে দুই দেশের মধ্যকার ‘ঘনিষ্ঠ অংশীদারত্বের’ বিষয়টি উল্লেখ করেন উভয় নেতা। পারস্পরিক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও জনগণের মধ্যে জোরাল বন্ধনই এই সম্পর্কের ভিত্তি। দুই সরকারের মধ্যে সম্পৃক্ততা বৃদ্ধিকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশের নতুন সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত