দ্রুত জরুরি সংস্কার শেষ করে জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন সিলেটের রাজনীতিবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। তারা বলেছেন, ঐকমত্যের ভিত্তিতে সংস্কার প্রয়োজন, তবে সেটা কোনোভাবেই নির্বাচন আটকে রেখে নয়। গতকাল সকাল সাড়ে ৯টায় সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের (সিজিএস) উদ্যোগে সিলেট নগরের মির্জাজাঙ্গাল এলাকার একটি অভিজাত রেস্তোরাঁ মিলনায়তনে ‘গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্য সংলাপ’ শীর্ষক এক সভায় বক্তারা এ কথাগুলো বলেন। এতে রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, আইনজীবী, ব্যবসায়ী, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, নারী সংগঠক, অধিকারকর্মী, স্বেচ্ছাসেবকসহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
সংলাপে অতিথি আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ডিন অধ্যাপক কামাল আহমেদ চৌধুরী। অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ছিলেন সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান। আইনজীবী এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম বলেন, ১৯৭২ সালের সংবিধানে যুদ্ধ-পরবর্তী বাংলাদেশের পক্ষে মানুষের মৌলিক অধিকার রাষ্ট্র কর্তৃক প্রদানের মতো সক্ষমতা ছিল না। কিন্তু এখন তো বাংলাদেশ আগের চেয়ে অর্থনৈতিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে সক্ষম একটি দেশ। দেশ পুনর্গঠনের জন্য খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা- এ অধিকারগুলোকে মৌলিক অধিকার হিসেবে চিহ্নিত করে রাষ্ট্র থেকে তা নিশ্চিতের ব্যবস্থা করতে হবে এবং তা সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এ ছাড়া সাংবিধানিকভাবে আইন বিভাগ, বিচার বিভাগ ও শাসন বিভাগকে আলাদাভাবে ক্ষমতা প্রদান করা প্রয়োজন। অধ্যাপক কামাল আহমেদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংবিধান থাকলেও কখনোই সাংবিধানিক শাসন ছিল না। ১৯৭২ সালে সংবিধান প্রণয়ন করলেও ১৯৭৫ সালে এসে সংবিধান সংশোধন করে একদলীয় শাসনব্যবস্থা চাপিয়ে দেয়ার মাধ্যমে সেই সংবিধানের মূল স্পিরিটকে নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। জিল্লুর রহমান বলেন, জন্মলগ্ন থেকেই বাংলাদেশের মানুষ বহুবার গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ে রাজপথে নেমেছেন। কিন্তু দুঃখজনকভাবে প্রতিবারই তাদের আন্দোলনকে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে আন্দোলনের স্পিরিটকে নষ্ট করেছে। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানকে ঘিরেও এখন নানা পক্ষের দিক থেকে রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের প্রচেষ্টা লক্ষ করা যাচ্ছে। সংলাপে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম চৌধুরী, সিলেট মহানগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েছ, সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির মো. ফখরুল ইসলাম, সিলেট জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আবদুল আহাদ খান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সিলেট জেলার মুখপাত্র মালেকা খাতুন সারা, সংগঠক পলাশ বখতিয়ার প্রমুখ বক্তব্য দেন।