আন্দোলনরত রেল কর্মচারীদের ‘যৌক্তিক দাবি’ আগেই মেনে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। যেসব বাড়তি দাবি নিয়ে রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতি কর্মবিরতিতে গেছেন তা পূরণ করতে সরকারের বর্তমান সক্ষমতার বিষয়ে সংশয় প্রকাশ পেয়েছে অর্থ উপদেষ্টার কথায়। সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘রেল কর্মীদের ওভারটাইম সংক্রান্ত যে যৌক্তিক দাবি ছিল সেটা অর্থ মন্ত্রণালয় মেনে নিয়েছে। বেশ কয়েকদিন আগেই তাদের যৌক্তিক দাবিগুলো মানা হয়েছে, আমরা দিয়েছি। তারপরও তারা কেন আন্দোলন করছে সেটা তাদের ব্যাপার। প্রত্যেকেরই একাধিক দাবি থাকবে। তারা বলেছে এই দিতে হবে, ওভারটাইম এলাউন্স দিতে হবে। আমরা যতটুকু পেরেছি আমাদের সম্পদের হিসাব অনুযায়ী আমরা দিয়েছি।’ গতকাল মঙ্গলবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত ও অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় অর্থ উপদেষ্টার কাছে রেল কর্মচারীদের চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে জানতে চান সাংবাদিকরা।
জবাবে অর্থ উপদেষ্টা এসব কথা বলেছেন। মূল বেতনের সঙ্গে রানিং অ্যালাউন্স যোগ করে পেনশন এবং আনুতোষিকের দাবি পূরণ না হওয়ায় কর্মবিরতিতে গেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও শ্রমিক কর্মচারী সমিতি; তাতে সারা দেশে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এই কর্মবিরতির কারণে গত সোমবার মধ্যরাতের পর ঢাকার কমলাপুর স্টেশন থেকে কোনো ট্রেন ছেড়ে যায়নি বলে স্টেশন মাস্টার মো. আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন। সকালে কর্মবিরতি নিয়ে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, আন্দোলনকারীদের দাবি পূরণের বিষয়টি নিয়ে রেল বিভাগ তাদের করণীয় করেছে। এখন বিষয়টি অর্থ বিভাগের ‘হাতে রয়েছে’ বলে জানিয়েছেন তিনি। সরকারের চলমান অর্থ সংকটের প্রসঙ্গ তুলে ধরে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমার মনে হয় মোটামুটি যতটুকু যৌক্তিক ছিল আমরা সুবিধা দিয়েছি। এখন তারা যদি বলে আরো সবগুলো একসাথে দিতে হবে, এখন আমাদের অর্থের সংকুলান তো করতে হবে। আমি তো বাহির থেকে ঋণ করে হলেও মোটামুটি একটা স্থিতিশীল পর্যায়ে নিয়ে এসেছি। আমার এখানে যৌক্তিক কোনো দাবি নিয়ে আসলে সাধারণত অর্থ মন্ত্রণালয় নিষেধ করি না। বিশেষ করে মানবিক কারণে এবং মানুষের চাকরি-বাকরির যদি অসুবিধা হয় আমরা যথাসম্ভব চেষ্টা করি।’ রানিং স্টাফদের দাবি নিয়ে তিনি বলেন, অন্যান্যদের একই দাবি আছে। আমি যদি রেলের ক্ষেত্রে বলি যে, তোমাদেরটা আমি দেখলাম, সেটা তো কঠিন। রেলের ওভার টাইমের যে ইস্যুটা ছিল সেটা আমরা সলভ করে দিয়েছি। ১০-১২ দিন আগে সেটার সার্কুলার হয়ে গিয়েছে। এখন যদি ওরা বলে যে, পেনশন, গ্রাচুইটি এগুলো যোগ করতে হবে। এরকম সরকারি অন্যান্য সংস্থার তো আরো অনেক দাবি আছে। সরকারি কর্মচারীদের মহার্ঘ ভাতা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, সরকার এই বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। সরকার ঘোষণার পরেও সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে, এমন কথা সঠিক নয়। ঘোষণা কে দিল? আমরা এখনো ঘোষণা দেইনি।