গত বছরের ৫ আগস্ট ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বড় ধাক্কা খায় পুলিশ। নড়বড়ে হয়ে পড়ে বাহিনীটি। এই সুযোগে বিভিন্ন অপরাধ চক্র সক্রিয় হয়ে ওঠে। বিশেষ করে ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। দিন দিন রাজধানী ঢাকা যেন ছিনতাইয়ের নগরী হিসেবে রূপ নিচ্ছে। দিনের বেলায়ও প্রকাশ্যে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। আর রাত হলে পুরো শহরজুড়ে আতঙ্ক থাকে। দূর-দূরান্ত থেকে সড়কপথ ও রেলপথে যারা ঢাকায় ফেরেন তারা অনেকটা আতঙ্ক নিয়েই গন্তব্যে পৌঁছান। কারণ শহরের বাস টার্মিনাল ও রেলওয়ে স্টেশনকে ঘিরে পেশাদার ছিনতাইকারীরা ওঁত পেতে থাকে। সুযোগ পেলেই তারা যাত্রী ও পথচারীদের টার্গেট করে ছিনতাই করে। অস্ত্রধারী এসব ছিনতাইকারীদের বাধা দিলেই ছুরিকাঘাত করে। এসব ছিনতাইয়ের ঘটনায় অনেকে রক্তাক্ত ও নিঃস্ব হচ্ছে। শুধু বাস টার্মিনাল ও রেলওয়ে স্টেশন ঘিরে নয়, সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকায় ছিনতাইকারী বেড়ে যাওয়ায় শহরের বিভিন্ন অলিগলিতেও এখন ছিনতাইকারীরা ওঁত পেতে থাকে। ঢাকার ৫০টি থানার সবক’টি এলাকাতে এখন ছিনতাই আতঙ্ক। প্রতি রাতেই অহরহ মানুষ ছিনতাইয়ের শিকার হন। বেশিরভাগ মানুষ ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে টাকা, স্বর্ণালঙ্কার ও মূল্যবান জিনিসপত্র হারিয়েও পুলিশের সহযোগিতা নিতে চান না। ঝামেলা এড়াতে শুধুমাত্র থানায় হারানো জিডি করেন। তবে বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনায় ভুক্তভোগীরা থানায় অভিযোগ দেন। যারা অভিযোগ দেন তাদের বিষয়টি থানায় রেকর্ডেড থাকে। তাই ভুক্তভোগীরা থানায় মামলা ও অভিযোগ না দেয়ায় প্রকৃতপক্ষে ঢাকায় কি পরিমাণ ছিনতাই হয় তার পরিসংখ্যান খুঁজে পাওয়া যায় না। তবে ঢাকায় কি পরিমাণ ছিনতাই স্পট আছে তার হিসাব পাওয়া গেছে। এরইমধ্যে র্যাব সদর দপ্তর জানিয়েছে, ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় তারা ২৭৯টি ছিনতাই স্পট শনাক্ত করেছে। এরমধ্যে র্যাব-১ এর আওতাধীন এলাকায় ৪১টি, র্যাব-২ এলাকায় ৭৯টি, র্যাব-৩ এলাকায় ২৪টি, র্যাব-৪ এলাকায় ৬২টি ও র্যাব-১০ এর আওতাধীন এলাকায় ৭৩টি স্পট রয়েছে।
যদিও ঢাকা মহানগর পুলিশের থানা, গোয়েন্দা পুলিশ ও র্যাব সদর দপ্তর বলছে, ছিনতাই প্রতিরোধে গুরুত্ব সহকারে কাজ করা হচ্ছে। প্রতিনিয়ত ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। ছিনতাই স্পট শনাক্ত, পেট্রোলিং করা হচ্ছে।
এদিকে ডাকাতি ও ছিনতাই রোধে গতকাল সোমবার থেকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, র্যাব ও এন্টি টেরোরিজম ইউনিট যৌথ অভিযান পরিচালনা শুরু করেছে। বিষয়টি জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম। গতকাল সোমবার সকালে রাজশাহীর প্রাইমারি ট্রেনিং সেন্টারে দেশের পরিবর্তন পরিস্থিতিতে মানবাধিকার ও পরিবেশের ওপর গুরুত্বসহ আইন প্রয়োগ বিষয়ে কর্মশালায় যোগদানকালে তিনি এ কথা জানান। আইজিপি বলেন, ‘রাতে ছিনতাই বেড়েছে। দিনেও ছিনতাই বেড়েছে। ছিনতাই প্রতিরোধে বিশেষ একটি ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, র্যাব ও এন্টি টেরোরিজম ইউনিট যৌথ অভিযান পরিচালনা করবে। আজ সোমবার থেকে এটি বাস্তবায়িত হবে আশা করি। আমরা দেখি এভাবে উন্নতি হয় কি না। না হলে আমাদের অন্য পরিকল্পনায় যেতে হবে।’ রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে রাত (সোমবার) থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যক্রম টের পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান। সন্ধ্যার পর থেকে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশসহ অন্য বাহিনীগুলোর সমন্বয়ে যৌথবাহিনী রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে টহল দেবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
জানা যায়, রাজধানীর বনশ্রী এলাকায় আনোয়ার হোসেন নামে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে গুলি করে তার কাছে থাকা ২০০ ভরি স্বর্ণ এবং নগদ এক লাখ টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গত রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে বনশ্রী ডি ব্লক ৭ নম্বর রোডের ২০ নম্বর বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে রাত ১২টার দিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা যায় তিনটি মোটরসাইকেলে করে একদল দৃর্বৃত্ত রাস্তায় আক্রমণ করে ব্যবসায়ীকে গুলি করে স্বর্ণ নিয়ে পালিয়ে যায়।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেনকে লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়েছে। এসময় তার পায়ে এবং পিঠে ধারাল অস্ত্র দিয়ে বেশ কয়েকটি আঘাত করা হয়েছে। ঢামেকে আহত অবস্থায় আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘অলঙ্কার নামে আমার জুয়েলারি দোকান আছে। রাতে দোকান বন্ধ করে দুইশ’ ভরি স্বর্ণ ও এক লাখ টাকা নিয়ে বাসার গেটে আসি। এসময় তিনটি মোটরসাইকেলে প্রায় সাতজন আমার কাছে থাকা ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। বাধা দিতে গেলে আমাকে লক্ষ্য করে গুলি করে। পরে আমার সঙ্গে থাকা স্বর্ণ ও টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।
ঢামেক সূত্র জানিয়েছেন, ব্যবসায়ী আনোয়ার বেঁচে আছেন। তাকে লক্ষ্য করে ৬ রাউন্ড গুলি এবং পায়ে ও পিঠে ছুরিকাঘাত করেছে ছিনতাইকারীরা। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন, অবস্থা শঙ্কামুক্ত। এ বিষয়ে ঘটনাস্থল থেকে রামপুরা থানা-পুলিশের পরিদর্শক তদন্ত আতাউর রহমান বলেন, ‘একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেটা দেখে কিছুটা ধারণা করা যাচ্ছে। তাছাড়া সিসিটিভি ফুটেজেও পাওয়া যাবে। আশা করি দ্রুত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে পারব।
এছাড়া গত রোববার রাতে মোহাম্মদপুরে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পাওয়া যায়। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায়, একটি রিকশা থামিয়ে দুই তরুণ ছিনতাই করছে। রিকশায় এক নারীকে বসে থাকতে দেখা যায় এবং তার পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন আরেক নারী। এসময় দাঁড়িয়ে থাকা নারীর দিকে এক ছিনতাইকারীকে চাপাতি হাতে তেড়ে যেতে দেখা যায়। সেখানে আরেক ব্যক্তিকে দেখা যায় ছিনতাইকারীদের সরিয়ে দিতে। তবে তিনি ওই দুই নারীর সঙ্গে ছিলেন কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
সম্প্রতি একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে রাজধানী এবং এর আশপাশে ৪৩২টি ছিনতাইয়ের স্পট চিহ্নিত করা হয়েছে। এই স্পটগুলোতে কমপক্ষে ৯৭৯ জন ছিনতাইকারী সক্রিয় এবং তাদের বেশিরভাগই বিভিন্ন থানায় দায়ের করা ফৌজদারি মামলার আসামি। ২০২৪ সালের শেষ চার মাসে রাজধানীতে বিশেষ অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অভিযানে ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত ৮৬৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে সেপ্টেম্বরে ২৩ জন, অক্টোবরে ৯১ জন, নভেম্বরে ১৪৮ জন এবং ডিসেম্বরে এই সংখ্যা ছিল ৫৬৪ জন। প্রতিবেদন অনুসারে, ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের অধীনে খিলগাঁও, ওয়ারী ডিভিশনে কমপক্ষে ২১২ জন ছিনতাইকারী সক্রিয়। মিরপুর ও তেজগাঁও বিভাগে প্রায় ৩৮৬ জন, রমনা ও লালবাগ বিভাগে ২১৭ জন এবং উত্তরা ও গুলশানে ১৫৪ জন ছিনতাইকারী সক্রিয়। তালিকায় উঠে এসেছে মোহাম্মদপুর এলাকায় সবচেয়ে বেশি ছিনতাইয়ের ঘটনার কথা। তালিকা অনুসারে, মোহাম্মদপুর থানার আওতাধীন এলাকায় ২০৫ জন ছিনতাইয়ের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। এছাড়া মোহাম্মদপুরে সবচেয়ে বেশি ১০৮টি ছিনতাইয়ের স্পট রয়েছে। যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ এবং মীরহাজিরবাগকে উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ ছিনতাই এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে মাদকাসক্ত ছিনতাইকারীরা প্রায়ই মোবাইল ফোনের জন্য মানুষজনকে টার্গেট করে।
সম্প্রতি ঢাকায় ছিনতাইয়ের কিছু ঘটনা : গত ১৮ ডিসেম্বর রাত পৌনে ৯টায় রাজধানীর মেয়র হানিফ উড়াল সড়ক দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় হাফেজ কামরুল হাসান ছিনতাইকারীর কবলে পড়েন। এসময় ছিনতাইকারীরা তাকে ছুরিকাঘাত করে মোবাইলফোন ও সাত হাজার টাকা নিয়ে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে পথচারীরা মুগদা হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানে মারা যান কামরুল। পরে এ ঘটনায় দুই ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গত ১ জানুয়ারি পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার এলাকায় থাকা আত্মীয়ের বাসা থেকে ফেরার পথে ছিনতাইয়ের শিকার হন এক নারী ও ওই নারীর ভাই। এসময় তাদের একটি মোটরসাইকেলে আসা তিন ছিনতাইকারী পথরোধ করে। পরে তাদের গলায় ধারালো অস্ত্র ঠেকিয়ে সোনার গয়না (চেইন ও আংটি) ও পাঁচ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। তারা চাপাতি দিয়ে পুরুষ যাত্রীর ঊরু ও হাতে কোপ দিয়ে অটোরিকশার চাবি নিয়ে পালিয়ে যায়।
গত ৬ জানুয়ারি রাতে যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দা অটোরিকশা চালক জসিম মোল্লা (৪২) রাতে বাসা থেকে বের হন। পরদিন মীরহাজিরবাগ তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা রোডের ইঞ্জিনিয়ার গলির মাথায় পাকা রাস্তার উপর জসিমের মৃতদেহ পাওয়া যায়। এসময় জসিম মোল্লার মাথায়, পিঠে, বাম হাতের কব্জি, বাম পায়ের গোড়ালি ও ডান পায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপের আঘাত ছিল। এ ঘটনায় মৃত জসিম মোল্লার স্ত্রী শিল্পী গত ১৩ জানুয়ারি যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। সেই মামলায় এখন পর্যন্ত কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
গত ২০ জানুয়ারি রাজধানীর ফকিরাপুল এলাকায় রাত সাড়ে ৩টার দিকে সাজু মোল্লা (২২) নামে এক যুবক ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে ছুরিকাঘাতের শিকার হন। পরে তার মৃত্যু হয়। গত ২১ জানুয়ারি রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় এক নারীর ভ্যানিটি ব্যাগ ছিনতাই করে পালিয়ে যায় ছিনতাইকারীরা। পরে অভিযান চালিয়ে তিন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত ২১ জানুয়ারি গুলশান-২ নম্বরে রাত ৯টার দিকে মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানের মালিক আবদুল কাদের ও তার শ্যালক আমির হামজা গুলশান-১ হয়ে মোটরসাইকেলে বাসায় যাচ্ছিলেন। পথে ডিএনসিসি মার্কেটের সামনে ১৫-২০ জন তাদের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করেন। পরে রড, ইট ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে নগদ প্রায় এক কোটি টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় আমির হামজা ও কাদের আহত হন।
গত ২৬ জানুয়ারি রাতে মতিঝিল থেকে মগবাজার যেতে জাহাঙ্গীর আলম ব্যাটারিচালিত রিকশা ভাড়া করেন। রাত ৩টার দিকে পশ্চিম রামপুরার বাংলাদেশ মাল্টিকেয়ার হাসপাতালের সামনে এলে জাহাঙ্গীর আলমের পেটে ছুরি ধরে সঙ্গে থাকা একটি মোবাইল, নগদ টাকা ও রিকশাটি ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে দুর্বৃত্তরা। তখন রিকশাচালক চিৎকার করলে টহল পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলের দিকে এগিয়ে আসে। পুলিশ দেখে ছিনতাইকারীরা পালানোর চেষ্টা করে। এসময় জীবন ও সোহাগ নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
একই দিন রাজধানীর আফতাবনগর চায়না প্রজেক্ট এলাকায় আব্দুস সালাম নামের এক চালককে হত্যা করে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ওইদিন রাত পৌনে ২টার দিকে আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ সেই ঘটনায় ছিনকতাইকারীরা জড়িত জানলেও জড়িতদের এখনো খুঁজে পায়নি।
গত ৩০ জানুয়ারি রাজধানীর আদাবর এলাকায় আত্মীয়ের বাসা থেকে বের হওয়ার পর সুমন শেখ নামে এক যুবক ছিনতাইয়ের শিকার হন। এসময় তাকে কুপিয়ে তার হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করে ফেলে ছিনতাইকারীরা। পরে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবির মিরপুর বিভাগের টিম।
রাজধানীর রমনা এলাকায় ঢাকার বাহির থেকে বাসায় ফেরেন এক দম্পতি। তারা টার্মিনাল থেকে রিকশা নিয়ে বাসায় পৌঁছামাত্র একটি মোটরসাইকেলে কয়েকজন এসে তাদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সঙ্গে থাকা সব জিনিসপত্র ব্যাগ ও ট্রলি ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায়। সেই মহিলা একজন প্রবাসী ছিলেন। কিন্তু এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি।
গত ১ ফেব্রুয়ারি তুরাগ এলাকায় এক ইতালিয়ান নাগরিক ছিনতাইয়ের শিকার হন। পরে এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করে উত্তরা বিভাগের পুলিশ। তাদের একজন জানান, তারা ভাড়ায়চালিত মোটরচালক সেজে এই ছিনতাই কাজ করতেন।
গত ৮ ফেব্রুয়ারি যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইলে কাউসার হাওলাদার নামে এক যুবক ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে মারা যান। ছিনতাইকারীরা মাতুয়াইল মাদ্রাসা বাজারে পথ আটকে তার বুকে ছুরিকাঘাত করে। পরে পথচারীরা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে কাউসারের মৃত্যু হয়।