ঢাকা শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

উত্তাল মার্চ

আন্দোলন ক্রমেই সশস্ত্র প্রতিরোধে রূপ নিতে থাকে

আন্দোলন ক্রমেই সশস্ত্র প্রতিরোধে রূপ নিতে থাকে

আজ মার্চের পঞ্চম দিন। ঢাকায় টানা চতুর্থ দিনের মতো হরতাল পালিত হয়। বাঙালির আন্দোলন ক্রমেই সশস্ত্র প্রতিরোধে রূপ নিতে শুরু করে। এদিন পাকিস্তানি সশস্ত্রবাহিনীর সদস্যদের গুলিতে টঙ্গী শিল্প এলাকায় চার শ্রমিক শহিদ হন। আহত হন ২৫ জন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ঢাকাসহ সারা দেশের জনগণের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। জনরোষের মুখে সন্ধ্যায় সেনাবাহিনী সদস্যদের ব্যারাকে ফিরিয়ে নেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। এদিন চলমান আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে কবি-সাহিত্যিক, লেখক-সাংবাদিকরা পৃথক ব্যানারে ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেন। ঢাকা থেকে প্রকাশিত প্রতিটি দৈনিক সরকারি নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে পাকিস্তানি বাহিনীর নিষ্ঠুরতার চিত্র ও খবর প্রকাশ করে। সরকারি শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে সংগ্রামের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে নির্বাচিত নেতৃত্বের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি জানানো হয়। এদিনও দেশের সব সরকারি- বেসরকারি অফিস, আদালত বন্ধ ছিল। তবে সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য ব্যাংক এবং অন্যান্য অফিস দুই ঘণ্টার জন্য খোলা রাখা হয়।

রাজপথে বিক্ষুব্ধ জনতার ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের মুখে অনেকটাই অসহায় ছিল সরকারি বাহিনী। পূর্বপাকিস্তানের গণবিস্ফোরণের অভিঘাতে আন্দোলিত হয় পশ্চিম পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিবেশও। রাওয়ালপিন্ডিতে পিপিপি নেতা জুলফিকার আলী ভুট্টো ও প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের মধ্যে পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে তারা পূর্ব পাকিস্তানের আন্দোলন সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করেন। গণআন্দোলন ও নেতৃত্ব সম্পর্কে ভুট্টো-ইয়াহিয়ার কটূক্তিতে বিপুল তেজে জ্বলে ওঠে ঢাকা। গণবিস্ফোরণ প্রশমন করতে না পারার প্রেক্ষাপটে পূর্বপাকিস্তানের সামরিক আইন প্রশাসক জেনারেল সাহেবজাদা ইয়াকুব খান চাকরিতে ইস্তফা দেন। তার পদে নতুন নিয়োগ পান জেনারেল টিক্কা খান। এদিন এগারো দফা আন্দোলনের অন্যতম নেতা তোফায়েল আহমদ ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দান থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ সরাসরি সম্প্রচার করার জন্য ঢাকা বেতার কেন্দ্রের প্রতি আহ্বান জানান।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত