বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, নেতা নয়, নীতিকে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ক্ষমতা নয়, দুনিয়াতে আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠা করতে আমরা বদ্ধপরিকর। জামায়াত নিজেরা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, আল্লাহর কুরআন বিজয় করতে চায়।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর শ্যামলীতে বাদশাহ ফয়সল ইন্সটিটিউটে ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের মেডিকেল থানা আয়োজিত চিকিৎসকদের সম্মানে এক ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মেডিকেল থানা আমির ডা. স ম খালিদুজ্জামানের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি ডা. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের পরিচালনায় ইফতার মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন, এনডিএফ সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক ডা. মাহমুদ হোসেন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, থানা সহকারী সেক্রেটারি ডা. হাসানুল বান্না।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, তাকওয়া বা আল্লাহভীতি অর্জন করার জন্য আল্লাহ আমাদের ওপর সিয়ামকে অত্যাবশ্যকীয় বা ফরজ করে দিয়েছেন; তাই এ মোবারক মাসে যথাযথভাবে সিয়াম ও কিয়াম পালনের মাধ্যমে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি অর্জন করতে হবে।
তিনি বলেন, পবিত্র মাহে রমজান একটি খুশির মাস। রাসুল (সা.) রজব মাস শুরুর সঙ্গে সঙ্গে এ বলে দোয়া করতেন, হে আল্লাহ তুমি আমাদের রজব ও শাবান মাসের বারাকাহ ও কল্যাণ নিশ্চিত করো এবং রমজান পর্যন্ত আমাদের পৌঁছিয়ে দাও। কারণ, হাদিসে রাসুল (সা.)-এ রমজান মাসের প্রথম ১০ দিন রহমত, মধ্যের ১০ দিন মাগফিরাত তথা গোনাহ মাফ, আর শেষ দশকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তির সুসংবাদ দেয়া হয়েছে। হাদিসে রাসুল (সা.)-এর অন্যত্র বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি ইমান ও ইহতিসাবের সাথে রমজান মাসে সিয়াম পালন করবেন আল্লাহ তার পূর্বের সকল গোনাহ মাফ করে দেবেন। মূলত, মাহে রমজান আত্মশুদ্ধি, তাকওয়া ও তাজকিয়া অর্জনের মাস। তাই এ মাসে বেশি বেশি ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে নিজেকে পরিশুদ্ধ করার কাজে আত্মনিয়োগ করতে হবে। তিনি মাহে রমজানের শিক্ষা বাস্তব জীবনের প্রতিফলন ঘটাতে সবার প্রতি আহ্বান জানান। শাড়ি লুঙ্গি বা খাদ্যদ্রব্য নয় বরং এমনভাবে জাকাত দেয়া উচিত যাতে একজন ব্যক্তি স্বাবলম্বী ও প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। ইসলামী রাষ্ট্র না হওয়ায় সরকারি জাকাত ব্যবস্থাপনায় জনগণের আস্থা নেই তাই মানুষ সরকারকে জাকাত দিতে চায় না বলেও উল্লেখ করেন তিনি। তিনি দ্বীন বিজয়ের লক্ষ্যে সকল শ্রেণি ও পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ময়দানে কাজ করার আহ্বান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, পবিত্র রমজান মাসে মহাগ্রন্থ আল কুরআন নাজিল হয়েছিল বলেই এ মাসের এতো মাহাত্ম ও মর্যাদা। মূলত, এ মাসকে কুরআনের মাসও বলা হয়। তাই মানবজীবনের সব সমস্যার সমাধান করতে হবে কুরআনের আদর্শের ভিত্তিতেই।
মোবারক হোসাইন বলেন, রমজানে সিয়াম পালন শুধু আমাদের জন্য নয় বরং পূর্ববর্তীদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় ছিল। আমরা যাতে তাকওয়া অর্জন করতে পারি এজন্যই রোজা আমাদের জন্য ফরজ করা হয়েছে। তাই পবিত্র রমজান মাসে সিয়াম ও কিয়াম পালনের মাধ্যমে তাকওয়ার সমাজ প্রতিষ্ঠায় সবাইকে আত্মনিয়োগ করতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে ডা. স ম খালিদুজ্জামান বলেন, আমরা সবাই আল্লাহর বান্দা। তাই চিকিৎসাকে শুধু পেশা হিসেবে গ্রহণ করলে চলবে না বরং তা মানবসেবা হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। তিনি চিকিৎসকদের সেবার মানসিকতা নিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। এসময় উপস্থিত ছিলেন- মহানগর নায়েবে আমির আ. রহমান মূসা, ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিমুদ্দিন মোল্লা, ডা. ফখরুদ্দিন মানিক, ইয়াসিন আরাফাত, জিয়াউল হাসান, ডা. আ. জলিল প্রমুখ।