ঢাকা শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক

দ্বিমতের বিষয় নিয়ে জনগণের কাছে যেতে হবে : সাকি

দ্বিমতের বিষয় নিয়ে জনগণের কাছে যেতে হবে : সাকি

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, যে বিষয়গুলোয় অংশীজনদের দ্বিমত আছে, সেগুলো নিয়ে জনগণের কাছে যেতে হবে; আর সেটা একটা নির্বাচনের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে। এটাই সমাধানের পথ বলে মনে করেন তিনি। গতকাল সকাল ১০টার পর জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকের শুরুতে জোনায়েদ সাকি এ কথা বলেন। সংলাপে সংস্কার কমিশনগুলোর প্রস্তাবের বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, সবাই একমত হলে দ্রুততার সঙ্গে জাতীয় সনদ তৈরি করা সম্ভব হবে। তিনি আরও বলেন, শুধু সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বাস্তবায়ন যথেষ্ট নয়, সেজন্য দরকার একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের কাঠামো তৈরি করা, গণতন্ত্রের চর্চা করা, গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোকে একত্র থাকা।

আলী রীয়াজ আরও বলেন, ‘৫৩ বছর ধরে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক, নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করার মতো রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য যারা চেষ্টা করেছেন, তাদের সবার কাছে আমাদের দায়।’ জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘জনগণ যে মতামতের ওপর ভরসা রাখবেন, তাদের বিজয়ী করবেন। আর বিজয়ীরাই জনগণের মতামতের ওপর রাষ্ট্র পরিচালনা করবেন।’ জনগণের ঐক্য তৈরি করা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কাজ বলে মন্তব্য করেন জোনায়েদ সাকি। তিনি বলেন, জনগণের মধ্যে নানা পার্থক্য থাকবে, দ্বন্দ্ব থাকবে; সেগুলোকে মীমাংসা করা হচ্ছে রাষ্ট্রের কাজ। আলোচনায় যতটুকু ঐকমত্য হচ্ছে, তার ভিত্তিতে যাতে গণতান্ত্রিক রূপান্তর এবং নতুন বন্দোবস্তে যাওয়া সম্ভব হয়, সেটাই আশা করছেন বলেও জানান জোনায়েদ সাকি। জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘যারা ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করতে চেয়েছে, তারা রাষ্ট্রটাকে যত রকমভাবে ব্যবহার করা সম্ভব, তা করেছে। রাষ্ট্রযন্ত্রকে শেষ পর্যন্ত প্রায় পকেটে ঢুকিয়ে ফেলে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে একটি ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল।’ অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বে আলোচনায় অংশ নেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ইফতেখারুজ্জামান, সাবেক বিচারপতি এমদাদুল হক ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) মনির হায়দার। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এই বৈঠকে আরও উপস্থিত রয়েছেন গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, রাজনৈতিক পরিষদ সদস্য দেওয়ান আবদুর রশিদ, তাসলিমা আখতার, সম্পাদকম-লীর সদস্য বাচ্চু ভূঁইয়া, জুলহাসনাইন বাবু প্রমুখ।

বর্তমান শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন প্রয়োজন : আলী রীয়াজ

জনগণের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা থেকে সংস্কার কমিশনগুলো গঠিত হয়েছে। জনগণের এই আকাঙ্ক্ষাকে পরিপূর্ণতা দিতে রাষ্ট্র সংস্কার দরকার এবং বর্তমান শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। গতকাল জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডির সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ তথ্য জানান। আলোচনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ ছাড়াও সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার। অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, জনগণের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা থেকে সংস্কার কমিশনগুলো গঠিত হয়েছে।

জনগণের এই আকাঙ্ক্ষাকে পরিপূর্ণতা দিতে রাষ্ট্র সংস্কার দরকার। গত ৫৩ বছর ধরে আমরা এমন শাসনব্যবস্থা দেখেছি, যা ফ্যাসিবাদ তৈরি করতে পারে। এই শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন প্রয়োজন। জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপনের নেতৃত্বে আট সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধিদলে দলটির সিনিয়র সভাপতি তানিয়া রব ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট ছানোয়ার হোসেন তালুকদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ সিরাজ মিয়া, অ্যাডভোকেট কেএম জাবির, মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন, কামাল উদ্দিন পাটোয়ারী এবং ডা. হেলালুজ্জামান আহমেদ।

সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের উদ্দেশে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠিত হয়েছে।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এ কমিশনের কার্যক্রম শুরু হয়। উল্লেখ্য, প্রথম পর্যায়ে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লিখিত গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর ওপর রাজনৈতিক দলের সুনির্দিষ্ট মতামত জানাতে অনুরোধ করে সুপারিশগুলোর স্প্রেডশিট আকারে ৩৯টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়। এ পর্যন্ত ৩৫টি রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে কমিশন মতামত পেয়েছে। সংস্কার কমিশনগুলোর করা সুপারিশ চূড়ান্ত করতে গত ২০ মার্চ থেকে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এরইমধ্যে ১৯টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা শেষ করেছে কমিশন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত