‘ডিমেনশা’ বা স্মৃতিভ্রংশ রোগ হওয়া থেকে বাঁচার উপায় যদিও নেই। তবে গবেষণায় দেখা গেছে প্রতিদিনের স্বাস্থ্যকর অভ্যাস মস্তিষ্ককে শক্তিশালী রাখতে পারে। স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া থেকে শুরু করে কর্মচঞ্চল থাকা ও পর্যাপ্ত ঘুম স্মরণশক্তি ঠিক রাখতে সাহায্য করে। এই তথ্য উল্লেখ করে ‘হার্ভার্ড হেল্থ পাবলিশিংয়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে স্বাস্থ্যকর কিছু অভ্যাসের কথা বলা হয়, যেগুলো নিয়মিত পালনে মগজাস্ত্র থাকবে ধারালো।
ব্যায়াম : অস্বীকার করার উপায় ব্যায়াম শুধু শারীরিক সুস্থতার জন্যই নয়, মস্তিষ্কের জন্যও উপকারী। এছাড়াও হৃদরোগ, টাইপ টু ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, মলাশয়ে ও স্তন ক্যান্সার হওয়া প্রতিরোধ করতে পারে।
নিদ্রাহীনতা, বিষণ্নতা ও দুশ্চিন্তার মতো মানসিক রোগগুলো মাত্রা কমিয়ে রাখতে পারে শরীরচর্চা। ফলে স্মৃতিভ্রংশ, আলঝাইমার’স ইত্যাদির মস্তিষ্কের রোগ হওয়া রক্ষা পায়।
মেডিটেরিয়ান খাদ্যাভ্যাস : হৃদস্বাস্থ্যের জন্য এই খাদ্যাভ্যাস বহুদিন ধরে চিহ্নিত হয়ে আসছে। বর্তমানে বলা হচ্ছে, এই খাদ্যাভ্যাস মস্তিষ্ককেও রক্ষা করতে পারে। এই ধরনের খাদ্যতালিকায় রয়েছে- ফল, সবজি, পূর্ণ শষ্য, মটর, বাদাম ও বীজ, অলিভ অয়েল, মাছ, মুরগি ও দুগ্ধজাত খাবার।
অ্যালকোহল : গবেষণায় দেখা গেছে, যারা মদ্যপান করে না তাদের তুলনায় ২২ শতংশ বেশি আলঝাইমার’স রোগ হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন নিয়মিত মদ্যপানকারীরা।
ঘুম : নিয়মিত পর্যাপ্ত ঘুম দেহের বিভিন্ন কাজ সঠিকভাবে পরিচালিত হওয়ার জন্য প্রয়োজন। এর মধ্যে মস্তিষ্কও রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে যারা সুপারিশকৃত সাত থেকে আট ঘণ্টার কম ঘুমায় রাতে তাদের মস্তিষ্কের কার্যকারিতা কম। এটা হতে পারে ঘুমের মধ্যে পর্যাপ্তভাবে স্মৃতি ও জ্ঞান সঠিকভাবে ঘুমের মধ্যে সমন্বয় না হওয়া।
মানসিক উদ্দীপনা : মানসিকভাবে চঞ্চল থাকাও মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। গবেষণায় দেখা গেছে, সত্তর এবং আশি বছর বয়সে যারা মানসিকভাবে শক্ত তারা সেই বয়সেও পড়া, লেখা, ধাঁধা, ক্রসওয়ার্ডস, বোর্ড বা কার্ড গেম ভালো মতোই সামলাতে পারেন। দলগত আলোচনা, গল্প করা বা বাদ্যযন্ত্র বাজানোর মতো বিষয়গুলো মস্তিষ্কের সুস্থতায় প্রভাব রাখে।
সামাজিক যোগাযোগ : গবেষণায় দেখা গেছে যাদের সামাজিক যোগাযোগ ভালো, তাদের একাকী মানুষের চাইতে জ্ঞানীয় ক্ষয় কম। সামাজিক যোগাযোগ অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ মানসিক প্রক্রিয়াতে যুক্ত রাখে। যেমন- মনোযোগ ও স্মরণশক্তি।
এই ধরনের কাজগুলো বয়সের সঙ্গে হওয়া মস্তিষ্কের সাধারণ জ্ঞানীয় ক্ষয়ের পরিমাণ কমায়। ফলে স্মৃতিভ্রংশ রোগ হওয়ার সম্ভাবনাও কমে। পাশাপাশি মানুষের সঙ্গে ভালো যোগাযোগ থাকার কারণে মানসিক চাপ কমে। ফলে বিষণ্ণতার মতো বিষয়গুলো জেঁকে বসতে পারে না।